ববিতা চেয়েছিলেন ডাক্তার হতে
বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী ববিতার আজ ৬৩ তম জন্মদিন। সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’ খ্যাত এই অভিনেত্রীর পুরো নাম ফরিদা আক্তার পপি। ২৫০ টির ও বেশী চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। কিন্তু অভিনেত্রী হওয়ার ইচ্ছে তার ছিলনা! ডাক্তার মায়ের সন্তান হিসেবে ছোটবেলা থেকে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নই দেখতেন। কিন্তু হয়ে গেলেন বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা অভিনেত্রীদের একজন। কীভাবে ফরিদা আক্তার পপি হয়ে গেলেন অভিনেত্রী ববিতা? কী সেই গল্প?
মা বেগম জাহানারা ডাক্তার ছিলেন। পড়ালেখায় ভাল বলে ববিতাকে ডাক্তার বানানোর স্বপ্ন দেখতেন মা। ছোটবেলায় বড় বোন বিখ্যাত অভিনেত্রী সুচন্দার সঙ্গে মাঝে মাঝে শুটিংয়ে যেতেন তিনি। একই শট বারবার দিতে হয় দেখে অভিনয় বিষয়টার উপরই তার বিরক্তির জন্ম নেয়। সিনেমা করতে এত কষ্ট করতে হয়? তখনই সিদ্ধান্ত নিলেন, ভবিষ্যতে আর যাই হোন অভিনেত্রী হবেন না।
কিন্তু বাংলা চলচ্চিত্র যে তাকে চাইছিল! ববিতার বয়স তখন ১২-১৩। এক শুভলগ্নে চলচ্চিত্রকার জহির রায়হানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেন বড়বোন সুচন্দা। বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে যিনি অসামান্য সব ইতিহাস রচনা করেছেন সেই ক্ষণজন্মা চলচ্চিত্রকার ও কথাশিল্পী জহির রায়হানের নায়িকা হয়েই চলচ্চিত্রে পা রাখেন ববিতা। দুলাভাই হওয়ার পর এই বিখ্যাত পরিচালক বললেন, “পপি, আমার সিনেমায় তোকে টিনএজ মেয়ের একটি ক্যারেক্টার করতে হবে।’’ ছবিটির নাম ‘সংসার’।
প্রস্তাব শুনেই তার মনে পড়ল শুটিংয়ের বার বার শট দেওয়ার সেই দৃশ্যের কথা। তিনি যথারীতি বেঁকে বসলেন। তার মা-বোন খুব বোঝালেন, দুলাভাই বলছে, কর। সিনেমায় নায়করাজ রাজ্জাক তার বাবা, আর বড় বোন সুচন্দা মা। অবশেষে রাজী হলেন। এরপর ডাক্তার হবার লক্ষ্যে আবার তার পুরনো জীবন শুরু হলো। একটি সিনেমার করে ফেলার পরও অভিনেত্রী হওয়ার কোন ইচ্ছেই তার ছিলনা।
‘সংসার’ এর বছর দুয়েক পর জহির রায়হান পরের ছবি ‘জ্বলতে সুরজ কি নিচে’তে হাত দিলেন। নায়িকা শবনমের শিডিউল পাওয়া যাচ্ছিল না। ছবির প্রযোজক বিখ্যাত চিত্রগ্রাহক আফজাল চৌধুরী জহির রায়হানকে বললেন, ‘এত দুশ্চিন্তা করছ কেন? তোমার ঘরেই তো নায়িকা আছে।’ এরপর আবারও প্রস্তাব এবং ববিতার প্রত্যাখ্যান। আগের মতই সবাই মিলে তাকে বোঝানো। শেষ পর্যন্ত এটাই শেষ সিনেমা-এমন শর্তে রাজী হলেন। তার বিপরীতে ছিলেন নায়ক নাদিম।
তখন তার নাম ফরিদা আক্তার পপিই আছে। ববিতা হয়নি। চিত্রগ্রাহক আফজাল চৌধুরী আর তার স্ত্রী মিলে ফরিদা আক্তার পপির নাম দিলেন ববিতা। তবে নানা কারণে ছবিটি শেষ পর্যন্ত হলোনা। জহির রায়হান জেদ করে ববিতাকে নায়িকা রেখেই আরেকটি ছবি তৈরির পরিকল্পনা করলেন। নাম ‘শেষ পর্যন্ত’। বিপরীতে নায়করাজ রাজ্জাক। প্রথম ছবিতে যিনি ছিলেন ববিতার বাবা! শুটিংয়ে গিয়ে বেশ অস্বস্তিতে পড়লেন ববিতা। এর আগে যাকে ‘বাবা’ ডেকেছেন তার সঙ্গে রোমান্স করতে লজ্জা এবং হাসি দুইই পাচ্ছিল। অবশেষ ১৯৬৯ সালের ১৪ আগস্ট ছবিটি মুক্তি পায়। দুর্ভাগ্যক্রমে ওই দিনই তার মা মারা যান। এই ছবিটির মাধ্যমেই শুরু হয় নায়িকা ববিতার উত্থান। ছবির পারিশ্রমিক ১২ হাজার টাকা দিয়ে গাড়ি কিনে ফেললেন একটা। তারপর বাকীটা তো ইতিহাস…
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সমুদ্র পাড়ে দুর্গারূপে নওশাবা
শুধু ঈদ কিংবা পূজা নয়, বিশেষ ধর্মীয় দিন উপলক্ষে ফটোশুটেবিস্তারিত পড়ুন
শুল্কমুক্ত গাড়ি খালাস করেছেন সাকিব-ফেরদৌস, পারেননি সুমনসহ অনেকে
আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের জন্য আমদানি করাবিস্তারিত পড়ুন
আলোচিত নায়িকা পরীমনির পরিবার সম্পর্কে এই তথ্যগুলো জানতেন?
গভীর রাতে সাভারের বোট ক্লাবে গিয়ে যৌন হেনস্তা ও মারধরেরবিস্তারিত পড়ুন