বরিশালে স্ত্রীকে শিকল দিয়ে বেঁধে নির্যাতন, গরম রড দিয়ে শরীরে ছ্যাকা, ক্ষতস্থানে গুঁড়া মরিচ ও লবণ !
বরিশাল : জেলার গৌরনদী উপজেলার শরিফাবাদ গ্রামে স্ত্রীকে শিকল দিয়ে বেঁধে গরম রড দিয়ে শরীরে ছ্যাকা দিয়ে ক্ষতস্থানে গুঁড়া মরিচ ও লবণ পানি ছিটিয়ে নির্যাতন করেছে পাষণ্ড স্বামী। গুরুতর আহত গৃহবধূ তাসলিমা বেগমকে (২৯) বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে নির্যাতিতার মা জাহানারা বেগম বাদি হয়ে গৌরনদী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। গৃহবধূ তাসলিমা পার্শ্ববর্তী উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নের যুগীহাটি গ্রামের আজিজ হাওলাদারের মেয়ে।
বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুই সন্তানের জননী গৃহবধূ তাসলিমা বেগম বলেন, গৌরনদীর মাহিলাড়া ইউনিয়নের শরিফাবাদ গ্রামের মৃত ওহাব আলী মৃধার পুত্র বাদল মৃধার সাথে তার বিয়ে হয়। বিভিন্ন সময় তার স্বামী বাদলকে ২ লাখ টাকা পিতার বাড়ি থেকে যৌতুক এনে দেন তাসলিমা।
টাকা এনে দিতে অস্বীকার করলে প্রায়ই তাসলিমার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো। গত ১ মাস ধরে তার স্বামী, শ্বশুর ও পরিবারের সদস্যরা আরও এক লাখ টাকা যৌতুক আনার জন্য তাকে চাপ দেয়।
তাসলিমা যৌতুকের টাকা এনে দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে। এরই জেরে মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) গভীর রাতে তার স্বামী বাদল মৃধাসহ শ্বশুর ও পরিবারের সদস্যরা তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে লোহার রড গরম করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাকা দেয়। একপর্যায়ে তার ক্ষতস্থানে গুঁড়া মরিচ ও লবণ পানি ছিটিয়ে দেয় পাষণ্ডরা।
তাসলিমার মা জাহানারা বেগম জানান, বুধবার ভোরে স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে তাসলিমাকে উদ্ধারের জন্য শরিফাবাদ গ্রামে আসেন তিনি। এ সময় জামাতা বাদল মৃধা তাদের ওপর হামলা চালায়।
একপর্যায়ে এলাকাবাসীর সহায়তায় তাসলিমাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় তিনি গৌরনদী থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত বাদল মৃধার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার স্ত্রী তাসলিমার সাথে প্রতিবেশী নুরুল মৃধার পুত্র আলামিনের সাথে পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে।
এ নিয়ে দাম্পত্য কলহ চলে আসছিল তাদের মধ্যে। বুধবার রাতে তার স্ত্রী আলামিনের সাথে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে তার বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে লোহার গরম রড দিয়ে শরীরে ছ্যাকা দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেন।
হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের ইনচার্জ ডা. রাজু জানান, তাসলিমার শরীরে আগুনের ছ্যাকার চেয়ে নির্যাতনের চিহ্ন বেশি। তবে সে আশঙ্কামুক্ত, তার সুস্থ হতে কিছুদিন সময় লাগবে।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. ফিরোজ কবির জানান, এ ঘটনায় নির্যাতিতার মা বাদি হয়ে ২ জনের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার বিকেলে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
বরিশালে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার
বরিশাল নগরীর সাগরদী এলাকা থেকে দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূরবিস্তারিত পড়ুন
বরিশাল মহানগর বিএনপি অফিসে তালা লাগিয়েছে বিদ্রোহীরা
বরিশাল মহানগর যুবদলের কমিটিতে স্থান না পাওয়াই বিএনপি অফিসে তালাবিস্তারিত পড়ুন
ইয়াবাসহ উপজেলা প্রকৌশলী আটক
ইয়াবাসহ বরিশালের গৌরনদী উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মঈনুলবিস্তারিত পড়ুন