বলিউডে যৌনতার পরাজয়
খুব সহজে নিশ্চিত মুনাফা তুলে আনতে বলিউড ক্রমশঃ ঝুঁকছিল যৌনতা আশ্রিত সিনেমার দিকে। একের পর এক তৈরি হতে শুরু করে অ্যাডাল্ট কমেডি। কমতে থাকে নায়িকার শরীরের কাপড়, বদলাতে থাকে ডায়লগের ধরণ। দৃশ্যায়নে ভরে উঠতে শুরু করে আদিম খেলার ইঙ্গিতময় উপস্থিতি। কিন্তু কতদিন? রোজ একই খাবার আর কার ভাল লাগে? প্রত্যেকদিন কি আর ডাল-ভাতে মন ভেজে? মাঝেমধ্যে বিরিয়ানি-কাবাবও তো চাই! সেটা না পেলে অনেকেই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর চেষ্টা করেন। বলিউডে এখন সেই অবস্থাই দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিক পরিস্থিতি জানাচ্ছে, যৌন সুড়সুড়ি দেওয়া সিনেমা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে দর্শক। ফের প্রেম, অ্যাকশন আর ভাল গল্পের ছবির দিকে আগ্রহ বাড়ছে সিনেমাপ্রেমীদের।
আসলে কথা হচ্ছে অ্যাডাল্ট কমেডি ছবির। ছবিগুলো বক্স অফিসে পোক্ত জায়গা করে নিয়েছিল। সেই সঙ্গে প্রযোজকেরাও মুনাফা লুটছিলেন ভালই। স্বাভাবিকভাবেই প্রযোজকদের এই ধরনের ছবি তৈরিতে উত্সাহের খামতি ছিল না। বেশ ভালই চলছিল। বাধ্য হয়ে প্রথম সারির অনেক তারকাও নাম লেখাতে শুরু করেন এসব ছবিতে। কিন্তু হঠাৎ কী হল? অশ্লীলতায় ভরপুর চলতি বছরের ‘মাস্তিজাদে’ এবং ‘কেয়া কুল হ্যায় হাম থ্রি’ একেবারেই সাড়া ফেলল না দর্শকের মধ্যে। তাহলে কি দর্শক আগ্রহ হারাচ্ছেন সেক্স কমেডির উপর?
বলিউডের মূলস্রোতের বাণিজ্যিক ছবির মধ্যে সেক্স কমেডি বা একটু পরিশীলিত ভঙ্গিতে বললে অ্যাডাল্ট কমেডি একটা গুরুত্বপূর্ণ ধারা। কোনওভাবেই এগুলোকে বলিউডের ‘সেকেন্ড ক্লাস’ ছবি বলা যাবে না। কারণ, এতে ইন্ডাস্ট্রির প্রথমসারির অনেক অভিনেতাই কাজ করেছেন। ১০ বছর আগের অ্যাডাল্ট কমেডি এবং ২০১৫-১৬’র কমেডির মধ্যে বিস্তর ফারাক। যেমন ‘নো এন্ট্রি’ আর ‘মাস্তিজাদে’। ‘নো এন্ট্রি’ সেক্স কমেডি। চটুল সংলাপ আর গানে ভরপুর। সেখানেও মোটামুটি একটা গল্পের টান ছিল। কিন্তু হালফিলে তৈরি সেক্স কমেডিগুলোতে গল্প বলতে আর কিছুই থাকছে না। থাকছে শুধু শরীরনির্ভর আদিম খেলার ইঙ্গিতময় উপস্থিতি। বলা হচ্ছে, কোনও প্লট পয়েন্ট না থাকায় আগ্রহ হারাচ্ছেন দর্শক।
প্রশ্ন উঠছে নারী-চরিত্রের অবমাননা নিয়েও। অনেক জায়গাতেই ‘মাস্তিজাদে’র প্রদর্শন নিষিদ্ধ করার দাবি তোলা হয়েছে। সেক্স কমেডিতে বরাবারই নারীদেরকে ‘সেক্স অবজেক্ট’ হিসেবে দেখানো হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, হালফিলের ছবিতে সেই মাত্রা আরও বেড়েছে। এ ধরনের ছবি নিয়ে বিভিন্ন সমাজসেবী সংগঠনও এখন আপত্তি তুলছে।
সানি লিওনের ছবি মানেই বক্স অফিসে নিশ্চিত সাফল্য। ‘মাস্তিজাদে’ই সানির প্রথম ছবি যেটা কাঙ্ক্ষিত ব্যবসা করতে পারেনি। ‘মাস্তিজাদে’ প্রথম দিনে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার ব্যবসা করেছিল, যেখানে সানির প্রায় প্রতিটি ছবি প্রথম দিনে সাত কোটির ওপরে ব্যবসা করেছে।
একই দিনে মুক্তি পেয়েছিল ‘এয়ারলিফ্ট’ আর ‘কেয়া কুল হ্যায় হাম থ্রি’। অক্ষয় কুমারের ‘এয়ারলিফ্ট’ ১০০ কোটির ক্লাবে ঢুকে পড়েছে। মাল্টিপ্লেক্সে এখনও ব্যবসা করছে এ ছবি। অন্যদিকে একই দিনে মুক্তি পাওয়া ‘কেয়া কুল হ্যায় হাম থ্রি’ আর এক সপ্তাহ পরে মুক্তি পাওয়া ‘মাস্তিজাদে’ মাল্টিপ্লেক্স থেকে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে ফেলেছে। ‘এয়ারলিফ্ট’ যেখানে প্রথম দিনে প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকার ব্যবসা করেছিল, সেখানে ‘কেয়া কুল হ্যায় হাম থ্রি’ আট কোটি টাকার ব্যবসা করে। তবে দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই ছবির ব্যবসা নিম্নমুখী। পরিসংখ্যানই স্পষ্ট করে দিচ্ছে, সাধারণ মানুষ আগ্রহ হারাচ্ছে গল্পহীন যৌনতানির্ভর ছবি থেকে। আবার বক্স অফিস বিশেষজ্ঞেরা ভাবেননি, ‘সনম রে’ ভাল ব্যবসা করবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে নতুন মুখদের বাজি রেখে তৈরি এই ছবিও প্রথম দিনে ৬.৪৫ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। দেখা যাচ্ছে, সানি লিওনকে হারিয়ে দিয়েছেন সানি দেওলও! ‘ঘায়েল ওয়ান্স এগেন’কে কেউ ধর্তব্যের মধ্যেই রাখেনি। কিন্তু সে ছবিও ৭ কোটি টাকার বেশি ব্যবসা করেছে। এ থেকে কি এটাই স্পষ্ট যে, বলিউডে যৌনতার পরাজয় হচ্ছে?
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সমুদ্র পাড়ে দুর্গারূপে নওশাবা
শুধু ঈদ কিংবা পূজা নয়, বিশেষ ধর্মীয় দিন উপলক্ষে ফটোশুটেবিস্তারিত পড়ুন
শুল্কমুক্ত গাড়ি খালাস করেছেন সাকিব-ফেরদৌস, পারেননি সুমনসহ অনেকে
আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের জন্য আমদানি করাবিস্তারিত পড়ুন
আলোচিত নায়িকা পরীমনির পরিবার সম্পর্কে এই তথ্যগুলো জানতেন?
গভীর রাতে সাভারের বোট ক্লাবে গিয়ে যৌন হেনস্তা ও মারধরেরবিস্তারিত পড়ুন