বহু কাহিনীর দেড় বছর পর ডোবায় মিলল কঙ্কাল
গাজীপুরে হত্যাকাণ্ডের দেড় বছর পর এক ব্যক্তির কঙ্কাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার হওয়া আসামি নান্নু শেখকে (৪০) নিয়ে আজ শুক্রবার গাজীপুর শহরের দক্ষিণ সালনা এলাকার একটি ডোবা থেকে কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়।
কঙ্কালটি মাদারীপুরের সদর উপজেলার আবদুল জব্বার খালাসীর ছেলে বোরহান খালাসীর।
জয়দেবপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ আবুল হাসেম জানান, মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা গ্রামের নান্নু শেখের স্ত্রী (৪০) পাশের গ্রামের বোরহান খালাসীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে গত বছরের প্রথম দিকে নান্নুর স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বোরহান খালাসীর সঙ্গে গাজীপুরে চলে আসেন। তাঁরা গাজীপুর শহরের দক্ষিণ সালনা এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস করতে থাকেন। গাজীপুরে তাঁরা দুজনই দিনমজুরের কাজ করতেন। কিছু দিন পর তাঁদের মধ্যে কলহ বাধলে ওই নারী আগের স্বামী নান্নু শেখকে খবর দেন যে তাঁরা গাজীপুরের সালনায় বসবাস করছেন। তাঁকে গাজীপুর থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য নান্নুকে আসতে বলেন। এ খবর শুনে নান্নু শেখ তাঁর সহযোগীদের নিয়ে গত বছরের ২৮ এপ্রিল রাতে গাজীপুরের দক্ষিণ সালনা এলাকায় ভাড়া বাসায় আসেন। এ সময় বোরহান খালাসীকে কৌশলে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন নান্নু শেখ। হত্যার পর বোরহান খালাসীর বুকে-পিঠে ইট ও ইটের খোয়াভর্তি বস্তা বেঁধে পাশের পরিত্যক্ত ডোবায় ডুবিয়ে রাখেন মরদেহ। ঘটনার পর ওই রাতেই নান্নু শেখ ও তাঁর স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান।
এসআই সৈয়দ আবুল হাসেম জানান, প্রায় দেড় বছর পর নান্নু শেখ তাঁদের গ্রামের বাড়িতে গেলে স্থানীয় লোকজন তাঁকে আটক করে তাঁর স্ত্রী ও বোরহান খালাসীর সন্ধান চান। তাঁকে মারধর করলে তিনি বোরহান খালাসীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজন তাঁকে মাদারীপুর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। পুলিশ তাঁকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নিহত বোরহান খালাসীর ভাগ্নে আমিনুল ইসলাম গত ১১ অক্টোবর গাজীপুরের আদালতে একটি মামলা করেন। ১৫ অক্টোরব জয়দেবপুর থানায় মামলাটি রেকর্ড হয়। পরে পুলিশ আদালতের মাধ্যমে নান্নু শেখকে মাদারীপুর থেকে গাজীপুরে নিয়ে আসে এবং এ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখায়।
এরপর পুলিশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে নান্নু শেখকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গাজীপুরের আদালতে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে। আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন নান্নু শেখ। আজ শুক্রবার পুলিশ তাঁকে নিয়ে দক্ষিণ সালনা এলাকার ফজলুল হকের বাড়িসংলগ্ন মুন্নি লালের পরিত্যক্ত ডোবায় অভিযান চালায়। পুলিশ ডোবা সেচে কাদার মধ্য থেকে বিকেলে বোরহান খালাসীর কঙ্কাল উদ্ধার করে।
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার রেজাউল হাসান রেজা জানান, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরো কেউ জড়িত আছে কি না তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া নান্নু শেখের স্ত্রীকে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেল মায়েরও
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে।বিস্তারিত পড়ুন
গাজীপুরে স্ত্রীর পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় স্বামী খুন, গ্রেফতার ৩
গাজীপুরে স্ত্রীর পরকীয়ায় বাধা দিতে গিয়ে পোশাক শ্রমিক জিয়াউর রহমানবিস্তারিত পড়ুন
মা প্রবাসে থাকার সুযোগে প্রতিরাতে সৎ শিশুকন্যার উপর নিপীড়নকারী এক লম্পট পিতা গ্রেফতার
মা প্রবাসে থাকার সুবাদে ১১ বছরের শিশু কন্যাকে অব্যহতভাবে রাতেরবিস্তারিত পড়ুন