বাংলাদেশী ডাক্তার নেবে না সৌদি আরব
দক্ষ জনশক্তি হিসেবে বাংলাদেশ থেকে অনেক বছর আগে থেকেই অনেক ‘ডাক্তার’ সৌদি আরবে গেলেও এ বছরের সৌদি আরবের ডাক্তার নিয়োগ গেজেটে নেই বাংলাদেশের নাম।
সৌদি আরবে চিকিৎসা প্রদানের জন্য ভারত, ফিলিপিন্স, মিশর, জর্ডান, তিউনিসিয়া, নাইজেরিয়া, লেবানন, সুদান ও পাকিস্তান থেকে ডাক্তার চাওয়া হলেও বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করেনি সৌদি কর্তৃপক্ষ। এই নয়টি দেশ থেকে ডাক্তারদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য মোট ৪৮টি দল পাঠিয়েছে সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
অভিবাসী বাংলাদেশীদের সব থেকে বড় গন্তব্যস্থল হলো মধ্যপ্রাচ্য। সাধারণ শ্রমিক থেকে ডাক্তার সকলেই পাড়ি জমান সৌদি আরবের পথে।
তবে আরো বছর খানেক পর নতুন সব হাসপাতালে মানবশক্তি নেওয়ার কথাও জানায় সৌদি আরব। সৌদি আরব জানিয়েছে, মিশরীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ১,০০০, পাকিস্তান থেকে ৯০০ জন এবং সুদান থেকে ২০০ জন নেওয়া হবে। সৌদি আরবে কাজের সুযোগের তালিকায় বাংলাদেশের নাম না থাকায় অবশ্য হতাশ হয়েছেন অনেকে।
কেনো সৌদি আরবে বাংলাদেশের জন্য এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলো সেই কথা বলতে গিয়ে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)’র মহাসচিব ডা. ইকবাল আর্সলান বলেন, বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিস লিমিটেড (বোয়েসেল) এদেশ থেকে চিকিৎসকদের বিদেশে প্রেরণ করতো। সৌদি আরবও এদেশ থেকে ৭৬ এর শেষের দিক থেকে চিকিৎসক ও নার্স নেওয়া শুরু করে। তারা প্রথমে লিখিত ও পরে মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে তারপর নির্বাচন করতো। কিন্তু বছর দুয়েক আগে ওরা এসে যাদের নির্বাচন করেছিলো পরে বোয়েসেল তাদের না পাঠিয়ে অন্য একদল চিকিৎসককে পাঠিয়ে দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে সৌদি আরব। এই কারণে তারা তালিকা থেকে আমাদের নাম মুছে দেয়।
তবে এমন ঘটনা দেশের জন্য নেতিবাচক প্রভাব বয়ে এনেছে বলেই মনে করেন এই মহাসচিব।
ডা. ইকবাল বলেন, এতে যেমন আমাদের বিদেশী আয়ের ক্ষেত্র সংকীর্ণ হলো তেমনই দেশের বদনামও হলো। এতে করে অন্যান্য দেশও কিন্তু আমাদের চিকিৎসক নিয়ে বিমুখতা দেখাতে পারে।
এখন এই সমস্যার সমাধানে সৌদি প্রবাসী যেসব ডাক্তার আছেন তাদের সহযোগিতা পেলে এবং দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় উদ্যোগী হলে হয়তো আবারো সেই পূর্বের অবস্থা ফেরত আনা সম্ভব হবেই মনে করেন চিকিৎসক সংগঠনের নেতা ডা. ইকবাল।
তবে এই সমস্যাকে খুব বড় করে না দেখে স্থানীয়ভাবে সম্ভবনার দিক হিসেবে দেখছেন বেসরকারিখাতের অন্যতম স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ল্যাবএইড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ এম শামীম।
ডা. শামীম মনে করেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে এখন কম কম ডাক্তার বা নার্সরা যাচ্ছেন কারণ বাংলাদেশেই এখন ডাক্তার ও নার্সদের প্রচুর কদর। এখানেই অনেকে অনেক ভাল কাজের সুযোগ পাচ্ছেন তারা, তাই বিদেশে যাওয়ার তাড়াই বোধ করছেন না কেউ কেউ।
ডা. শামীম আরও বলেন, এদেশের ডাক্তার বা নার্সদের নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের আগ্রহ না কমলেও আমাদের দেশের ছেলেমেয়েদের অনেকের মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার আগ্রহ কমে গেছে। কেননা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে গেলে দেখা যায় এসব ডাক্তার ও নার্সদের ক্যারিয়ার একটি নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে আটকে যায়। সেখান থেকে আর পদোন্নতি হয় না। তারা অন্যান্য দেশের কর্মীদের একটি নির্দিষ্ট বড় পদে বসিয়ে দেয়। সেসব সমস্যার কারণে এখনকার ছেলেমেয়েরা দেশের বাইরে গেলে পশ্চিমা দেশগুলোতে যায়। অন্যান্য দেশগুলোতে তো আর যেতে বাধা নেই। তাই সৌদি আরব নিয়ে সেরকম দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
অবশ্য সৌদির এমন বিমুখতার জন্য দেশের অবস্থাকেই দায়ী করে রংপুর মেডিকেল কলেজের পরিচালক ডা. আ.স.ম বরকত উল্লাহ বলেন, হয়তো তারা যতটা চাইছে সেটা আমরা পূরণ করতে পারছি না, সেজন্যই এই সমস্যাটা দেখা দিয়েছে। চিকিৎসক বা নার্সদের যেসব গুণ তারা চায় তা হয়তো আমরা পূরণ করতে পারছি না।
তবে যতক্ষণ না অন্যান্য সব দেশে সমস্যা দেখা যাচ্ছে ততক্ষণ এ নিয়ে বিচলিত হওয়ার তেমন কারণ নেই বলেও মনে করেন তিনি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধের দাবি গণ অধিকার পরিষদের
জাতীয় পার্টিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিষিদ্ধ করাসহ তিন দাবি জানিয়েছেবিস্তারিত পড়ুন

নুরুল হকের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিলেন খালেদা জিয়া
গণ অধিকার পরিষদের আহত সভাপতি নুরুল হকের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেনবিস্তারিত পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে স্কুলে বন্দুক হামলায় দুই শিশু নিহত, আহত ১৭
যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে একটি ক্যাথলিক স্কুলে জানালা দিয়েবিস্তারিত পড়ুন