বাংলাদেশে ডায়াবেটিক রোগী ৭১ লাখ
বর্তমান বিশ্বের সর্বাপেক্ষা গুরুতর ব্যাধির মধ্যে ডায়াবেটিস অন্যতম। জনসচেতনতা ও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা না থাকার কারণে বাংলাদেশেও ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের মতে ২০১৫ সালে বাংলাদেশে ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা ৭১ লাখ।
বৃহস্পতিবার ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস ২০১৬’ উপলক্ষে বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে পৃথিবীতে প্রায় ৩৪ কোটি ৭০ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে ভুগছে। ২০১২ সালে ডায়াবেটিসের কারণে ১৫ লাখ মানুষ মারা যায়। ডায়াবেটিসে মৃত্যুর শতকরা ৮০ ভাগ হচ্ছে নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশে। আশঙ্কা করা হচ্ছে ২০৩০ সাল নাগাদ মানুষের মৃত্যুর সপ্তম কারণ হবে ডায়াবেটিস।’
তিনি বলেন, দেশের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ ডায়াবেটিস নামক মারাত্মক ব্যাধিক শিকার। ৩৫ বছর ও তার থেকে উপরের বয়সীরা এ রোগে আক্রান্ত হলেও আমাদের দেশে প্রতিকূল আর্থ-সামাজিক অবস্থা, সচেতনতা ও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবার অভাবে কম বয়সেও এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। উন্নত দেশে সাধারণত অবসরের পরে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশে এ রোগে আক্রান্তের বয়স ৩৫ থেকে ৬৪ বছরের মধ্যে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ডায়াবেটিস প্রতিরোধের অন্যতম উপায় হচ্ছে বাল্যকাল থেকেই স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, নিয়মিত খেলাধুলা, পরিমিত ব্যায়াম, নিয়মিত হাঁটা এবং সুষম খাদ্যাভ্যাস করা।
ডায়বেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণের উপায় তুলে ধরে জাহিদ মালেক বলেন, উপযুক্ত খাদ্য গ্রহণ, শারীরিক পরিশ্রম, শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ, মানসিক প্রশান্তি, ধুমপান বর্জন, নিয়মিত ওষুধ খাওয়া, শরীর পরীক্ষা, ব্লাড গ্লুকোজ পরীক্ষা, রক্তচাপ পরীক্ষা, দৃষ্টি শক্তির পরির্বতন সম্পর্কিত চেকআপ ইত্যাদির মাধ্যমে ডায়াবেটিসজনিত স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
বৃহস্পতিবার ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস ২০১৬’ উপলক্ষে সরকারিভাবে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।
‘মেইক হেলদি চয়েজেস এভরিডে : কিপ ডায়াবেটিস অ্যাট বে’ এর বাংলা ভাবার্থ হয় ‘সুশৃঙ্খল জীবন যাপন করুন : ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণে রাখুন’ বিশ্বস্বাস্থ্য দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় ঠিক করা হয়েছে।
দিবসটির কর্মসূচি তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় পর্যায়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, সেমিনার আয়োজন, স্যুভেনির প্রকাশ, ডায়াবেটিক নির্ণয়ে রক্ত পরীক্ষা, স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদর্শনী, জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ, সড়কদ্বীপ সজ্জিতকরণ, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, জারিগান, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে ডায়াবেটিকজনিত স্বাস্থ্য সমস্যার ওপর আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০’ এবং ‘সরকারের ভিশন ২০২১’ অনুযায়ী স্বাস্থ্যখাতের সূচকগুলো অর্জনে ব্যাপক পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, চতুর্থ স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা উন্নয়ন খাত কর্মসূচি প্রণয়নের কাজ চলছে। এ কর্মসূচি ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে চালু হবে। দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বিনামূল্যে আধুনিক চিকিৎসা নিশ্চিত করাই এ কর্মসূচির মূললক্ষ্য।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক দীন মোহাম্মদ নুরুল হক, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ড. এন প্রেনাথেইনসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গত বছর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের এক গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, গ্রামাঞ্চলে ডায়াবেটিসের সামগ্রিক প্রবণতা প্রায় ৮ শতাংশ। রাজধানীতে এই হার ১০ শতাংশ এবং প্রি-ডায়াবেটিসের (ডায়াবেটিসের আগের ধাপ) হার আরও প্রায় ১০ শতাংশ। প্রতিবছর আরও এক লাখ মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন
রেড মিট খাওয়ার আগে কিছু পরামর্শ জেনে নিন
কোরবানি ঈদে বেশ কয়েকদিন টানা খাওয়া হয় গরু বা খাসিরবিস্তারিত পড়ুন
জাপান ও ইউরোপে বিরল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ
জাপানে, একটি বিরল “মাংস খাওয়া ব্যাকটেরিয়া” এর কারণে এক রোগবিস্তারিত পড়ুন