বাংলাদেশে তৈরি পোশাক যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হতে পারে!
বাংলাদেশে নির্যাতিত নারীদের হাতে তৈরি পোশাক যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি নিষিদ্ধ করা হতে পারে। একই সঙ্গে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দাসদের দিয়ে ধরা মাছ আর আফ্রিকায় শিশুদের দিয়ে উত্তোলিত সোনাও নিষিদ্ধ করা হতে পারে। বলপূর্বক ও শিশু শ্রমে উৎপন্ন পণ্যের আমদানি নিষিদ্ধ করে মার্কিন কংগ্রেসে পাস হওয়া একটি বিল দেশটির প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ৮৫ বছরের পুরোনো শুল্ক আইনের একটি ফোঁকর বন্ধ হবে।
আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৩০ সালের মার্কিন ট্যারিফ আইন অনুযায়ী বলপূর্বক শ্রম সংশ্লিষ্ট আছে সন্দেহ হলে পণ্য আটকে দেয়ার ক্ষমতা আছে কাস্টমস এন্ড বর্ডার প্রটেকশনের। তবে, ৮৫ বছরে এ ক্ষমতা ব্যবহৃত হয়েছে মাত্র ৩৯ বার। আর এর কারণ হলো আইনটিতে একটি বিকল্প সুযোগ সংযুক্ত আছে। সেটা হলো- শিশু, বন্দি বা দাসদের হাতে তৈরি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবে যদি ওই পণ্য ছাড়া ভোক্তাদের চাহিদা মেটানো সম্ভব না হয়।
আইনটির খসড়া করা হয়েছিল মন্দার সময়। আইনি ইতিহাসবিদদের বক্তব্য অনুযায়ী, তৎকালীন আইনপ্রণেতারা বিদেশি শ্রমিকদের অধিকারের তুলনায় অর্থনৈতিক প্রয়োজনকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। ওই আইনি ফোকরের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে বলপূর্বক ও শিশুশ্রমে তৈরি পণ্যের প্রবেশ ঠেকানো যায় নি। মার্কিন অঙ্গরাজ্য ওরিগনের সিনেটর রন ওয়াইডেন বলেন, ‘মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের দিয়ে তৈরি পণ্য বা শিশুদের দিয়ে তৈরি কোনো পণ্য কখনও যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা উচিত নয়।’
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য আইন উন্নয়নে ব্যাপকতর একটি বিলের অংশ এই পরিবর্তন। বৃহস্পতিবার সিনেটে ৭৫-২০ ভোটে বিলটি পাস হয়। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এতে অনুমোদন দিয়ে স্বাক্ষর করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর ওবামা এতে স্বাক্ষর করার অর্থ হচ্ছে শিশু শ্রম বা বলপূর্বক শ্রমে তৈরি ৩৫০টির বেশি পণ্যের যে তালিকা মার্কিন শ্রম মন্ত্রণালয়ে রয়েছে সেগুলো আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। এসব পণ্যের মধ্যে আরও রয়েছে, কাজাখস্তান থেকে তুলা, পাকিস্তান থেকে গম এবং হন্ডুরাস থেকে লবস্টার। আইনে পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রচারণাকারী ডেভিড আব্রামোভিচ বলেন, আমরা সুশীল সমাজকে সতর্ক থাকতে হবে যেন এসব সংস্কার সত্যিকার অর্থে মার্কিন বাজারকে আধুনিক দাসত্বে তৈরি পণ্য থেকে মুক্ত রাখে।
উল্লেখ্য, গত বছর এপির এক তদন্তে উঠে আসে যে, থাই প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রে যে সামুদ্রিক মাছ রপ্তানি করছে, সেগুলো ধরা থেকে শুরু করে প্রক্রিয়াজাত করে দাসত্বের শিকার আটকে রাখা শ্রমিকেরা। তদন্তে দেখা যায়, বলপূর্বক শ্রম থেকে প্রক্রিয়াজাত করা সামুদ্রিক খাবার যাচ্ছে ওয়ালমার্ট, হোলফুডসের মতো সুপারমার্কেট চেইনগুলোতে। প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, তারা শ্রমিকদের ওপর নির্যাতনকে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে আর তা প্রতিহত করতে পদক্ষেপ নিচ্ছে।
ওই তদন্ত প্রতিবেদনগুলোর পর ২ সহস্রাধিক আটকে রাখা জেলেকে মুক্ত করা হয়। গ্রেপ্তার হয় এক ডজনেরও বেশি পাচারকারী। আর লাখ লাখ ডলার মূল্যের সামুদ্রিক খাবার ও নৌকা আটক করা হয়। মার্কিন আইন থেকে ওই ধারা বাতিলের ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে গণমাধ্যমের নানা প্রতিবেদন সহ এপির তদন্ত প্রতিবেদন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
আজিমপুরে বাসায় ডাকাতি, মালামালের সঙ্গে দুধের শিশুকেও নিয়ে গেছে ডাকাতরা
ঢাকার আজিমপুরে মেডিকেল স্টাফ কোয়ার্টারে একটি বাসায় দিনে দুপুরে ডাকাতিরবিস্তারিত পড়ুন
সুনামগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের সংঘর্ষ
সুনামগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়াবিস্তারিত পড়ুন
ফ্রান্স-ইসরায়েল ম্যাচের আগে বিক্ষোভে উত্তাল প্যারিস
উয়েফা নেশন্স লিগে ফ্রান্স-ইসরায়েল ম্যাচের আগে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়েবিস্তারিত পড়ুন