‘বাংলাদেশে বিরোধীদের পায়ে গুলি করছে পুলিশ’
বাংলাদেশে বিরোধীদলীয় কর্মী ও সমর্থকদেরকে পুলিশ ইচ্ছা করে পায়ে গুলি করছে বলে অভিযোগ করছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীদেরকে নিরাপত্তা হেফাজতে নিয়ে গুলি করে পুলিশ ক্রসফায়ার বা আত্মরক্ষার গল্প ফেঁদেছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেছেন, ‘বাংলাদেশে নিরাপত্তা বাহিনীগুলো দীর্ঘদিন ধরেই ভুয়া ক্রসফায়ারের মাধ্যমে আটকদের হত্যা করে চলেছে। যদিও তারা দাবি করে, অপরাধ সংঘঠনের জায়গায় নিয়ে গেলে সহযোগীদের আক্রমণের সময় তারা মারা গেছে।’
৪৫ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যুর প্রতিটি ঘটনায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিও করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। এই তদন্তে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাকে সম্পৃক্ত করা উচিত বলেও মন্তব্য করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
প্রতিবেদনে বিএনপি-জামায়াতের ২৫ সমর্থকের কথা উল্লেখ করা হয়, যাদেরকে পুলিশ কোনো উস্কানি ছাড়াই পায়ে গুলি করেছে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন পঙ্গু হয়ে গেছেন। এদের বেশ কয়েকজনকে গুলি করার আগে পেটানোও হয়।
তবে এই ভুক্তভোগীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরও হয়রানির ভয়ে নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। তবে দুই জন গণমাধ্যমে নিজেদের নাম পরিচয় প্রকাশ করেই তার কাহিনি বর্ণনা করেছেন। এদের একজন জামায়াতপন্থি দৈনিক নয়াদিগন্তের বিপণন বিভাগের কর্মী মাহবুবুল কবির। তাকে অনেকের সামনেই তুলে নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের মামলা দেয়া হয়। মাহবুবুল কবির বলেন, যে কর্মকর্তা তাকে গুলি করেছেন তিনি বলেছেন, ‘আমি তোর পায়ে গুলি করলাম। এ নিয়ে যদি কথা বলিস, তাহলে তোর চোখে গুলি করবো।’
৩২ বছর বয়সী কৃষক আকরাম বলেন, চট্টগ্রামে একটি অভিযানের সময় পুলিশ ইচ্ছা করেই তাকে গুলি করেছে। ‘পুলিশ আমাকে গাছে বেঁধে পেটায়। এরপর হাঁটুর ওপর গুলি করে।’
তবে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা এই অভিযোগ অস্বীকার করলেও বাংলাদেশের একটি মানবাধিকার সংস্থাকে বলেছেন, আকরামের মত ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীর বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই। তবে কয়েক মাস আগে চট্টগ্রামে এক সন্দেহভাজন অস্ত্র বিক্রেতাকে গুলি করেছেন তিনি। ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘পুলিশ গ্রেপ্তার করায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিটি এখনও বেঁচে আছে। র্যাব তাকে ধরলে তিনি এতদিনে মৃত থাকতেন।’
প্রতিবেদনে ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিকবার বিচারবহির্ভুত হত্যার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা বলেছেন। কিন্তু প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর এই প্রশ্রয় দিয়ে আসছেন।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৩ সালে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ড দেয়ার পর এই প্রবণতা ব্যাপক আকারে শুরু হয়। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিরোধীরা তাদের অবরোধ কর্মসূচি সফল করতে পেট্রল বোমা হামলা চালানো শুরুর পর আবারও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একই কাজ শুরু করে। তারা বিরোধীদলীয় কর্মীদেরকে টার্গেট করা শুরু করেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের কাছে এ সময় নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের বহু কাহিনি রয়েছে বলেও দাবি করা হয় প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভুক্তভোগীদের প্রতিটি বক্তব্য সত্য কি না, সেটি যাচাই করা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পক্ষে সম্ভব নয়। এ কারণেই প্রতিটি অভিযোগের স্বাধীন তদন্ত প্রয়োজন। ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, নাগরিকরা ভুল দলকে সমর্থন করায় নিরাপত্তা বাহিনী খুন করে পার পেতে পারে না- এই বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই নিশ্চিত করতে হবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধের দাবি গণ অধিকার পরিষদের
জাতীয় পার্টিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিষিদ্ধ করাসহ তিন দাবি জানিয়েছেবিস্তারিত পড়ুন

নুরুল হকের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিলেন খালেদা জিয়া
গণ অধিকার পরিষদের আহত সভাপতি নুরুল হকের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেনবিস্তারিত পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে স্কুলে বন্দুক হামলায় দুই শিশু নিহত, আহত ১৭
যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে একটি ক্যাথলিক স্কুলে জানালা দিয়েবিস্তারিত পড়ুন