বাংলাদেশ বিমানের সিলেট-লন্ডন ফ্লাইট; ভোগান্তির শেষ নেই
বাংলাদেশ বিমানের সিলেট থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা ফ্লাইটের ভোগান্তির যেনো শেষ নেই! যেখানে লন্ডন থেকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছাতে সময় লাগে মাত্র ৯ ঘন্টা ৩০ মিনিট, সেখানে সিলেট থেকে একই বিমানে রিটার্ন ফ্লাইটে লন্ডনে আসতে সময় লাগে ১৮ ঘন্টা!
২৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সিলেটে থেকে ভোর ৪ টা এবং ভোর সাড়ে পাঁচটায় মোট ২ টি ছোট এয়ারক্রাফটে প্রায় সাড়ে তিনশো যাত্রীকে নিয়ে আসা হয় ঢাকা হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে। এরপর দীর্ঘ সাড়ে ৫ ঘন্টা যাত্রীদের বসিয়ে রাখা হয় এয়ারপোর্টের লাউঞ্জে। সিলেট থেকে আসা যাত্রীদের বেশীর ভাগই বয়স্ক এবং ছোট বাচ্চাদের নিয়ে পরিবার। এতে ভোগান্তির কোন শেষ ছিলো না। তখন একই ফ্লাইটে লন্ডনে আসায় এই প্রতিবেদকের কাছে অনেকেই অভিযোগ করেন বাংলাদেশ বিমানের অযৌক্তিক এসব কর্মকাণ্ডের। দীর্ঘ এই সময়ে লাউঞ্জে প্রচন্ড মশার উপদ্রব সহ্য করেছেন সবাই। একটি নির্দিষ্ট জায়গায় সবাই অসহায়ের মতোই বসেছিলেন পরিবার নিয়ে।
একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক যাত্রীদের সেবার কোন ছিটেফোটা ছিলো না সেখানে। বিমানবন্দরের পুরো লাউঞ্জ ঘুরে একটি মোবাইল চার্জ দেয়ার পোর্ট পাওয়া যায়নি। ইপসউইচের বাসিন্দা আবুল লেইস বলেন, দীর্ঘ ৫ ঘন্টা মোবাইলে চার্জ দিতে পারিনি। লন্ডনে নেমে ক্যাব কিভাবে কল করবো বুঝতে পারছি না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বয়স্ক নারী বলেন, একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিতর এতো মশার কামড় খাবো ভাবিনি।
বিষয়টি নিয়ে সিলেট বিমানবন্দরে কর্মরত একজন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনিও বিষোদগার করে বলেন, মধ্যরাতে বিরক্তিকর সময়ের এই ফ্লাইট নিয়ে আমরাও খুব অসুবিধার মধ্যে রয়েছি। কোন যুক্তিতে ছোট ২টি বিমানে সাড়ে ৩শত যাত্রী নিয়ে ঢাকায় বিরম্বনায় ফেলা হয় সেটা বুঝিনা। উপরমহলের কি উদ্দেশ্য কে জানে!
যাত্রী সেবার এই মান নিয়ে অভিযোগ শুধু বিমানবন্দরে নয়, এই অভিযোগ রয়েছে বিমানের ইন-ফ্লাইটেও। ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ বিমানের বোয়িং ৭৭৭, ফ্লাইট বিজি ০০০১ ফ্লাইটে এই প্রতিবেদকের পাশের যাত্রীকে খাবার দেয়ার সময় জেপি হেলাল নামের একজন কেবির ক্রু জিজ্ঞেস করেন – ম্যানু কি নিবেন, মাটন না চিকেন? যাত্রী বললেন, মাটন। তখন কেবিন ক্রু হেলাল বলেন, স্যার মাটন নেই। যাত্রী বললেন, তাহলে চিকেন দেন। তখন হেলাল আবারো ট্রলি খুজে বললেন, চিকেনও শেষ। প্রন আছে, খুব ভালো। এইটা নেন। যাত্রী খাবারের ট্রে হাতে নিয়ে দেখেন সেখানে ব্রেড নেই। তিনি আবারো সেই কেবিন ক্রুকে বললেন, ভাই আমার ট্রেতে ব্রেড নেই! কেবিন ক্রু এর ঝটপট উত্তর, এটা আগে দেয়া হতো এখন ম্যানু থেকে মাইনাস করা হয়েছে! যাত্রী বললেন, বাটার দিলেন, অন্য সবার ট্রেতে ব্রেড আছে! তখন সেই কেবিন ক্রু তাড়াতাড়ি ট্রলির ভেতর থাকা অন্য ট্রে থেকে ব্রেড দিয়ে দেন। যাত্রী তখন বলেন, আপনাদের কি উত্তর মুখে রেডি করাই থাকে? কেবিন ক্রু এর লজ্জিত হাসি! তখন আবারো সেই যাত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিমানের কেবিন ক্রুদের সার্ভিস দেখলে মনে হয়, এই চাকুরিটা তাদের করারই কথা ছিলো না! অনেকটা বিপদে পড়ে করছেন। জবও যে এনজয় করার মতো সেটা বাংলাদেশ বিমানের কোন কর্মীকে দেখলে বুঝা যায়না।
বিমান লন্ডনে টেক অফ করার আগে প্রতিবেদকের সামনের সিটের এক যাত্রীকে এক নারী কেবিন ক্রু অনেকটা নির্দেশের সুরেই বলেন, এনাউন্সমেন্টে বলা হয়ে সিট সোজা করতে করেননি কেনো? তখন যাত্রীর নিরুপায় উত্তর, সিটই তো নষ্ট! আপনারা কি এইসব আপনাদের মেইনটেইনেন্স বিভাগে জানান না! তখন সেই নারী কেবিন ক্রু এর উত্তর ছিলো- আমরা জানাতে জানাতে বিরক্ত হয়ে গেছি। তাদের কোন সাড়া পাওয়া যায়না!
বাংলাদেশ থেকে আসা বেশিরভাগ যাত্রীই এই প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করে বলেন, দেশের বিমান, হালাল খাবার, বাংলায় কথা বলতে পারি কেবিন ক্রুদের সাথে, সেই সাথে সরাসরি হিথ্রো থেকে সিলেটে ৯/১০ ঘন্টায় চলে যেতে পারি বলে বিমান পছন্দ করি। কিন্তু যখন বিমানের কিছু ভুল সিদ্ধান্ত আর কর্মীদের বাজে ব্যবহারের কারনে ব্রিটেনে জন্ম ও বেড়ে উঠা ছেলে মেয়েদের নিয়ে লজ্জায় পড়তে হয় ব্যাপক! এরা বাংলাদেশ পছন্দ করে না এইসব সিষ্টেমলসের কারনেই!
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
যে কারনে যুক্তরাজ্য বিএনপির সম্মেলন স্থগিত
বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশক্রমে মাত্র এক সপ্তাহের নোটিশে যুক্তরাজ্য বিএনপিরবিস্তারিত পড়ুন
ইউরোপ থেকে অবৈধ বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে বাড়ছে চাপ !
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যভুক্ত বিভিন্ন দেশে অবৈধভাবে থাকা বাংলাদেশিদের ফিরিয়েবিস্তারিত পড়ুন
বাংলাদেশ থেকে তিন হাজার শ্রমিক নেবে সৌদি আরব
চলতি বছরের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পেশার প্রায় ৩ হাজারবিস্তারিত পড়ুন