উত্তরবঙ্গে যখন এনসেফেলাইটিস নিয়ে যখন একের পর এক রোগী মৃত্যুর খবর আসছে, তখন উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে এনসেফেলাইটিস নিয়ে বৈঠকে মন্ত্রী-সহ স্বাস্থ্য আধিকারিকদের পরিবেশন করা হচ্ছে চিকেন পকোড়া। তাও আবার চাট মশলা-সহ। শনিবার এমনই দৃশ্য চোখে পড়ল উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা মেডিক্যাল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান গৌতম দেবের এনসেফেলাইটিস নিয়ে রিভিউ মিটিংয়ে।

মিটিং শেষে মন্ত্রী অবশ্য এনসেফেলাইটিস নিয়ে দু-চারের বেশি শব্দ খরচ করেননি। তিনি বলেন, “জাপানী এনসেফেলাইটিসে ভ্যাক্সিনেশনের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি ব্লকেই যাতে ভ্যাক্সিনেশন সম্ভব হয় সেই বিষয়টি নিয়েই কথা হয়েছে।” মন্ত্রী জানান, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার মিলিয়ে প্রায় ৫৪টি ব্লক রয়েছে। এত বড় এলাকার জন্য প্রচুর ভ্যাক্সিনের প্রয়োজন। “আমরা এখনও কেবল মাত্র ৯টি ব্লকেই ভ্যাক্সিনেশন করতে পেরেছি”, দাবি মন্ত্রীর। এই ভ্যাক্সিনগুলি পুণে থেকে নিয়ে আসতে হয়। কেন্দ্রীয় সরকার গোটা বিষয়টি দেখাশোনা করে।

তবে প্রশ্ন উঠছে অন্য জায়গায়। গত বছর জাপানি এনসেফেলাইটিস এবং একিউট এনসেফেলাইটিসে আক্রান্ত হয়ে উত্তরবঙ্গে ১৬০ জনের মত্যু হয়েছিল। সে বছরও মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ছিল জলপাইগুড়ি জেলায়। এনসেফেলাইটিস নিয়ে উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গতবছর এসেছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপতি। কিন্তু চলতি বছরেও যখন মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে, তখন কোথায় প্রতিমন্ত্রী? স্বাস্থ্য অধিকর্তা এনসেফেলাইটিস নিয়ে একটি বৈঠক করলেও, এখন দেখা মেলেনি স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর।

চলতি বছরে এখন পর্যন্ত এনসেফেলাইটিসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৪১ জনের। কিন্তু এনসেফেলাইটিসে প্রতিরোধে এখন পর্যন্ত সেভাবে কোনও সচেতনতামূলক প্রচার চোখে পড়েনি। উলটে এক একটি বৈঠকে সরকারি টাকা খরচ করে চিকেন পকোড়া পরিবেশনের যৌক্তিকতা কতটা, সে নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। এনসেফেলাইটিস নিয়ে সরকার আর কবে দায়বদ্ধতা দেখাবে, প্রশ্ন উঠছে বারবার।