বাবা তুমি মাঠে আর আমরা মাঠের বাহিরে, ভয় পেয়ো না!
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে হল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের দারুণ এক জয়। সেটিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তাসকিন আহমেদ। ৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকলেও ডেথ ওভারে তাঁর অসাধারণ বোলিং নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশের জয়। জেতার পর বাবা আবদুর রশিদ যথারীতি ভিডিও কনফারেন্স করলেন ছেলের সঙ্গে।
খেয়াল করলেন, এমন জয়েও ঝলমলে হাসিটার দেখা নেই তাসকিনের মুখে। বরং সেখানে কেমন এক বিষণ্নতার ছাপ। তবে কি খারাপ কিছু হয়েছে? বাবার মনে কু-ডাক ডেকে উঠল! তাসকিন জানিয়েছিলেন, এবার বিশ্বকাপে নিরাপত্তাকর্মীরা নাকি খুব বাড়াবাড়ি করছে। তাদের ‘ধমকাধমকি’ থেকে খেলোয়াড়েরাও নাকি বাদ যাচ্ছেন না! এই ধরনের কোনো সমস্যা হয়েছে? তা নয়। ফাস্ট বোলারদের সব সময়ই ছায়াসঙ্গী চোট। তবে কি আবার হানা দিল চোট? সেটিও নয়। তাহলে কী হয়েছে তাসকিনের? বাবার উদ্বেগের শেষ নেই।
তাসকিন লুকাতেই চেয়েছিলেন। বলবে না-বলবে না করেও বললেন। একটাই শর্ত, মা যেন জানতে না পারে। জানলে যে ভীষণ চিন্তা করবেন। আয়ারল্যান্ডের ম্যাচের পর আম্পায়াররা বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টকে জানিয়েছেন, তাসকিনের বোলিং অ্যাকশন সন্দেহজনক! রশিদের বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়, তবুও বাস্তবতা মেনে নেন। তাসকিন যাতে ভেঙে না পড়েন, সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। ছেলেকে বলেন, ‘জীবনে বাধা আসবে। বাধাকে ভয় পেয়ো না। ভয় পেলে এগোতে পারবে না।’
চারদিকে খবরটা ছড়িয়ে পড়লে একপর্যায়ে সেটি পৌঁছেও যায় মা সাবিনা ইয়াসমিনের কানেও। শোনার পর থেকেই বিষাদে ছেয়ে গেছে তাঁর মন। ছেলে অবশ্য মাকে আশ্বস্ত করেছেন, এটি কঠিন কোনো বিষয় নয়। উতরে যাবেন চেন্নাইয়ের অ্যাকশন পরীক্ষায়।
এর আগে বহুবার যাওয়া হয়েছে মোহাম্মদপুরের জাকির হোসেন রোডে তাসকিনদের বাসায়। বেশির ভাগ সময় উপলক্ষ ছিল, বাংলাদেশ পেসারের নানা সাফল্যগাথায় বাবা-মায়ের প্রতিক্রিয়া জানা। স্বাভাবিকভাবে তখন বাসার পরিবেশটা ছিল অন্যরকম। কিন্তু আজ চিত্র ভিন্ন। তাসকিনের এমন কিছু হয়নি, তাতে শোকার্ত হতে হবে। তবু সবার মুখে উদ্বেগ-চিন্তার ছায়া।
এমনিতে আবদুর রশিদ মানসিকভাবে খুবই দৃঢ়। এমন পরিস্থিতিতেও নিজে শক্ত থাকছেন, ছেলেকেও সাহস জোগাচ্ছেন। তাসকিন অবশ্য বাবাকে বলেছেন, ‘আল্লাহ যা করেন, ভালোর জন্যই করেন। ক্যারিয়ারের শুরুতে এমন ঘটনা আমার জন্য ভালো হয়েছে। এতে সাবধান হওয়ার সুযোগ পাব। যদি ক্যারিয়ারের মাঝামাঝি কিংবা আরও পরে হতো, হয়তো খেলোয়াড়ি জীবনটাই হুমকির মধ্যে পড়ে যেত।’
তাসকিন একা নন; সন্দেহজনক বোলিংয়ে অভিযুক্ত হয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানিও। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ সমর্থকেরা। বিশেষ করে সাদা চোখে দেখলেই বোঝা যায়, তাসকিনের অ্যাকশন নিয়ে সন্দেহ হওয়ার কথা নয়। যদি সমস্যা থেকেও থাকে, তাসকিন তো এত দিন ধরে খেলছেন। তখন কেন প্রশ্ন না করে বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টের শুরুতে গিয়ে এই ধাক্কা?
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে তুমুল আলোচনা। তাসকিনের বাবা-মাও এতে খুঁজে পাচ্ছেন ষড়যন্ত্রের গন্ধ। আবদুর রশিদেরও প্রশ্ন, ‘ও ২০১৪ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে। বাংলাদেশের হয়ে দারুণ করছে।
গত বছর বিশ্বকাপ খেলে এসেছে। ঘরের মাঠে একের পর এক সিরিজ-টুর্নামেন্টে খেলেছে। এত দিন কেন এ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলো না? যখন ওর উত্থানের সময়, তখনই কেন এমন তৎপরতা? ক্রিকেট এমনিতে মনস্তাত্ত্বিক খেলা। হয়তো কিছুই হবে না ওর। তবে ছেলেটা মানসিকভাবে বেশ চাপে পড়ে গেল।’
ছেলেকে তাঁর চেয়েও বেশি চেনেন বলেই জানেন, এই লড়াইও ঠিকই জিতে আসবে। তাসকিন যে ‘স্টাম্প’ ভেঙে ফেলতেই ভালোবাসেন!
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন