বাবা যখন জুতা পালিশ করেন মেয়ে তখন খালি পায়ে দৌঁড়ে স্বর্ণ জেতে
সায়েলি মেইশিউন। আরএম ভাট হাইস্কুলের ছাত্রী। আন্ত: জেলা ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় দৌঁড়াচ্ছেন। খালি পায়ে। তিনি যখন প্রিয়দর্শিনী পার্কে খালি পায়ে দৌঁড়াচ্ছিলেন, তখন তার বাবা মঙ্গেশ দাদারে জুতা পালিশ করছিলেন। এই ঘটনা ভারতের মুম্বাইয়ের।
অন্যান্য দিনের মতো ১২ অক্টোবর সোমবারও মঙ্গেশের জন্য একটা সাধারণ দিন ছিল। তিনি ব্যস্ত ছিলেন মানুষের পায়ের জুতা খুলে কালি করতে। দুপুরে তো জুতার কালি করা মানুষের ভাটা পড়ে। কিন্তু তার জুতার কালির মানুষের ভাটা পড়লেও সোমবারের ওই সময়টাই যেন ছিল তার জন্য সবচেয়ে আনন্দের সময়। কারণ তার ১৪ বছর বয়সী মেয়ে আন্ডার-১৭ এ দৌঁড় প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জয় করেছেন।
মঙ্গেশ জানেন না তার মেয়েটি স্বর্ণপদক জয় করেছেন। মঙ্গেশ জানান, তিনি এইটুকু জানেন, তার মেয়ে স্কুলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। মেয়ের সেই দৌঁড় খেলা দেখতে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল তার। কিন্তু পারেননি। কারণ ওই মেয়েটি দৌঁড়ে যখন বাড়ি আসবে তখন তো সে এসে মা কে বলবে, মা, খাবার দাও। খিদে লাগছে। আমি যদি আজ জুতা পালিশ না করি তাহলে ওর ক্ষুধাটা মিটাতে পারবো না।
তাই খেলা দেখার চেয়ে কাজটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে মঙ্গেশের কাছে। কেবল তার খাবারই নয়, পুরো পরিবারের সদস্যদের খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। তার মাসিক আয় ৩৭০০ হাজার রুপি থেকে সাড়ে ১২ হাজার রুপির মধ্যে। তাই একদিন দোকান না খুললে ওই দিনের খাবার জোগাড় করা তার দ্বারা সম্ভব নয়। আমি যা আয় করি তার সিংহভাগই যায় আমার দুই মেয়ের পড়ালেখায়। বড় মেয়ে মাউরি তথ্যপ্রযুক্তিতে ডিপ্লোমা করেছে। আর আমার স্ত্রী সাবিতা মাঝে মাঝেই অসুস্থ থাকে।
সায়েলির জন্য আজ আমি গর্ববোধ করছি। ও আমার সম্মান বাড়িয়ে দিয়েছে, বলছিলেন মঙ্গেশ। এ সময় তার অশ্রæসজল চোখের নীচের দুটি ঠোঁটে ছিল রাজ্যের আনন্দ ভরা হাঁসি। দারিদ্র সায়েলির জন্য এতটা দুর্বিষহ যে, একটা জুতা কেনার সামর্থ্য তার নেই। সায়েলি জানায়, দৌঁড়ানোর জন্য যে স্পাইক জুতা প্রয়োজন তা কিনে দেয়ার সামর্থ্য আমার বাবার নেই। তাই আমি খালি পায়ে দৌঁড়াতে শিখেছি। এক জোড়া জুতা ৭৫০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা লাগে। জুতা না কেনার জন্য আমার অনেক সমস্যা হয়। আমি দৌঁড়ানোর মাঝে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। জুতা থাকলে আমি আরো দ্রæত দৌঁড়াতে পারতাম। কিন্তু সেই চিন্তা করে লাভ নেই সায়েলির।
জুতা তো দূরের কথা, বাড়ি গিয়ে মা-বাবার কাছে ভাল একটা পুরস্কার পাওয়ার আশাও করতে পারে না শায়েলিদের মতো মেয়েরা। কারণ তারা নিজেরাও চায় না তার একটা পুরস্কারের জন্য সংসারে কোন কষ্ট হোক। আর বাবা মঙ্গেশও জানেন যে, তিনি ইচ্ছা করলেও দামী কোনো পুরস্কার আদরের ছোট্ট মেয়েটির জন্য নিয়ে বাড়ি যেতে পারবেন না। বলতে পারবেন না, মা এই নাও, তোমার জন্য ভাল কিংবা মূল্যবান একটা পুরষ্কার এনেছি যা পেলে তুমি খুশি হবে। কিংবা বলতে পারবেন না, মা তোমার পুরস্কার জয়ে আজ আমরা বিরিয়ানি খাবো। তবে মঙ্গেশরা কিছ্ইু পারেন না, তা কিন্তু নয়, মেয়ের পছন্দের কয়েকটি চকলেট অন্তত নিয়ে যেতে পারবেন। দামী মিষ্টির পরিবর্তে এটাই হয়তো মঙ্গেশদের মতো মুচিদের কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয়। -এনডিটিভি
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন
হোটেল ঘরে বিছানার চাদর সাদা হয় কেন ?
বেড়াতে গিয়ে হোটেলের ঘরে ঢুকে প্রথম যে বিষয়টি নজরে আসে,বিস্তারিত পড়ুন
ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ
চিকিৎসকদের মতে, ধনে বা ধনিয়া একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেকবিস্তারিত পড়ুন