বিএনপিকে বাঁচিয়ে রাখল আওয়ামী লীগ

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। ক্ষমতার পালা বদলে দলটি চারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছে। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের সরকার গঠন নিয়ে দলটিকে মোকাবেলা করতে হয়েছে বহু সমালোচনার। যা আজ অবধি চলছে। তবে গত ২০১৪ সালে বিএনপির টানা ৯২ দিনের অবরোধের নামে দেশব্যাপী পেট্রোল বোমা হামলা ও জ্বালাও-পোড়াও কর্মসূচির পর আবারো বিএনপির বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় বেড়েছে বহু গুনে।
এসব সমালোচনা করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ ও তার শরীক ১৪ দলীয় জোটের নেতাদের সভা-সমাবেশ, আলোচনা অনুষ্ঠান এমনি মিলাদ মাহফিলেও বিএনপি’র নামটি উচ্চারণ করতে শোনা গেছে। যদিও দলটির বর্তমানে সংসদে কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। তারপরও তাদের নিয়ে এতো আলোচনা করায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও আক্ষেপ করেছেন।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ‘গণতন্ত্র মুক্তি দিবস’ উপলক্ষে এক সমাবেশে বলেন, “মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে খালেদা জিয়া নিজেকে প্রমাণ করেছেন- তিনি মনে প্রাণে পাকিস্তানি। আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বিএনপির বন্ধুদের অনুরোধ জানাবো, আপনারা পাকিস্তানী খালেদা জিয়াকে অব্যাহতি দিয়ে দলকে নতুন করে গঠন করুন।”
জাতীয় শিল্পকলা একাডেমীতে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ গত ৯ জানুয়ারী বলেছেন, “বিএনপি গণ্ডগোল করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। তারা বুঝতে পেরেছে, পেট্রোল বোমার রাজনীতি তাদেরকে জনগণের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে।”
“১৩ জানুয়ারি রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমীর আরেক অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, “জঙ্গী মদদদাতা খালেদা জিয়া ও তার দল বিএনপি এখন অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।”
এছাড়াও আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য, সড়ক ও যোগযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিএনপি এখন আর আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ নয়, আমাদের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদ মোকাবিলা করা।”
তাছাড়াও বিভিন্ন সভা সমাবেশ ও অনুষ্ঠানে বিএনপির নাম উচ্চারণ করে বক্তব্য দিয়েছেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মহানগরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ড. আব্দুর রাজ্জাক সহ দলটির সিনিয়র প্রায় সব নেতাই। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের জোটের নেতারা এই নামটি উচ্চারণ করার ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তারাও হরহামেশাই উচ্চারণ করছে নামটি।
বিএনপির নাম উচ্চারণে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু একাই একশো। তিনি বিএনপি ও তাঁর নেত্রীর সমালোচনা করতে গিয়ে বারবারই উচ্চারণ করেছেন জঙ্গী ও একাত্তরের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধীতাকারী জামায়াতের নামটি।
জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘গণতন্ত্র ও উন্নয়ন শীর্ষক’ এক আলোচনা সভায় গত ১২ জানুয়ারি জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, “এখন দুর্নীতি ও দলবাজী নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। সাংবিধানিকভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রেখে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। খালেদা জিয়ার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিচার ও জঙ্গিদের ছিটেফোটা আস্তানাটিও ধ্বংস করা হবে।”
তবে এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম একমাত্র জাতীয় পার্টির নেতারা। তারা বিএনপির নামটি উচ্চারণের ক্ষেত্রে খুবই কৃপনতার পরিচয় দিয়েছেন। জাপা নেতাদের বক্তব্যের বেশির ভাগ সময়ই থাকে হতাশা আর না পাওয়ার বেদনা। জাতীয় পার্টির ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এরশাদ বলেন, “জনগণ আমাদের বিরোধীদল মনে করে না। খবরের কাগজগুলোতে বিএনপিকে বিরোধীদল বলা হয়। কারণ, আমাদের ইমেজ সঙ্কট আছে। বিএনপি-আওয়ামী লীগের কথাই কাগজগুলোতে আসে। জাতীয় পার্টির কথা আসে না। সত্যিকারের জনগণের কথা আমরা বলতে পারি না।”
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি গত ৫ জানুয়ারিতে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, “২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম, সে গণতন্ত্র এখন টর্চ লাইট দিয়ে খুঁজতে হয়।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনে একে অন্যের সমালোচনা করবে এটাই স্বাভাবিক। তবে সরকারের মন্ত্রী এমপিদের বক্তব্যে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো বেশি করে ফুটিয়ে তুলে ধরা দরকার।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

সাবেক এমপি মিয়াজী যশোরের পার্ক থেকে আটক
ঝিনাইদহ-৩ আসনের সাবেক এমপি ও শেখ হাসিনার সাবেক সামরিক সচিববিস্তারিত পড়ুন

ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন

আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন