বিএনপির কর্মিসভায় সংঘর্ষ, আহত ৮
কেন্দ্রীয় নেতার উপস্থিতিতেই জয়পুরহাট জেলা বিএনপির বিবদমান দুটি পক্ষের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার মধ্য দিয়ে ভন্ডুল হয়ে গেছে কর্মিসভা। এ সংঘর্ষে অন্তত আটজন আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার জয়পুরহাট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে বিএনপির কর্মিসভায় এ সংঘর্ষ হয়।
সংঘর্ষে আহত জয়পুরহাট জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ মো. জিয়া উদ্দীন চৌধুরী (৩০), মোসলেম উদ্দীন (৩০), আজিজুল ইসলামকে (২৮) জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। হাসপাতালের নিবন্ধন খাতায় তাঁদের নাম পাওয়া গেছে। বাকিরা অন্যত্র প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
জয়পুরহাট জেলা বিএনপি ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জয়পুরহাট শহরের সিও কলোনি এলাকার জেলা পরিষদ মিলনায়তনে বেলা ১১টায় বিএনপির কর্মিসভা শুরু হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সভাপতি মোজাহার আলী প্রধান। সভায় পাঁচবিবি উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি আবু তাহের বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, যারা জেলা বিএনপির কার্যালয়ে আগুন দেয়, খালেদা জিয়া, জিয়াউর রহমান ও তারেক রহমানের ছবি পোড়ায়, তাঁরা এই কর্মিসভায় উপস্থিত হয়েছেন। এ কথা বলার পরপরই মিলনায়তনে থাকা কিছু কর্মী লাঠি ও হাঁসুয়া নিয়ে ভাঙচুর শুরু করেন এবং প্রতিপক্ষের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেন। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে মঞ্চে থাকা বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধীদলীয় হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকসহ স্থানীয় নেতারা দ্রুত মিলনায়তন থেকে বের হয়ে যান।
পরে জেলা পরিষদ মিলনায়তনের সামনে সাংবাদিকদের জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে জয়পুরহাটে এসেছিলাম। মিটিং চলাকালে দুষ্কৃতকারীরা সভার পরিবেশ নষ্ট করেছে। আমি হতাশ হয়ে ফিরে গেলাম। তবে হামলা, মামলা, অত্যাচার করে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে না। বিএনপি দেশে এবং সারা বিশ্বে দল হিসেবে পরিচিত। তৃণমূল পর্যায়ে সুসংগঠিত। আপনারা ধৈর্য ধরেন, সব ঠিক হয়ে যাবে।’
এ সময় জেলা বিএনপির অপর একটি পক্ষের নেতা-কর্মীরা সিও কলোনির মসজিদের পশ্চিম দিক থেকে লাঠি, রামদা, হাঁসুয়া নিয়ে ধর ধর বলে মিলনায়তনের দিকে ছুটে গিয়ে অপর পক্ষকে ধাওয়া করে। তখনই জয়নুল আবদিন ফারুক গাড়িতে উঠে দ্রুত বগুড়ার দিকে চলে যান।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বিএনপির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জয়পুরহাট বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে আগুন দেওয়া, জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি পোড়ানোর কথা বলে বক্তব্য দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিকল্পিতভাবে আগে থেকেই মিলনায়তনে রাখা লাঠি, হাঁসুয়া নিয়ে একদল কর্মী ভাঙচুর ও মারপিট শুরু করেন। জেলা কমিটির দ্বন্দ্বের জের ধরেই কর্মিসভা ভন্ডুল হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মিলনায়তনের কেয়ারটেকার জামিল হোসেন জানান, সকালের দিকে মিলনায়তন খুলে দেওয়া হয়। তারপর কে বা কারা অনেক কাঁচা বাঁশের লাঠি এনে রাখে। সংঘর্ষের সময় মিলনায়তনের অনেক চেয়ার ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সভাপতি মোজাহার আলী প্রধান বলেন, একদল দুষ্কৃতকারী পরিকল্পিতভাবে হামলা করে শান্তিপূর্ণ কর্মিসভা ভন্ডুল করে দিয়েছে। কারা করেছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারা করেছে তা সবাই দেখেছে।
জেলা বিএনপির সহসভাপতি গোলাম মোস্তফা মুঠোফোনে দাবি করেন, সরকারের মদদপুষ্টরা হামলা করেছে। এটা বিএনপির কোনো অভ্যন্তরীণ কোন্দল নয়।
জেলা বিএনপির একটি সূত্র জানায়, গত ২ মার্চ কেন্দ্রীয় বিএনপি জয়পুরহাট জেলা বিএনপির ২৬ সদস্যের আংশিক কমিটির নাম ঘোষণা করে। ওই কমিটির সভাপতি মোজাহার আলী প্রধান, সহসভাপতি গোলাম মোস্তফা ও সাধারণ সম্পাদক পদে নাফিজুর রহমানের নাম ঘোষণা করে। নাফিজুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করায় সহসভাপতি গোলাম মোস্তফার পক্ষ মেনে না নেওয়ায় সভাপতি মোজাহার আলীর ও গোলাম মোস্তফার পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এর জের ধরে গত ৯ মার্চ বিএনপির একটি পক্ষ শহরের জেলা বিএনপি কার্যালয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। ওই ঘটনায় সভাপতি মোজাহার আলী প্রধানের সমর্থক জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মনজুরে মওলা বাদী হয়ে জেলা বিএনপির সহসভাপতি গোলাম মোস্তফাসহ তাঁর সমর্থক ১৬ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে দলীয় কার্যালয় পোড়ানোর মামলা করেন। পাল্টা মামলা করেন মোস্তফার সমর্থক হাসানুজ্জামান আলম। এ মামলায় কাজী মনজুরে মওলাসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন