বিএনপির ক্ষমতায় আসা সময়ের ব্যাপার মাত্র
যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত রাজনৈতিক কর্মশালায় বিশিষ্টজনরা বলেছেন, বাংলাদেশ ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান অবিচ্ছেদ্য ও অবিনশ্বর। বাংলাদেশ যতোদিন থাকবে জিয়াউর রহমানের নাম ততোদিন সমস্বরে উচ্চারিত হবে। তাঁর কৃতিত্বই তাঁকে মহানায়কের আসনে আসীন করেছে। দেশে দেশে জাতীয়তাবাদের উত্থান হচ্ছে। বাংলাদেশেও বিএনপির নেতৃত্বে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
স্থানীয় সময় সোমবার বিকালে পূর্ব লন্ডনের রিজেন্ট বেঙ্কুয়েটিং হলে আয়োজিত এক কর্মশালায় যোগ দেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তবে তিনি দর্শক সারিতে বসে প্যানেল আলোচকদের বক্তৃতা শোনেন।
দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী এতে যোগ দেন। একই ধরণের স্যুট ও টাই পরা কর্মীদের সামনে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা উপস্থাপন করেন কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রফেসর ড. কেএমএ মালেক, যুক্তরাজ্য সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কনসালট্যান্ট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক প্রফেসর ড. হাসনাত হোসাইন এমবিই, জাস্ট নিউজ সম্পাদক ও জাতিসংঘ সংবাদদাতা মুশফিকুল ফজল আনসারী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি পারভেজ মল্লিক, ইউনিভিার্সিটি কলেজ লন্ডন (ইউসিএল) এর পোস্ট ডক্টরেট ফেলো ড. রুহুল আমিন খন্দকার এবং বাংলাদেশ সেন্টার ফর জার্নালিজম এন্ড ডেমোক্রেসির নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি এম মাহাবুবুর রহমান।
যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নাসির আহমেদ শাহীনের সভাপতিত্বে দুই পর্বের অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসাইন। দ্বিতীয় পর্বে নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়।
প্রফেসর ড. কেএমএ মালেক বলেন, জাতীয়তাবাদী দর্শনের কারণেই বিএনপিকে যেমন নানামুখি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে, তেমনি এই আদর্শের কারণেই অচিরেই বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। এখন পৃথিবীর দেশে দেশে জাতীয়তাবাদের জাগরণ ঘটছে। প্রায় চার দশক আগে আমাদের দেশে এ জাগরণের সূচনা করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। স্বাধীনতার মহান ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধ করে তিনি যেমন আমাদের ভূখন্ড ছিনিয়ে এনেছিলেন তেমনি নির্মাণ করেছেন আমাদের জাতীয় পরিচয় বাংলাদেশি।
তিনি বলেন, যে দর্শনের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল মানুষের আশা আকাঙ্খাকে বাস্তবায়ন করে চলেছে ফ্যাসিবাদের কবলে পড়ে ক্ষমতা থেকে দূরে থাকলেও জাতীয়তাবাদী রাজনীতির দর্শন দেশের বেশিরভাগ মানুষের ভিতের বিস্তৃত।
ড. কেএমএ মালেক বলেন, শেখ হাসিনার আচরণ ও কথাবার্তায় গণতন্ত্রের লেশমাত্রও নেই। আছে কেবল উগ্রতা আর অশালীনতা।
শিক্ষা ও সামাজিক অগ্রগতিতে বিএনপির ভূমিকা প্রসঙ্গে প্রফেসর ড. হাসনাত হোসাইন এমবিই বলেন, জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অসামান্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। শিক্ষা ও সামাজিক প্রগতি এবং অর্থনৈতিক উন্নতি বিএনপি সরকারই নিশ্চিত করতে পেরেছে। এসকল ক্ষেত্রে শহীদ জিয়ার অবদান বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ শিক্ষা ও সামাজিক অগ্রগতির বিনাশ করেছে। মানসম্পন্ন শিক্ষার বদলে এখন তারা জিপিএ সংখ্যা ও পাশের হার বাড়ানোর পিছনে ছুটছে। লুটেরা শ্রেণী তৈরি করে দেশটাকে লুটেপুটে খাচ্ছে। জনগণের সম্পদ এখন সরকার ও তাদের কতিপয় দোষরদের হাতেই।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, তারেক রহমান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন এবং স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে তিনি জাতীয়তাবাদী আদর্শকে আরো কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করবেন।
মুশফিকুল ফজল আনসারী গণতন্ত্র, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা, কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে বিএনপির ভূমিকা প্রসঙ্গে তাঁর গবেষণালব্দ তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বলেন, তিনটি কারণে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশে-বিদেশে কিংবদন্তি রাষ্ট্রনায়কের আসনে আসীন। প্রথমত, ১৯৭১ সালে যখন রাজনৈতিক নেতৃত্ব আপোষকামী ও ব্যর্থ তখন তাদের বিপরীতে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতার মহান ঘোষণা দিয়ে সম্মুখ সমরে যুদ্ধ করে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটানো। দ্বিতীয়ত, ১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বে সংগঠিত নৃশংস হত্যাকান্ডের পর ৭ই নভেম্বর সিপাহী-জনতার সংহতির মধ্য দিয়ে দেশের এক চরম সংকটকালে দায়িত্বভার গ্রহণ। এবং সর্বোপরি গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, উৎপাদনমুখী রাজনীতি এবং মর্যাদাপূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার মধ্যদিয়ে বিশ্বসভায় নতুন এক বাংলাদেশকে বিনির্মাণ।
তিনি বলেন, শহীদ জিয়ার সেই লিগেসি শাণিত করেছেন দেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত তাঁর সুযোগ্য উত্তরসূরি তারেক রহমান এই লিগেসি বহন করছেন। পক্ষান্তরে একদলীয় শাসন, গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার হরণ ও গুম-খুনের লিগেসি বহন করছেন আজকের অবৈধ শাসক শেখ হাসিনা। তার দ্বারাই ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম হবে এটাই স্বাভাবিক।
প্রধানমন্ত্রীর সাবেক এই সহকারি প্রেস সচিব বলেন, ১৯৭৫ সালে সকল সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়ে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো। সাংবাদিকরা পরিণত হয়েছিলেন বিবৃতি লেখকে। আজও তেমনি স্বাধীন সাংবাদিকতার আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। যারা চেষ্টা করছেন তারাই মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছেন। অথবা নির্যাতন হয়রানির মুখোমুখি হচ্ছেন।
তিনি বলেন, তারেক রহমান ক্ষমতাকে নয় জনতাকে বেছে নিয়েছেন। তাই তিনি জনগণের খুব কাছাকাছি পৌঁছতে পেরেছেন। সেদিন আর বেশি দূরে নয় যেদিন এই জনতাই তাঁর নিকট রাষ্ট্রের আমানতদারি সমর্পন করবেন।
পারভেজ মল্লিক বলেন, জিয়াউর রহমানের ‘প্রশিক্ষিত কর্মীরাই রাজনৈতিক দলের প্রাণ’ এই শ্লোগানকে ধারণ করে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল এই কর্মশালা আয়োজন করেছে। জাতীয়তাবাদী রাজনীতি আমাদেরকে যেমন ধারণ ও লালন করতে হবে তেমনি ছড়িয়ে দিতে হবে সকল প্রজন্মের বাংলাদেশির কাছে।
তিনি বলেন, আমরা কেবল একটি গর্বিত জাতি নয়, একটি গর্বিত রাজনীতিরও উত্তরাধিকার।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন