বিএনপির নির্বাচন বর্জন ঐতিহাসিক ভুল ছিল: শামসুল হুদা
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি ঐহিতাসিক ভুল করেছে বলে মনে করেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার এ টি এম শামসুল হুদা। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে দলটি অংশ নিলে দেশের নির্বাচন পরিস্থিতি এখনকার মতো এতো খারাপ হতো না বলেও মনে করেন তিনি।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক গোলটেবিল আলোচনায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এই কথা বলেন। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে নাগরিক ভাবনা শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করে বেসরকারি সংগঠন সুশাসনের জন্য নাগরিক।
সাবেক আমরা শামসুল হুদা প্রধান নির্বাচন কমিশনার হয়েছিলেন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। তার অধীনেই হয় নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
এই নির্বাচনের আগে বিতর্কহীন ভোটার তালিকা প্রণয়ন, ছবিযুক্ত জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি, স্বচ্ছ ব্যালটবাক্সে ভোট নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশংসিত হন শামসুল হুদা। তার অধীনে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বেশ কয়েকটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনও হয় শান্তিপূর্ণ। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর উপজেলা নির্বাচন তুলনামূলক ছিল শান্তিপূর্ণ।
শামসুল হুদা কমিশনের মেয়াদ শেষে দায়িত্ব নেয় রকিব উদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন। এই কমিশনের অধীনে পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন না উঠলেও গত উপজেলা নির্বাচন এবং বেশ কিছু সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কমিশন শক্তিশালী ভূমিকা নিতে পারেনি বলে সমালোচনা আছে।
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ টি এম শামসুল হুদা মনে করেন, বিএনপি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করায় ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণেই সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলো নিয়ে নানা সমালোচনা তৈরি হচ্ছে।
সাবেক সিইসি বলেন, ‘বিএনপির অবশ্যই ওই নির্বাচনে অংশ নেয়ার উচিত ছিল।’ কোনো দলের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন যেমনই হোক গোপালগঞ্জ, ফরিদপুরসহ কিছু এলাকায় একটি দল জিতবেই। আবার বগুড়াসহ কিছু এলাকায় জিতবে আরেকটি দল। কারণ, তাদের সমর্থক এত বেশি যে সেখানে কারও পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়।’
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের আন্দোলনে নামা বিএনপি অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর সরকারের এক বছর পূর্তিতে সরকার পতন আন্দোলনেও ব্যর্থ হয়েছে। এরপর থেকে দলটি রাজনৈতিকভাবে আগের মতো গুরুত্ব পাচ্ছে না। এই অবস্থায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি কী করবে-সে নিয়ে কথা হচ্ছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে কিছুটা ছাড় দেয়া বিএনপি এখন বলছে, যে নামেই হোক, নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ সরকার নিশ্চিত করতে হবে। আর সরকার বলছে, বিএনপি আগের নির্বাচন বর্জন করলেও আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে।
শামসুল হুদাও আশা করেন আগামী নির্বাচনে সব দল অংশ নেবে। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কেন আমরা বর্জন করবো। আমি ইতিবাচকভাবেই দেখি, আগামী নির্বাচন অবশ্যই ভালো হবে।’
সব দলের সাথে আলোচনা করে নির্বাচন কমিশন গঠনের পরামর্শ দিয়ে শামসুল হুদা বলেন, ‘সবার সাথে আলোচনা করে নির্বাচন কমিশন গঠন হলে নির্বাচনের ফলাফল আর কেউ বর্জন করতে পারবে না। কারণ, তখন কথা উঠবে, তারা নিজেরাই তো পরামর্শ দিয়েছিল।’
বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থার অভাব আছে জানিয়ে সাবেক সিইসি বলেন, ‘যারা পরাজিত হয় তারাই বলে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। আমাদের সময় অনেক ভালো নির্বাচন হয়েছে, তারপরও একটি দল বলেছে তারা মানে না। কিন্তু নির্বাচনের ফল মানতে হবে। ভোটাররা যেন নিশ্চিতে ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে।’
রাজনৈতিক দলগুলোকে সহিংসতা ছাড়ার আহ্বান জানিয়ে সাবেক সিইসি বলেন, ‘ভায়োলেন্সে যাবেন না। এর কারণে মানুষ রাস্তায় বের হতে পারে না।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের ভেবে দেখতে হবে কী কী কাজ করলে জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলো বলবে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। আর দ্বিতীয় হলো, সব দলের অংশগ্রহণ।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন