বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২৮, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

বিএনপির নয়া পরিকল্পনা

টার্গেট- সবার কাছে গ্রহণযোগ্য দ্রুত জাতীয় নির্বাচন আদায় * অনিয়মের আশংকা থাকলেও কৌশলগত কারণে পরবর্তী সব স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেয়া * ভারতসহ বিভিন্ন রাষ্ট্র, সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন * নির্বাচন কমিশন সংস্কারে প্রস্তাব উত্থাপন * প্রয়োজনে জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ
সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি জাতীয় নির্বাচন দ্রুত আদায় করতে নানা পরিকল্পনা ও কৌশল গ্রহণ করেছে বিএনপি। দলটির নীতিনির্ধারকদের ধারণা- সরকারের ওপর রাজনৈতিক, সামাজিক ও বহির্বিশ্বের চাপ বাড়াতে না পারলে এ ধরনের নির্বাচন আদায় করা সম্ভব নয়। আর এজন্য প্রয়োজন দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করা। যার কারণেই আগামী এক মাসের মধ্যে তৃণমূলের সব কমিটি এবং মার্চের মধ্যে জাতীয় কাউন্সিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।

এছাড়া আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে যতগুলো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন হবে, সেগুলোর প্রত্যেকটিতে অংশগ্রহণেরও নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। এ নির্বাচনগুলো নিরপেক্ষ হবে না- এমনটি নিশ্চিত হওয়ার পরও কৌশলগত কারণে অংশ নেবে তারা। বিএনপির নীতিনির্ধারকদের ধারণা- ৩০ ডিসেম্বরের পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নেয়ার মধ্য দিয়ে দলের সব স্তরের নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

বিএনপির নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে, পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ভারতসহ গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে আস্থার সম্পর্ক গড়তে যোগাযোগ বাড়ানো, সরকারবিরোধী সব রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে কাজ শুরু করেছেন দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে জোট করার কারণে ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে আস্থার সম্পর্কে চিড় ধরেছে। এটি উন্নয়নে জামায়াতকে এড়িয়ে চলা শুরু করেছে বিএনপি। এতে জামায়াত যদি জোট থেকে বেরিয়ে যায়, সেক্ষেত্রে ‘নীরব দর্শকের ভূমিকা’ পালন করবে বিএনপি। এছাড়া নির্বাচন কমিশন যাতে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে সে ব্যাপারে কি করণীয় তা নিয়েও দেশী-বিদেশী সংশ্লিষ্ট সবার কাছে বিভিন্ন আইনি প্রস্তাব তুলে ধরা হবে বিএনপির পক্ষ থেকে।

জানতে চাইলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আসলে রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই। আগাম নির্বাচন দেয়ার জন্য দেশী-বিদেশী চাপ সৃষ্টি করা সম্ভব হলে সরকার সে ধরনের চিন্তা করতে পারে। না হলে তারা কেন নির্বাচন দেবে। কোনোদিনই দেবে না। এখন থেকেই নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করা দরকার। সরকারের উচিত হবে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন করা। কারণ সরকারেরও বৈধতা বা আস্থাহীনতার অভাব রয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ভারতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কের দূরত্ব যতটা না, তার চেয়ে বেশি প্রোপাগান্ডা। বিএনপি ভারতবিরোধী এমন একটা তকমা লাগানোর চেষ্টা করছেন কেউ কেউ। ভারতের সঙ্গে এখন বিএনপির দূরত্ব আছে বলে মনে করি না। কারণ ভারত চায় বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের উন্নয়ন হোক, বিএনপির চাওয়াও তাই। বিজেপি সরকারে আসার পর বিএনপির সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি বলেন, দল পুনর্গঠন একটি চলমান প্রক্রিয়া। তৃণমূলে পুনর্গঠনের কাজ চলছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন দল ও পুলিশের ভয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বাইরে বের হতে পারছে না। তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এ অবস্থায় তৃণমূল পর্যায়ে কাউন্সিল বা সভা ডাকা যাচ্ছে না। এরপর পৌর নির্বাচনে অংশ নেয়ায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ব্যস্ত হয়ে পড়ে। পৌর নির্বাচন শেষ হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে। আর দ্রুত জাতীয় কাউন্সিলের প্রস্তুতিও নেয়া হচ্ছে।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বিএনপি সাংগঠনিকভাবে দুর্বল এটা ঠিক নয়। আমাদের সংগঠন শক্তিশালী। সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গণমাধ্যমকে দিয়ে এসব করাচ্ছে। নিরপেক্ষ নির্বাচন করুক। তখন দেখা যাবে বিএনপির জনভিত্তি আছে কিনা। মজার ব্যাপার দেখেন, সরকার এত দুর্নীতি করছে, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করছে, যা ইচ্ছা তাই করছে- সে ব্যাপারে গণমাধ্যম চুপ। তারা শুধু আছে বিএনপির কোথায় খুঁত রয়েছে তা খুঁজে বের করতে। এটা দুঃখজনক। বিএনপি যে প্রতিকূলতার মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে সেটাকে ইতিবাচকভাবে দেখা উচিত। অতীতেও বিএনপি প্রতিকূলতার মধ্যে টিকে ছিল। এটা সম্ভব হয়েছে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুদক্ষ নেতৃত্ব এবং নেতাকর্মীদের দলের প্রতি ভালোবাসা ও আনুগত্যের কারণে।

দলীয় সূত্র জানায়, সময়-সুযোগ বুঝে সরকারের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে সোচ্চার হবে বিএনপি। নির্বাচন কমিশনকে বিশেষ ক্ষমতা দিয়ে শক্তিশালী করার পক্ষে। বিদেশীদের সঙ্গে আলাপকালে দলটির নেতারা সে রকম ইঙ্গিত দিয়েছেন। পৌর নির্বাচনের আগে পার্শ্ববর্তী ভারত সফর করেছেন বিএনপির তিন জ্যেষ্ঠ নেতা। সেখানে ভারত সরকারের বিভিন্ন স্তরের নীতিনির্ধারকের সঙ্গে আলাপ করেন তারা। আলোচনায় নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার বিষয়ে ব্যাপক সংস্কারের বিষয়টি উঠে আসে। পাশাপাশি বিএনপির নেতারা তাদের বলেন, বর্তমান কমিশন সরকারের ইচ্ছায় চলে। এ ধরনের কমিশন দিয়ে ভবিষ্যতে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। পৌর নির্বাচনের পরে দলের দুই উপদেষ্টা ভারত সফরে যান, তারাও সরকার ও নির্বাচন কমিশনের বাস্তবচিত্র তুলে ধরেন বলে জানা গেছে।

বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পৌরসভা নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হওয়ার পরও বিএনপি দলীয় প্রতীকে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলটির হাইকমান্ড মনে করছে, ২৩৪ পৌরসভা নির্বাচনে ফলাফল যা-ই হোক রাজনৈতিকভাবে বিএনপি লাভবান হয়েছে। বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়; তা দেশী-বিদেশী মহলকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া সম্ভব হয়েছে। এছাড়া ক্ষমতাসীনদের মামলা-হামলাসহ নানা নির্যাতনের কারণে দলের যেসব নেতাকর্মী আন্মগোপনে চলে গিয়েছিল তাদের প্রকাশ্যে আনা সম্ভব হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে তৃণমূলের যোগাযোগ স্থাপন করাও সম্ভব হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা মতে, মার্চে প্রায় ৬শ’ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, দুটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে আমরা পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। প্রথমত, আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বরাবরই অংশ নিয়েছি। এবারও নিয়েছি। কারণ স্থানীয় নির্বাচনে সরকারের পরিবর্তন হয় না। আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, এটা প্রমাণ করার জন্যই অবৈধ সরকারের অধীনে নির্বাচনে গিয়েছি। পৌর নির্বাচনে তাদের স্বরূপ দেশে-বিদেশে উন্মোচিত হয়েছে। দ্বিতীয়ত, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। আমাদের সব সময় নির্বাচনের মধ্যেই থাকতে হয়। নির্বাচনের বাইরে গেলে বিএনপি কিছুটা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। স্বাভাবিকভাবেই জনগণের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। নির্বাচনে থাকলে জনগণের কাছে পৌঁছার সুযোগ সৃষ্টি হয়। কয়েক বছর ধরে দেশে স্বৈরতন্ত্র চলছে। তাই স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক কার্যক্রম করতে পারিনি। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা জনগণের কাছে যেতে পেরেছি। এদিক থেকে আমি মনে করি নির্বাচনে গিয়ে আমাদের লাভই হয়েছে।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, পৌর নির্বাচনে অংশ নেয়ার ফলে আমরা সরকারের আসল চেহারা জনগণের সামনে উন্মচোন করতে পেরেছি। ৫ জানুয়ারি (২০১৪ সাল) জাতীয় নির্বাচন যে সুষ্ঠু হতো না, সেটা প্রমাণিত হয়েছে পৌর নির্বাচনে। একইভাবে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কারচুপি হবে- তা নিশ্চিত হওয়ার পরও কৌশলগত কারণে অংশ নেবে বিএনপি।

তিনি বলেন, আমি পৌর নির্বাচনের সময় সরেজমিন দেখেছি, যেসব নেতাকর্মী মামলা-হামলার কারণে আত্মগোপনে ছিলেন, তারাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদেরও নেতাকর্মীদের উৎসাহের কমতি থাকবে না। এতে করে দল পুনর্গঠনে গতিও আসবে- যা আগামী দিনে আন্দোলন-সংগ্রামে কাজে লাগবে।

এ মুহূর্তে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা-মামলা কমে এসেছে। গ্রেফতার হওয়া নেতাকর্মীরা জামিন পাচ্ছেন। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের আইন কর্মকর্তারা জামিনের ব্যাপারে তেমন বিরোধিতা করছেন না। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার ও মির্জা আব্বাস ছাড়া দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জামিনে মুক্ত হয়ে দলীয় কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এমকে আনোয়ার সবগুলো মামলায় আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। তিনি এখন মুক্তির অপেক্ষায়।

বিএনপির হাইকমান্ড মনে করে, সরকারের নমনীয় মনোভাবের কারণেই দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের জামিন পাওয়া সম্ভব হয়েছে। এছাড়া দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ৫ জানুয়ারির সমাবেশের অনুমতি সরকারের নমনীয়তারই অংশ। সরকারের এ নমনীয় মনোভাবকে কাজে লাগিয়ে দলের জাতীয় কাউন্সিল করার টার্গেট নিয়েছে বিএনপি। তাই আগামী এক মাসের মধ্যে তৃণমূলের দলের সব পর্যায়ের কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দলের সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। উল্লেখ্য, গত বছরের ৯ আগস্ট বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব মো. শাহজাহান ওই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জেলা/মহানগর/থানা/উপজেলা/পৌর/ইউনিয়ন কমিটি গঠন করতে একটি লিখিত নির্দেশনা পাঠায় সংশ্লিষ্ট নেতাদের কাছে। জানা গেছে, কয়েক দফা সময় বাড়ানোর পরও ক্ষমতাসীনদের নির্যাতন ও দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে ২০ সাংগঠনিক জেলা কমিটি গঠনে কোনো কাজই হয়নি। ওই সব জেলায় এ সপ্তাহেই মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দিয়ে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করে চিঠি পাঠানো হবে। এ বিষয়ে পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার প্রধান সমন্বয়ক ও দলের যুগ্ম-মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান যুগান্তরকে বলেন, এখন দলকে গুছিয়ে নেয়াটাই আমাদের অন্যতম টার্গেট। যোগ্য ও ত্যাগীদের মূল্যায়ন করাসহ দলের চেয়ারপারসনের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ চলছে। আশা করি, দ্রুত পুনর্গঠন কাজটি আমরা করতে পারব।

দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক নেতা জানান, দিনক্ষণ ঠিক না হলেও আগামী মার্চের মধ্যে কাউন্সিলের মাধ্যমে দলের মহাসচিব নির্ধারণ করতে চান। যদিও কাউন্সিলকে সামনে রেখে এ গুরুত্বপূর্ণ পদে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কাকে বসাচ্ছেন তা নিয়ে মুহূর্তে মুহূর্তে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। এ পদটি নিয়ে দলটি এখন ওয়ান-ইলেভেনের মতো দুটি ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছে। সর্বশেষ ৫ জানুয়ারির সমাবেশে সভাপতিত্ব ও সমাবেশ পরিচালনা করা আগের রাতে দলের সিনিয়র নেতাদের মধ্যে বিতর্কও হয়। পরে খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্তে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ওই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। ওই নেতার ভাষ্য মতে, দলের চেয়ারপারসন এ বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবনায় পড়েছেন।

বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, পরিকল্পনা যা-ই থাক না কেন পুনর্গঠন ও পুনর্মিলন এক সঙ্গে না ঘটলে কাউন্সিল করে কোনো লাভ হবে না। সে দিকটি অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। তবে দলীয় সূত্রে জানা যায়, যোগ্যদের মূল্যায়নের বিষয়ে খালেদা জিয়ার মনোভাব বেশ কড়া। ইতিমধ্যে দলের আস্থাভাজন, পরীক্ষিত ও যোগ্য নেতাদের তালিকা সংগ্রহ করে বিএনপি চেয়ারপারসন তার কাছে রেখেছেন। তবে পুনর্গঠনের পাশাপাশি দলে পুনর্মিলনের বিষয়টিও মাথায় রেখেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। ইতিমধ্যে দলের বাইরে থাকা সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিত সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জহির উদ্দিন স্বপন ও সাবেক সংসদ সদস্য সর্দার সাখাওয়াত হোসেন বকুলকে সবুজ সংকেত দিয়েছেন। অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনে তাদের নির্বাচনী এলাকায় মেয়রপ্রার্থী দেয়ার আগে মতামতও নেয়া হয়েছে। সামনের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও সংস্কারপন্থী হিসেবে যারা দলের বাইরে রয়েছেন তাদেরকেও কাউন্সিলের আগে দলে ফিরিয়ে আনার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

এছাড়া দেশের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে বিএনপির কয়েক নেতা ও বুদ্ধিজীবীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক জানান, আমাদের কাজ হচ্ছে, সরকার যে সব ভুল-ত্র“টি করছে, তা বিভিন্ন পেশার মানুষের সঙ্গে শেয়ার করা। এসব পেশার মানুষরাও যাতে সরকারের ভুল-ভ্রান্তিগুলো সঠিকভাবে তাদের নিজ নিজ পেশার মানুষদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন। কখনও কখনও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করিয়ে দেয়া হবে।

দলীয় সূত্র জানায়, বিএনপির দাবির পক্ষে সরকারবিরোধী যে কোনো কর্মসূচিতে দেশের অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন করতে কাজ করছে দলের কয়েকজন নেতা। বিএনপির টার্গেট হচ্ছে, ৫ জানুয়ারি ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপির ডাকে যেভাবে ভোট বর্জন করেছিল সামনের আন্দোলনেও যেন তারা একযোগ হয়ে যে কোনো কর্মসূচি সফল করার কাজটি করে।

তবে দল গোছানোর দিকে নজর দিলেও জোটের বিতর্কিত শরিক জামায়াতকে মাইনাস করার পক্ষে দলের হাইকমান্ড। ইতিমধ্যে জোটের শরিক এ দলটিকে এড়িয়ে চলছে বিএনপি। ৫ জানুয়ারি পল্টনের সমাবেশে জামায়াতের কারণেই জোটের অন্যান্য শরিক দলের শীর্ষ নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এছাড়া ৭ জানুয়ারি হরতালের দিনে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় বিএনপি নেতাদের যোগদান, পৌর নির্বাচনে কোনো ছাড় না দেয়া সবই ছিল জামায়াত এড়িয়ে চলার কৌশল। ভারত, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোকেও এ বার্তা পৌঁছে দেয়া হয়েছে। ৫ জানুয়ারি সমাবেশে ভারতকে ইঙ্গিত করে খালেদা জিয়া বলেছেন, দেশের মাটি অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। দলের এমন মনোভাবে ২০ দলীয় জোট ছেড়ে জামায়াত যদি চলেও যায়, সেক্ষেত্রে কোনো বাধা দেবে না বিএনপির হাইকমান্ড। দলটি এ মুহূর্তে জামায়াতকে ঘোষণা দিয়ে ছাড়ার পক্ষে নয়। বিষয়টি বিদেশী কূটনীতিকদেরও জানানো হয়েছে। তবে সরকার যদি জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে, সেক্ষেত্রে তাদের ছাড়ার ঘোষণা দিতে মুহূর্তের জন্যও বিলম্ব করবে না দলটি।

ভারত মনে করে জামায়াতের কারণেই বিএনপি ভারতবিমুখ। ভারতের আমন্ত্রণে ২০১২ সালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দিল্লি সফরের মধ্য দিয়ে দলটির সঙ্গে দিল্লির নীতিনির্ধারকদের সুসম্পর্ক গড়ে উঠলেও জামায়াতের কারণেই তাতে আবার ভাটা পড়ে। বিশেষ করে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে ভারত এ প্রশ্নের সামনে দাঁড়ায়, তারা কার পক্ষে থাকবে? নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়া বিএনপি জোটের পক্ষে, নাকি নির্বাচনে যাওয়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের? কট্টরপন্থী জামায়াতের কারণেই সে সময় ভারত আওয়ামী লীগের পক্ষ নিয়েছিল। তৎকালীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ তার ‘দ্য আদার সাইড অব দ্য মাউন্টেইন’ গ্রন্থে এ বিষয়সহ তার দায়িত্ব পালনের সময়ের বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেছেন।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক

রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন

আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন

জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক

অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন

  • হাসিনার পতনে জাতির মনোজগত পরিবর্তন হয়েছে, নতুন রাজনীতি হতে হবে স্বচ্ছ: আমীর খসরু
  • বগুড়ায় হাসিনা-কাদেরের বিরুদ্ধে আরও এক মামলা
  • ১৭ বছর পর সচল হলো আবদুল আউয়াল মিন্টুর ব্যাংক হিসাব
  • বিএনপি ও সমমনা দলের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
  • বিকেলে বাসায় ফিরবেন খালেদা জিয়া
  • খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে দেশের গণতন্ত্র মুক্তি পাবে : এ্যানী
  • রায়পুরায়  বিএনপির প্রায় ১০০ নেতা কর্মী আ’লীগে যোগদান
  • বিএনপির আন্দোলন ভুয়া, তারেক রহমানের নেতৃত্বে আতঙ্কিত: ওবায়দুল কাদের
  • খালেদা জিয়ার ৩ রোগ বড় সংকট : চিকিৎসকরা
  • মুক্তিযুদ্ধের নামে বিএনপি ভাওতাবাজি করে : ওবায়দুল কাদের
  • দেশের মানুষ ঈদ করতে পারেননি
  • বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে রদবদল