শনিবার, নভেম্বর ২, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

বিএনপির রাজনীতি কথায়?

বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি তারেক রহমানের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, দলীয় চেয়ারপারসনের দেশের বাইরে অবস্থান, দলের দ্বিতীয় কর্তাব্যক্তি কারাগারে, সমশের মবিনের পদত্যাগ, নেতাকর্মীদের নামে মামলা কিংবা রাজনৈতিক ‘খেলা’, সব নিয়ে ‘টালমাটাল’ পরিস্থিতিতে বিএনপির রাজনীতি। এর মধ্যেই গত শনিবার মধ্যরাত থেকে বুধবার পর্যন্ত পাঁচ হাজারেরও বেশি বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। এ নিয়ে এখন ‘বিপাকে’ রয়েছে বিএনপি।

এই সময়ে আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপির ‘অস্তিত্ব’ কিংবা ‘ভাঙন’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আর বিএনপির অভিযোগ, সরকার দল ভাঙতে চাচ্ছে। দৃশ্যমান এসব বিষয় কি বিএনপির অভিযোগের সত্যতা নির্ধারণ করতে যাচ্ছে? তবে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিএনপি ভাঙার চেষ্টায় সরকার নেই। অভ্যন্তরীণ কোন্দলেই বিএনপি ভেঙে যাবে। আর আটকের বিসয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য ‘বিএনপি-জামায়াত-শিবির বলে কোনো কথা নয়, রুটিন মাফিক সারা দেশে অপরাধীদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।’

গত কয়েকদিন জেলা-উপজেলা পর্যায়ের বিএনপি-জামায়াতের সাত হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কোনো কোনো জেলায় অভিযান চালাচ্ছে যৌথ বাহিনী। চট্টগ্রাম, গাজীপুরসহ কয়েকটি জেলায় পুলিশ-র‌্যাবের পাশাপাশি বিজিবির সদস্যরা মাঠে রয়েছেন। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দর, বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন, লঞ্চঘাটসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ঘিরে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ৩২টি জেলা ছাড়াও পাঁচটি মেট্রোপলিটন এলাকায় অভিযান চলছে। বিভিন্ন বস্তি, আবাসিক হোটেল, মাদ্রাসা, মেসে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনী নজরদারি রাখছে। অভিযানে অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধারের বিষয়টিও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

দুই বিদেশি হত্যা, হোসেনী দালানে গ্রেনেড হামলা, জাগৃতি প্রকাশনীর কর্ণধার ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা ও শুদ্ধস্বরের স্বত্বাধিকারী আহমেদুর রশীদ টুটুলসহ তিনজনের ওপর হামলার পরপরই দেশজুড়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থান নেয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তর থেকে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদারের কথাও বলা হয়েছে।

গত দুই সপ্তাহে সারা দেশে পুলিশ ও যৌথ বাহিনী বিশেষ অভিযান চালায়। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের সাত হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে এ সময় আটক করা হয় বলে জানা গেছে। গত শনিবার মধ্যরাত থেকে গতকাল পর্যন্তই গ্রেপ্তার হয় পাঁচ হাজারেরও বেশি। কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীদেরই শুধু নয়, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ওয়ার্ড এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, বিএনপি ও জোটকে নিশ্চিহ্ন করার জন্যই নতুন এই গ্রেপ্তার অভিযান। জোটের নেতাকর্মীরা স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতে পারছে না।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ‘বিএনপি-জামায়াত নয়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নাশকতাকারীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’

এর মধ্যেই রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। এ নিয়ে একই অভিযোগে দায়ের হওয়া দুটি মামলায় তারেকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলো।

গত ২৮ অক্টোবর দল ও রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দেন খালেদা জিয়ার পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা শমসের মবিন চৌধুরী। এসময়ে এসে তার পদত্যাগ নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন ওঠে। যদিও তিনি দাবি করেছেন, ‘রাজনৈতিক বা অন্য কোনও চাপে নয়, একান্ত শারীরিক অসুস্থতার কারণেই তিনি দল থেকে পদত্যাগ করেছেন।’

গত মঙ্গলবার বিএনপি ভারপ্রাপ্ত সহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আত্মসমর্পণ করার পর জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে হাকিম আদালত। নির্বাচনের বর্ষপূর্তি ঘিরে বিএনপির আন্দোলনের মধ্যে জানুয়ারিতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর সাত মামলায় ছয় মাস কারাগারে ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফখরুল। এর বাইরে আরো অনেক কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মী কারাগারে রয়েছেন। পলাতক রয়েছেন এমন নেতা-কর্মীর সংখ্যাও কম নয়।

বিএনপির কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক পরিস্তিতির যখন এই হাল, তখন আওয়ামী লীগের নেতাদের বক্তব্য আসলে কী প্রকাশ করে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মন্তব্য, ‘দশম সংসদ নির্বাচনের মতো একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনও যদি বিএনপি বর্জন করে, তাহলে দলটি অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে।’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সমশের মবিন চৌধুরীর রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণাকে দলটির ‘নেতিবাচক রাজনীতির হতাশাব্যঞ্জক বহিঃপ্রকাশ’ বলেছেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘এটি বিএনপির অভ্যন্তরীণ কলহের করুণ পরিণতি।’ আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, আরও অনেকেই ওই দল ছেড়ে বেরিয়ে আসবেন বলে তার বিশ্বাস।

তবে বিএনপি পক্ষ থেকে বরাবরই অভিযোগ করে আসা হচ্ছে যে, সরকার স্বস্তিতে থাকার জন্যই বিএনপির মধ্যে ভাঙন সৃষ্টি করতে চায়। দলের চেয়ারপারসনও চলতি বছরের মাঝামাঝিতে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশে এখনও সবচেয়ে জনপ্রিয় দল হচ্ছে বিএনপি। সেজন্য একে শেষ করতে তারা (সরকার) উঠে-পড়ে লেগেছে।’

৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে আসা বিএনপি ‘নিরপেক্ষ’ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবিতে সংলাপ আহ্বান করে করেন বিএনপির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন। দেড় মাসের বেশি সময় ধরে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপিনেত্রী গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে ফের আশা প্রকাশ করেন, ‘সরকার শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে দেশের এই ক্রান্তিকাল ও সঙ্কটজনক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে গণতন্ত্র বিকাশের ক্ষেত্রকে সংকোচন না করে কর্তৃত্ববাদী মনোভাব থেকে সরে এসে একটি জাতীয় সংলাপের সূচনার পরিবেশকে উন্মুক্ত করবে।’

সংলাপের বিষয়টিকে নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছন, ‘যার হাতে মানুষ পোড়ে, তার সঙ্গে সংলাপ নয়।’

২১০৩ ও ২০১৪ সালে সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের টানা হরতাল-অবরোধ ডাকার পর সারা দেশে সহিংসতা ও নাশকতার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় ২০ দলীয় জোটের হাজার হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়। কেন্দ্রীয়সহ তৃণমূলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যেতে হয়। ওই হরতাল-অবরোধ কোনো রকম ঘোষণা ছাড়াই গত বছর মার্চ মাসে বন্ধ হয়ে যায়। যদিও বিএনপি নেতাদের দাবি অবরোধ এখনো চলছে।

বিএনপির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী ড. মিজানুর রহমান শেলী বলেন, ‘গত জাতীয় নির্বাচনে অংশ না নেওয়া এবং আন্দোলনে সফল না হওয়ায় বড় একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে একটা ভাটা চলে আসছে। এছাড়া বর্তমানে দলটির শীর্ষ নেতারা চিকিৎসার জন্য বিদেশে অবস্থান করছেন। কবে ফিরে আসবেন নেতাকর্মীদের কাছে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। এ অবস্থায় সাংগঠনিক দুর্বলতা কীভাবে কাটানো যায় সেটার জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে দলের শীর্ষ নেতাদের।’

তবে বিএনপি নেতারা বলে আসছেন গণতন্ত্র উদ্ধারের জন্য তাদের আন্দোলন চলছে এবং চলবে। বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু বলেন ‘বিএনপি এখনও আন্দোলনের মধ্যেই আছে। আন্দোলন সফল না হওয়া পর্যন্ত চলবে। আর এর জন্য আমাদের আন্দোলন আরো কঠোর হবে।’

তবে সব কিছুই দেশের অবস্থার উপর নির্ভর করবে বলে জানান তিনি।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক

রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন

আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন

জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক

অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন

  • হাসিনার পতনে জাতির মনোজগত পরিবর্তন হয়েছে, নতুন রাজনীতি হতে হবে স্বচ্ছ: আমীর খসরু
  • বগুড়ায় হাসিনা-কাদেরের বিরুদ্ধে আরও এক মামলা
  • ১৭ বছর পর সচল হলো আবদুল আউয়াল মিন্টুর ব্যাংক হিসাব
  • বিএনপি ও সমমনা দলের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
  • বিকেলে বাসায় ফিরবেন খালেদা জিয়া
  • খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে দেশের গণতন্ত্র মুক্তি পাবে : এ্যানী
  • রায়পুরায়  বিএনপির প্রায় ১০০ নেতা কর্মী আ’লীগে যোগদান
  • বিএনপির আন্দোলন ভুয়া, তারেক রহমানের নেতৃত্বে আতঙ্কিত: ওবায়দুল কাদের
  • খালেদা জিয়ার ৩ রোগ বড় সংকট : চিকিৎসকরা
  • মুক্তিযুদ্ধের নামে বিএনপি ভাওতাবাজি করে : ওবায়দুল কাদের
  • দেশের মানুষ ঈদ করতে পারেননি
  • বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে রদবদল