বিশ্বনাথ বসু অভিনয় যেমন ভালোবাসেন তেমনি আবার…
হাস্যরস দিয়ে দুই বাংলার দর্শকের মন জয় করা অভিনেতার নাম বিশ্বনাথ বসু। শুধু হাসির অভিনয়ই নয়, সিরিয়াস অভিনয়েও দক্ষতার ছাপ রেখেছেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমার প্রত্যন্ত গ্রামে আড়বালিয়ার এক বনেদি পরিবার থেকে উঠে এসেছেন বিশ্বনাথ। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজ টলিউড সাম্রাজ্যে আধিপত্যও বিস্তার করে নিয়েছেন। তবে সাফ জানিয়ে দিলেন তিনি, ‘আভিজাত্য, বনেদিয়ানা এসব আমাদের পরিবারের গর্ব ঠিকই। তবে জন্মের পর থেকে দেখছি, নামেই তালপুকুর, ঘটি ডোবে না। কিন্তু বনেদি ব্যাপারখানা সব সময় বজায় রাখার চেষ্টা করে আমাদের পরিবার।’
অনেকটা স্মৃতিচারণের ঢঙে বিশ্বনাথ বললেন, ‘ছোট থেকে আমি বড় হয়ে উঠেছি আমাদের গ্রামে। সেই বনেদিয়ানার ঘেরাটোপে। যেখানে বিনোদনের মাধ্যম বলতে ছিল একটা সাদাকালো টেলিভিশন সেট। আর বাইরের কাজ বলতে ছিল, প্রতি সপ্তাহে নিয়ম করে রেশন ধরা আর কেরোসিন তেলের দোকানে গিয়ে তেল তোলার জন্য লাইন দেওয়া। ফলে আমাকে ৮ থেকে ১০ বছর বয়সেই কলকাতা টানত। এর পর বাবার কাজের সূত্রে ১৯৯৬ সালে কলকাতাসংলগ্ন ব্যারাকপুরে চলে আসি। তার পর ২০০২ সালে কলকাতার আরো কাছে বাগুইআঁটিতে চলে আসি। ফলে টলিপাড়ার সঙ্গে যোগাযোগ করার রাস্তাটা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়।’
অভিনয়ের প্রতি ঝোঁক ছিল বিশ্বনাথের ছোট বয়স থেকেই। ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের পোকা মাথার মধ্যে কিলবিল করত তাঁর। বললেন, ‘গ্রামে স্কুলের নাটকে বেশ কয়েকবার অভিনয়ও করেছি। তবে কিশোর বয়সে আমার কাছে অভিনয় মানেই ছিল একমাত্র মিঠুন চক্রবর্তী। মিঠুনের মতো পোশাক-আশাক আর মিঠুনের মতো চুলের স্টাইল করার কথাই শুধু ভাবতাম। এর পর তো কলকাতায় এসে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিনেমা নিয়ে পড়াশোনা করলাম। তার পর অভিনয়ের জন্য রীতিমতো ফিল্মিপাড়ায় দরজায় দরজায় ঘুরেছি। প্রথম দিকে কেউই পাত্তা দেয়নি। সোজাসাপ্টা আমাকে রিজেক্ট করে দিয়েছেন। কিন্তু আমি ছিলাম দৃঢ়চেতা। ভেবেই নিয়েছিলাম, সিনেমা, সিরিয়ালে ঠাঁই না পেলে নাটক করব, আর তা না হলে যাত্রা করব। আর যদি সেটাও ভাগ্যে না হয়, তাহলে বারে গান গেয়ে রোজগার করব। ছোট থেকেই কপি করে গান গাইতে পারতাম। ফলে সেই অ্যাডভান্টেজটা আমার মধ্যে ছিল।’
তবে সে পথে যেতে হয়নি বিশ্বনাথের। নিজেই বলেছেন, ‘আমার ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয় আমার প্রতি। ফিল্মি ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকের সাহায্য পেয়েছি পরবর্তীকালে। যার মধ্যে প্রথমেই নাম করতে হয় অভিনেতা শুভাশিস মুখোপাধ্যায়ের। উনার হাত ধরেই আমার এই ইন্ডাস্ট্রিতে আসা। এর পরেই অভিনেতা খরাজ মুখোপাধ্যায়ের নাম করতে হবে। খরাজদা আমাকে শিখিয়েছেন, কীভাবে অভিনয়টা করতে হবে। তবে হ্যাঁ, আমি খাওয়া-দাওয়া ছাড়া আর সব ব্যাপারেই অত্যন্ত নিষ্ঠাবান। লড়াই ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পাত্র নই।’
আজ পর্দায় নিজের নাম, পোস্টারে নিজের ছবি থাকার মতো সব সাধ পূরণ হয়ে গেছে বিশ্বনাথ বসুর। সে সঙ্গে আজ ইচ্ছাটাও পাল্টে গেছে তাঁর। জানিয়েছেন, এখন তাঁর লক্ষ্য সর্বভারতীয় স্তরে প্রতিষ্ঠিত হওয়া। তার মানে টলিউড ছাড়িয়ে এখন বলিউডে সাম্রাজ্য বিস্তার করতে চান বিশ্বনাথ। বললেন, এরই মধ্যে দুটো হিন্দি ছবি করে ফেলেছেন তিনি। একটি ‘কোয়েলাঞ্চল’, অন্যটি ‘তেরে আনে সে’। যদিও ‘তেরে আনে সে’ ছবিটি এখনো মুক্তি পায়নি। তবে বিশ্বনাথ নিশ্চিত, আগামী দিনে মুম্বাইয়ের বলিউডে তিনি আরো কাজ পাবেনই। প্রয়োজনে ভালো অফার পেলে পাকাপাকিভাবে বলিউডে চলে যেতেও আপত্তি নেই তাঁর। তবে বিশ্বনাথের আজো পূরণ না হওয়া স্বপ্ন একটাই তা হলো, পরেশ রাওয়ালের সঙ্গে অভিনয় করা। বললেন, ‘আমি যে দু-একজন অভিনেতাকে অনুসরণ করি তাঁরা হলেন টম হ্যাঙ্কস, আল পাচিনো আর পরেশ রাওয়াল। টালিগঞ্জের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে বিশ্বনাথের প্রিয় অভিনেতা বলতে তুলসী চক্রবর্তী। আর হালফিলের মধ্যে রয়েছেন পরান বন্দ্যোপাধ্যায় ও কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়।’
তবে অভিনয়কে যেমন ভালোবাসেন, তেমনি খেতেও ভীষণ ভালোবাসেন বিশ্বনাথ। বাঙালি খাবারই তাঁর অন্যতম পছন্দ। বললেন, শুক্তো, ডাল, বড়ির ঝোল, খাসির মাংস, মাছ, আলু ভাজা, বেগুন ভাজা যা দেবেন খেয়ে ফেলবেন। অবশ্য চায়নিজ খাবার খেতেও পছন্দ করেন বিশ্বনাথ। আর খাওয়া-দাওয়ার পাশাপাশি আদি ও অকৃত্রিম বাঙালির মতো ধুতি, পাজামা আর পাঞ্জাবি পরতেও ভীষণ ভালোবাসেন বিশ্বনাথ। বিশেষ করে সাদার ওপর সাদা কাজ করা পাঞ্জাবি তো তাঁর ভীষণ প্রিয়। তবে ধুতি কিংবা পাজামা, পাঞ্জাবির পাশাপাশি দামি স্যুট পরতেও ভালোবাসেন বিশ্বনাথ।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সমুদ্র পাড়ে দুর্গারূপে নওশাবা
শুধু ঈদ কিংবা পূজা নয়, বিশেষ ধর্মীয় দিন উপলক্ষে ফটোশুটেবিস্তারিত পড়ুন
শুল্কমুক্ত গাড়ি খালাস করেছেন সাকিব-ফেরদৌস, পারেননি সুমনসহ অনেকে
আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের জন্য আমদানি করাবিস্তারিত পড়ুন
আলোচিত নায়িকা পরীমনির পরিবার সম্পর্কে এই তথ্যগুলো জানতেন?
গভীর রাতে সাভারের বোট ক্লাবে গিয়ে যৌন হেনস্তা ও মারধরেরবিস্তারিত পড়ুন