বিশ্বের উল্লেখযোগ্য যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া
আধুনিক সভ্যতার পাশাপাশি আছে যুদ্ধ-সংঘাতের মতো নানা কলঙ্কজনক অধ্যায়। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সময়ে আধিপত্য বিস্তারের লড়াই আজ ইতিহাস হলেও; বিশেষ কোনো উপলক্ষে সামনে চলে আসে কালো সেই অধ্যায়গুলো। আর এসব কলঙ্কমোচনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বিভিন্ন সময়ে দেশে দেশে গঠিত হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বিশ্বের উল্লেখযোগ্য যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়ার কথা জানাচ্ছেন রিয়াদুল ইসলাম।
১৯৯২ সালে সাবেক যুগোস্লোভিয়ার অন্যতম প্রজাতন্ত্র বসনিয়া স্বাধীনতা ঘোষণা করলে বসনীয় মুসলমান, ক্রোয়েশীয় এবং সার্বিয়দের মধ্যে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত চলা এ যুদ্ধে মারা যায় ১ লাখেরও বেশি মানুষ। এর মধ্যে স্রেব্রেনিৎসা গণহত্যায় মারা গিয়েছিলেন নারী ও শিশুসহ ৮ হাজার বসনীয়।
এর প্রায় ১৭ বছর পর ২০১২ সালের ডিসেম্বরে এই গণহত্যার বিচার শুরু হয়। বসনীদের গণহত্যার সঙ্গে জড়িত থাকায় তৎকালীন সার্ব সেনা কর্মকর্তা জাদ্রাভকো তোলিমিরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন হেগের যুগোশ্লোভিয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। সে বছর একই আদালতে ২০১২ সালে আরেক বসনীয় সর্বা সেনা কমান্ডার রাতকো ম্লাদিচের বিচারকাজ শুরু হয়।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত প্রতিষ্ঠায় পথ প্রদর্শকের ভূমিকা পালন করে নুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনাল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে মিত্রপক্ষের উদ্যোগে ১৯৪৫ সালের অক্টোবরে জার্মানির নুরেমবার্গে প্রতিষ্ঠা করা হয় এই ট্রাব্যুনাল।
এর পরবর্তী এক বছরের মধ্যে পোল্যান্ডের অশউইৎজ ক্যাম্পে গণহত্যা ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন অন্যান্য মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকায় নাৎসী বাহিনীর ১২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৪ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। তবে নাৎসী বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন জার্মান চ্যান্সেলর অডলফ হিটলারের খোজ পাওয়া না যাওয়ায় তাকে বিচারের মুখোমুখি করা যায়নি। এখনো জার্মানিতে নাৎসীদের বিচারকাজ চলছে।
সবশষে এ বছর জুলাইতে জার্মানির একটি আদালত নাৎসী বাহিনীকে সহযোগিতা করায় ৯০ বছর বয়সী অশউইৎজ ক্যাম্পের সাবেক কর্মচারী অস্কার গ্রোয়েনিং-কে ৪ বছরের দণ্ড দেন।
অনেকটা নুরেবার্গের পথ অনুসরণ করেই ১৯৪৬ সালের এপ্রিলে জাপানে গঠিত হয় টোকিও যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল। জাপান সাম্রাজ্যের নেতাদের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে এ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়। এতে ৩ ভাগে প্রায় ৬ হাজার জাপানি নাগরিকের বিচারকাজ চলে। এর মধ্যে ১শ’ ৪৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫শ’ ৪ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
১৯৭৫ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত কম্বোডিয়ায় খেমারুজ শাসনামলে ভিয়েতনামের জনগণ ও মুসলিমদের গণহত্যা, ধর্ষণসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরু হয় ২০১২ সালে। জাতিসংঘ সমর্থিত কম্বোডিয়ার একটি আদালতে এরই মধ্যে খেমারুজ নেতা ডাচ, নুওন চে ও খিউ সাম্পানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
এছাড়া রুয়ান্ডা, সিয়েরা লিওন, লাইবেরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের বিতর্কিত নেতারা মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন