বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস হাত ধোন, রোগমুক্ত থাকুন
১৫ অক্টোবর ‘বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস’। সারা বিশ্বের মতো আমাদের দেশেও এ দিবসটি বেশ ভালোভাবেই পালিত হয়। এ বছরও দিবসটি পালিত হচ্ছে। হাত ধোয়ার প্রয়োজনীয়তা লিখে শেষ করা যাবে না। হাত ধোয়া নিয়ে কম গবেষণা হয়নি।
আমেরিকার একদল গবেষক ১৯৬০ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত হাত ধোয়ার ওপর ৬০টি গবেষণা একত্র করে দেখেছে, বিশ্বব্যাপী মাত্র ৬৭ শতাংশ লোক শৌচকর্মের পর হাত ধোয়। মেয়েদের মধ্যে এ হার বেশি—৭৫ শতাংশ, আর ছেলেদের ৫৮ শতাংশ।
হাত ধোয়া নিয়ে এত চিন্তা কেন? আমেরিকান সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের (সিডিসি) গবেষণায় দেখা গেছে, আমেরিকার মতো সভ্য দেশে হাত না ধোয়ার কারণে প্রতিবছর প্রায় এক লাখ লোক বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। হাত না ধোয়ার কারণে তাদের প্রতিবছর চিকিৎসা খাতে খরচ হয় ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। আমাদের টাকায় কয়েকশ কোটি টাকা। সংস্থাটি হাত ধোয়াকে বলেছে, রোগ প্রতিরোধের সর্বোত্তম হাতিয়ার। এতে কোনো খরচ হয় না। শুধু ইচ্ছাশক্তিই যথেষ্ট। বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, শুধু হাত ধুলে পেটের পীড়া, যেমন—ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয়, টাইফয়েড, কৃমির আক্রমণ কমে ৩৯ ভাগ। এ ছাড়া শ্বাসতন্ত্রের রোগ-বালাই, যেমন—ইনফ্লুয়েঞ্জা, কাশি, গলায় ক্ষত, কানের ইনফেকশন কমে ৫০ শতাংশ।
সিডিসির অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, খাবার ও পানির মাধ্যমে যেসব রোগ ছড়ায়, তার প্রতি চারজনের একজন আক্রান্ত হন শুধু হাত না ধোয়ার কারণে। শুধু খাবার আগে ও শৌচকর্মের পর হাত ধুলে মারাত্মক প্রাণহারী ২০টি রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। সবচেয়ে মারাত্মক হলো আমাদের দেশের পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যুর অন্যতম পাঁচটি কারণের একটি হলো ডায়রিয়া। হাত ধুলে এ রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় সহজেই।
হাত তো তাহলে ধোবেন। হাত ধোবেন শৌচকর্মের পর, খাবারের আগে, হাঁচি-কাশির পর, পশুপাখি ধরলে, ময়লা-আবর্জনা ঘাঁটলে, অসুস্থ রোগীর সেবাযত্নের আগে ও পরে, খাবার রান্না করার আগে-পরে, চোখে হাত দেওয়ার আগে, হাতে মাটি লাগলে। অনেক মা বাচ্চাদের মলকে খারাপ মনে করেন না। এটা খুবই ভুল একটি কথা। বাচ্চার ডায়াপার, মল পরিষ্কারের পর অবশ্যই ভালোভাবে হাত ধুতে হবে।
নবজাতককে হাত না ধুয়ে কোলে নিলে তার ডায়রিয়া, শ্বাসতন্ত্রের ইনফেকশন, সেপসিসের মতো মারাত্মক রোগ হতে পারে। তাই সাবধান। বাইরে খেলাধুলার পর শিশুদের হাত ধুতে উৎসাহিত করুন। পানিতে হাত ধুলে ময়লা চলে যাবে ঠিক, কিন্তু তা জীবাণুমুক্ত হবে না। তাই প্রথমে পানিতে হাত ভালো করে ভিজিয়ে নিন। ভালো করে সাবান লাগান। ঘষে ফেনা তুলুন। শুধু হাতের সামনের অংশ পরিষ্কার করবেন না। হাতের পেছনের অংশ, দুই আঙুলের মাঝের অংশ, নখের নিচের অংশ ভালো করে পরিষ্কার করুন। সাবান হাতে কতক্ষণ রাখবেন, কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড। এবার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। তোয়ালে বা টিস্যু দিয়ে ভালো করে হাত শুকিয়ে নিন। হাত মোছার জন্য অন্যের ব্যবহৃত তোয়ালে ব্যবহার করবেন না।
অনেকে মনে করেন, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান হাত ধোয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো। এটি ভুল ধারণা। এটি উপকারের চেয়ে ক্ষতি করে বেশি। এটি ব্যবহারে ব্যাকটেরিয়াগুলো বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্ট হয়ে যাবে। ফলে আমাদের রোগবালাইয়ে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করবে না। হাত ধোয়ার জন্য সাবান-পানিই সবচেয়ে ভালো। বাইরে বেড়াতে গেলে সাবান-পানি না পেলে অ্যালকোহলযুক্ত সেনিটাইজার ব্যবহার করতে পারেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
উপদেষ্টা: নদী বাঁচাতে প্রয়োজনে দু–চারটা শিল্পকারখানা বন্ধ করে দেব
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন,বিস্তারিত পড়ুন
গভর্নর: রিজার্ভ এখন ২০ বিলিয়নের ওপরে
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, “গত ৫বিস্তারিত পড়ুন
৩১ ডিসেম্বর প্রকাশ হবে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’
আগামী ৩১ ডিসেম্বর ‘‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’’ প্রকাশ করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রবিস্তারিত পড়ুন