বিষদাঁত একে একে ভেঙে দিচ্ছি: শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী তাদের পরাজয়কে ভোলে নাই। তাদের দোসর, এজেন্ট এদেশে এখনও আছে। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করতে চায়, অর্থনৈতিক উন্নতিটাকে ধ্বংস করতে চায়। তাদের ষড়যন্ত্র চলছে, চলবে। তবে বাংলাদেশে এই ষড়যন্ত্র করে তারা আর কিছু করতে পারবে না। তাদের সেই বিষদাঁত একে একে ভেঙে দিচ্ছি, ভেঙে দেব।
সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে এগিয়ে যাওয়ার মনোভাব ধরে রাখার তাগিদ দিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ”এই ষড়যন্ত্র ভেদ করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে, বিচার হবে এবং বিচার চলবে। কোনো শক্তি নেই, এই বিচার বন্ধ করে। লাখো শহীদের রক্তের ঋণ আমাদের শোধ করতে হবে।”
যুদ্ধাপরাধীদের প্রতি ঘৃণা জানাতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ”বাংলাদেশের কোনো মানুষ যদি যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করতে চায় তাদের ঘৃণা করবেন। তাদেরও বিচার যুদ্ধাপরাধীদের মত হবে। তারাও যুদ্ধাপরাধী।”
শ্রদ্ধা জানাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে যাওয়াকে ‘তামাশা’ বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার বিকালে ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় খালেদা জিয়াকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হাসিনা বলেন, ”বুদ্ধিজীবীদের যারা হত্যা করেছিল, তাদেরকে যে মন্ত্রী বানায় সে কোন মুখে শ্রদ্ধা জানাতে যায়? মানুষের সঙ্গে তামাশা করা ছাড়া আর কী?”
”উনি এটা করে কী বোঝাতে চেয়েছেন? কী নাটক করতে চেয়েছিলেন? উনি নটাঙকি ভালোই জানেন,” যোগ করেন তিনি।
যুদ্ধাপরাধী আলী আহসান মো. মুজাহিদ ও সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির কয়েক ঘণ্টা আগে খালেদা জিয়ার লন্ডন থেকে দেশে ফেরার বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ”যেই ফাঁসির ঘোষণা করা হলো, উনি লন্ডন থেকে ছুটে চলে এলেন। ভেবেছিলেন, আন্দোলন করে ফাঁসি বন্ধ করবেন।”
আলোচনা সভায় সাবেক সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ”একেক রাতে একশ করে সৈনিককে হত্য করেছে জিয়াউর রহমান; যারা মুক্তিযোদ্ধা। পাকিস্তান আমাদের বিজয়ের প্রতিশোধ নিয়েছে জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে। তার স্ত্রী একই কাজ করছেন।”
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরিকল্পিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, চিকিৎসক, শিল্পী, লেখক, সাংবাদিকসহ বহু খ্যাতিমান বাঙালিকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিজেদের পরাজয় নিশ্চিত জেনেই পাকিস্তানি বাহিনী ওই নিধনযজ্ঞ চালায়; তাদের উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতার পর যেন বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের এক দিন আগে বুদ্ধিজীবী হত্যায় প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করে রাজাকার, আলবদর ও আল শামস বাহিনীর সদস্যরা।
সেই ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে এ পর্যন্ত যে চারজনের সর্বোচ্চ সাজার রায় হয়েছে, তাদের মধ্যে একাত্তরের বদর কমান্ডার আলী আহসান মো. মুজহিদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে গত ২২ নভেম্বর; যিনি খালেদার মন্ত্রিসভায় ছিলেন।
যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীও ছিলেন খালেদা সরকারের মন্ত্রী। তার আপিলের রায় অপেক্ষমাণ রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ”যারা বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে, তাদেরকে যে মন্ত্রী বানায় সে কোন মুখে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। কিছু কিছু মুক্তিযোদ্ধাও তার সাথে যায়। তাদের লজ্জা থাকা উচিত। কোন মুখে যায়। নিজেদের যদি লজ্জা-শরম-ঘেন্না-পিত্তি থাকতো, তাহলে যেত না।”
আওয়ামী লীগ সভনেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন শহীদ বুদ্ধিজীবী চক্ষু বিশেষজ্ঞ আলীম চৌধুরীর কন্যা নুজহাত চৌধুরী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ও শেখ ফজলুল করিম সেলিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ আজিজ ও সাধারণ সম্পাদক এবং ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আখতারুজ্জামান, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও খাদ্য মন্ত্রী কামরুল ইসলাম প্রমুখ।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন