বিস্কুটের বাক্সে নার্সিংহোমের শিশু পাচার
অন্ধকার ঘুপচি ঘরে খাটের নিচে বিস্কুটের বাক্সে মিলল পাচার হতে যাওয়া তিন সদ্যোজাত। গ্রেফতার হলো পাচার চক্রের দুই মহিলা-সহ ৮ জন।ঘটনাটি পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার।
উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার বাগজোলা গ্রামের ‘সোহান’ নার্সিংহোম থেকে সোমবার রাতে এই তিন সদ্যোজাতকে উদ্ধার করে সিআইডি।যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে মঙ্গলবার সবাইকে আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিন সিআইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, ওদের বিস্কুটের বাক্সে তুলো-ব্যান্ডেজে মুড়ে রাখা হয়েছিল । চোখ পিটপিটটুকু দেখে বোঝা যাচ্ছিল, তিনটি সদ্যোজাতের দেহে তখনও প্রাণ আছে। উদ্ধারের স্থানটির চারপাশে পড়ে রয়েছে প্রসূতির বর্জ্য, রক্তমাখা গজ, ইঞ্জেকশনের বাতিল সিরিঞ্জ, আরও নানা আবর্জনা।
সিআইডি সূত্র জানায়, খবর আসছিল বাদুড়িয়ার ওই নার্সিংহোম থেকে শিশু পাচারের। সেই মতো নজরদারি শুরু হয়। এ চক্রে নাজমা নামে এক নারীর নাম জানতে পারেন তারা। এরপর নাজমাকে পাকড়াও করে তাকে সঙ্গে নিয়ে রাতে নার্সিংহোমে হাজির হন।
প্রাথমিক তল্লাশিতে সন্দেহজনক কিছু চোখে পড়েনি অফিসারদের। কিন্তু মাজেদা নামে চিকিৎসাধীন এক নারী অফিসারদের জানান, দুপুরের দিকে তিনি সন্তান প্রসব করেছিলেন। কিন্তু নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, মৃত সন্তান প্রসব হয়েছে। সন্তানের মৃতদেহ দেখতে চাইলেও দেখানো হয়নি।
এরপরে ফের তন্নতন্ন করে খোঁজ শুরু করে সিআইডি। একটি অন্ধকার স্যাঁতস্যাঁতে ঘরের তালা খুলে খাটের নীচে বিস্কুটের বাক্সে রাখা শিশু তিনটিকে খুঁজে পাওয়া যায়। তাদের একটি সন্তান মাজেদার। বাকি দু’টি শিশুর বাবা-মায়ের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। আপাতত তাদের বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে।
সিআইডি জানায়, চক্রের মূল হচ্ছে নাজমা ও সত্যজিৎ সিংহ। সত্যজিৎ একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চালায়। নার্সিংহোমের মালিক বাগবুল বৈদ্য, হাতুড়ে চিকিৎসক আমিরুল বিশ্বাস ছাড়াও এই চক্রে রয়েছে প্রভাত সরকার, ঝন্টু বিশ্বাস, আসাদুর জামান, উৎপলা ব্যাপারী। সকলেই ধরা পড়েছে। পাচার চক্রে সরকারি হাসপাতালের এক প্রাক্তন চিকিৎসকও জড়িত বলে জানিয়েছে সিআইডি ।
সিআইডি আরো জানায়, নাজমা বসিরহাটের গ্রামে গ্রামে ‘দাইমা’র কাজ করত। গর্ভধারণের পরেও যে সব গরিব পরিবারের নারীরা সন্তান চাইতেন না, তারাই হতো নাজমার মূল ‘টার্গেট’। বুঝিয়ে-সুঝিয়ে তাদের নার্সিংহোমে আনা হতো। সন্তান প্রসব করলে হাতে কিছু টাকা গুঁজে সন্তানের ‘দখল’ নিত নাজমারা।
এ ছাড়াও, অনেককে জানিয়ে দেওয়া হতো, মৃত শিশু প্রসব হয়েছে। কেউ মৃতদেহ ফেরত নিতে চাইলে নানা টালবাহানা করা হতো। কখনও বলা হতো, দেহ নিতে গেলে খরচ দিতে হবে। থানা-পুলিশের ঝামেলা হতে পারে। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষই মৃত সন্তানের সৎকারের ব্যবস্থা করবে বলে আশ্বস্ত করা হতো পরিবারকে।
ওই সব শিশুকেও দেশে-বিদেশে নিঃসন্তান দম্পতিদের কাছে ১-২ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হতো বলে জানিয়েছেন সিআইডির এক কর্তা। সম্প্রতি সাতটি সদ্যোজাতকে বিক্রি করা হয়েছে বলে জেরায় স্বীকার করেছে নাজমা।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পদ হারালেন গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলেরবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল গ্রেপ্তার
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে রাজধানীরবিস্তারিত পড়ুন