বীরের বেশে মায়ের কোলে ফিরলেন ক্রিকেটার মিরাজ
মেহেদী হাসান মিরাজ নামটা খুলনার কাছে নতুন নয়। নতুন তারকাও নন তিনি। ১২ বছর বয়স থেকে বাংলাদেশের বয়সভিত্তিব জাতীয় দলের জার্সি পরেন। ১৪ তে কিশোর তারকার প্রথম স্বীকৃতি। আর এই বছরের শুরুতে তো বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার পর তারকা খ্যাতিটা বেড়েছিল। কিন্তু কিছুদিন আগে বাড়ি থেকে ঢাকায় গিয়েছিলেন ঘরের তারকা হিসেবেই। কিন্তু সোমবার বাড়ি ফিরলেন দেশের নায়ক হয়ে। জাতীয় বীর হয়ে। ফিরলেন মমতাময়ী মায়ের বুকে। আরেকটু বাড়িয়ে বললে ফিরলেন আসলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক টেস্ট বিজয়ের মহানায়ক হিসেবে।
খুলনার খালিশপুরের বিআইডিসি সড়কের দক্ষিণ কাশিপুর এলাকায় মেহেদীদের বাস। ওটাকে শিল্প এলাকা বলা হয়। বরিশালে জন্ম। কিন্তু ১৬ বছর ধরে খুলনায় বসবাস। বাবা জালাল হোসেন। পেশায় ছিলেন ড্রাইভার। মা মিনারা বেগম গৃহিনী। ৩ বছরের আদরের ছোট বোন রুমানা আক্তার। ওই কাশিপুরে সাধারণ একটি দো চালা ঘরে মেহেদীদের বসবাস। যেখানে রবিবার বিকেল থেকে চলছে ঈদ আনন্দ!
ঈদ মানে তো খুশি। সেই খুশি মেহেদীর বাড়ি ও তার এলাকা থেকে মিলিয়ে যেতে সময় লাগবে। ১৯ বছরের ছেলেটি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সিরিজের দুই ম্যাচে ১৯ উইকেট নিয়েছেন। ১২৯ বছরের রেকর্ড ভেঙেছেন। দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিনে ইংলিশদের দ্বিথীয় ইনিংস ১৬৪ রান গুড়িয়ে দেওয়ার পথ নিয়েছেন ৬ উইকেট। ১০৮ রানের ঐতিহাসিক জয়ের ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন ম্যাচে ১২ উইকেট নিয়ে। সিরিজের সেরাও তিনি। দুই ম্যাচের সিরিজটা তার কীর্তিতে ১-১ এ ড্র। আন্তর্জাতিক অভিষেকেই যে এমন কীর্তির আর রেকর্ডের মেলা সাজিয়ে বসে সেই মেহেদী তো মহানায়কই!
তো খুলনার ছেলেটি সোমবার বাড়ি ফিরে দেখলেন তারই কীর্তিতে পুরো বদলে যাওয়া এলাকাকে। সেখানে তার অপেক্ষায় মানুষ আর মানুষ। এলাকায় ফিরতেই তাকে কাঁধে নিয়ে উন্মাতাল আনন্দ। আনন্দ মিছিল। রবিবার থেকেই তাদের ছোট্ট বাড়ির আঙিনায় বড় বড় মানুষের ঢল। সেই ঢল থামে না। পরিবার ক্লান্তির মাঝেও হাসিমুখে সবাইকে বরণ করেন। আর মেহেদীকে পেয়েই মায়ের বুকটা ভরে ওঠে পুরোপুরি। আনন্দাশ্রু তো মা-বোন-বাবার চোখ থেকে মেহেদীর চোখেও। বীর ছেলে তখন তো আর বিশাল হয়ে ওঠা কেউ না! ও যে সেই ছোট্টোখাট্টো ছেলেমানুষ মিরাজ। এটাই তো তার ডাকনাম। ওটাই ঘরের নাম। ওটাই আদরের ডাক। মিরাজের আগমণে ঘর-বাড়ি-এলাকা আলোকিত হয়ে ওঠে।
মেহেদীর আন্তর্জাতিক উত্থাণের সাথে মুস্তাফিজুর রহমানের অনেক মিল। গত বছর অভিষেক ওয়ানডে সিরিজে ভারতের বিপক্ষে ৩ ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়েছিলেন কাটার মাস্টার। ২ ম্যাচে ৫ উইকেট। ২ ম্যাচে সেরা খেলোয়াড়। ভারতকে ২-১ এ হারানো সিরিজের সেরা খেলোয়াড়ও হয়েছিলেন। সেই মুস্তাফিজ ইনজুরির কারণে এখন পূনর্বাসন প্রক্রিয়ায়। সোমবার সকালে মিরপুর স্টেডিয়ামে তার সাথেও দেখা হলে মেহেদীর। মেহেদীর কাঁধে তখন ব্যাগ। বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি। দুজন এক সাথে খেলেছেন বয়সভিত্তিক আসরে। কদিন পর বাংলাদেশের দুই বিস্ময় জাতীয় দলেও খেলবেন এক সাথে। বাড়ি ফেরার আগে মুস্তাফিজের কাছ থেকে নিশ্চয়ই এই স্টারডমের চাপের ব্যাপারে কিছু টিপস নিয়ে ফিরেছেন মেহেদী!
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন