বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

বুধবারই নান্টু প্রথম তার কলেজ অধ্যক্ষ সাহেবের মুখ দেখেছেন

রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার পুরান তাহিরপুর বিএম কারিগরি কলেজ থেকে এবার উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছেন নান্টু ইসলাম। কিন্তু নান্টু তার কলেজের অধ্যক্ষকে চিনতেন না। গতকাল বুধবারই নান্টু প্রথম তার কলেজ অধ্যক্ষর মুখ দেখেছেন। অধ্যক্ষ রেজাউল ইসলামের কক্ষে তার সামনেই এমন কথা বললেন নান্টু।

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রেজাউল ইসলাম অবশ্য এর প্রতিবাদ করলেন না। বললেন, এই কলেজ থেকে তিনি কোনো বেতন পান না। তাই অন্য একটি কলেজে শিক্ষকতা করেন। এজন্য এই কলেজে তার আসা হয় না।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, কলেজের একজন শিক্ষক ও একজন অফিস সহকারী ছাড়া তারা কাউকে চেনেন না।

দুর্গাপুরের প্রত্যন্ত এলাকার এই কলেজটি থেকে এবার ১৬ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। ফল প্রকাশ হলে ১০ শিক্ষার্থীকে মার্কশিটে পাস দেখানো হলেও অনলাইনে দেখানো হয় ফেল। পরে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ তোলেন, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তাদের ফলাফল ঠিক করে দেয়ার জন্য দুই লাখ টাকা উৎকোচ নিয়েছেন। কিন্তু তার চাহিদামতো তিন লাখ টাকা না দেয়ায় অনলাইনে তাদের পাস দেখানো হচ্ছে না।

শিক্ষার্থীদের এই সংবাদ সম্মেলনের খবর প্রকাশিত হলে পরদিনই তাদের অনলাইনেও পাস দেখানো হয়। শিক্ষাবোর্ডের এমন কাণ্ডে হইচই শুরু হয় বিভিন্ন মহলে। প্রশ্ন ওঠে কলেজটির শিক্ষকদের ভূমিকা নিয়েও।

এসব বিষয় তদন্ত করতে গতকাল বুধবার সকালে কলেজে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আনোয়ার সাদাত। সেখানে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদেরও ডাকা হয়। এ সময় ইউএনও, কলেজের শিক্ষক এবং সংবাদকর্মীদের সামনেই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, সারা বছরই বন্ধ থাকে এই কলেজ।

শিক্ষার্থীরা বলেছেন- তারা শুনেছেন, কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ শিক্ষকের সংখ্যা পাঁচজন। কিন্তু তারা শুধু একজন শিক্ষক ও অফিস সহকারীকে চেনেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকেও আগে কখনো দেখেননি। ইউএনওর আগমন উপলক্ষে বুধবারই প্রথম ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে তারা কলেজে দেখলেন।

কলেজ থেকে এ বছর এইচএসসি পাস করা ছাত্রী সুমাইয়া খাতুন বলেন, বছরে একদিনও ক্লাস হয় না কলেজে। কলেজের শ্রেণিকক্ষগুলো ভাড়া রয়েছে স্থানীয় আরেকজন কলেজ শিক্ষকের কাছে। তিনি মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সেখানে কোচিং করান। তাদের ফলাফল নিয়ে জটিলতা দেখা দিলে তারা বারবার কলেজে গিয়েও একদিনও শিক্ষকদের পাননি।

সুমাইয়া বলেন, কলেজের অফিস সহকারী সাহেব আলী আরেকটি স্কুলে চাকরি করেন। সেখানে গিয়ে তারা তাকে ফলাফল নিয়ে জটিলতার বিষয়টি জানান। ফলাফল ঠিক করতে ঢাকা যাওয়ার জন্য তারা অফিস সহকারীকে টাকাও দেন। অফিস সহকারী তাদের জানান, এই টাকা নিয়ে তিনি এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ঢাকায় শিক্ষাবোর্ডে গিয়েছিলেন। কিন্তু তারা এর সমাধান করতে পারেননি।

কলেজে ইউএনওর আগমনে সেখানে আশপাশের বাসিন্দারাও ভিড় জমান। এদের মধ্যে থেকে বাবর আলী শেখ ও সোলাইমান আলী নামে দুই ব্যক্তি জানালেন, অন্তত দুই বছর ধরে তারা কলেজটিতে কোনো ক্লাস চলতে দেখছেন না। কলেজের ক্লাসের বদলে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সেখানে কোচিং চলে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কলেজটিতে সেমিপাকা মোট চারটি শ্রেণিকক্ষ এবং একটি অফিসকক্ষ। এ দিনও কোনো ক্লাস চলছিল না কলেজে। দেখা যায়নি বর্তমান কোনো শিক্ষার্থীকেও। ব্যবহার না হওয়ায় কলেজের শ্রেণিকক্ষগুলোর বেঞ্চ এবং শিক্ষকদের বসার চেয়ারগুলো পোকায় খেয়েছে। সেসব একপাশে সরিয়ে রেখে কোচিং সেন্টারের পক্ষ থেকে আনা হয়েছে আলাদা বেঞ্চ ও চেয়ার।

কলেজের চারপাশে ঝোপঝাড় আর কলাগাছ। দুটি টয়লেট থাকলেও তাতে নেই কোনো দরজা। তবে কলেজের পতাকা ওঠানো বাঁশটি দেখা গেছে কাঁচা। সেটি দেখিয়ে অভিভাবক আবদুল মালেক বললেন, কলেজের ক্লাস না চলায় পতাকাও ওঠানো হয় না। ইউএনও আসার খবরে নতুন বাঁশ কেটে এনে পতাকা তোলা হয়েছে।

কলেজের ছাত্র শওকত হোসেন বললেন, কারিগরি হলেও কলেজে কোনো কম্পিউটার নেই। কলেজের কম্পিউটার রাখা আছে অফিস সহকারীর বাড়িতে। আলমারিও ছিল সেখানে। ইউএনওর আগমন উপলক্ষে আলমারিটি কলেজের অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে এখনো কম্পিউটার রয়েছে অফিস সহাকারীর বাড়িতে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ্য রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘কলেজে মূল্যবান জিনিস রাখলে চুরি হয়ে যায়। তাই সেগুলো অফিস সহকারীর বাড়িতে রাখা হয়।’ তিনি জানান, খাতা-কলমে কলেজে একজন নৈশ্য প্রহরী আছেন। কিন্তু বেতন না হওয়ার কারণে তিনিও যান না। নৈশ্য প্রহরীর মতো শিক্ষকরাও পেটের তাগিদে অন্য কোথাও কাজ করছেন।

কলেজে ক্লাস না চলার অভিযোগ স্বীকার করেছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। স্বীকার করেছেন শ্রেণিকক্ষ কোচিং সেন্টারকে ভাড়া দেয়ার বিষয়টিও। তবে তিনি দাবি করেছেন, পরিস্থিতির কারণেই এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠার ১৩ বছরেও কলেজটি এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষকরা বেতন-ভাতা পান না। তাই কেউ কলেজেও আসেন না। কোনো রকমে খাতা-কলমে প্রতিষ্ঠানটি চালু রাখা হয়েছে।

কলেজটির বিষয়ে তদন্তের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে চাননি ইউএনও আনোয়ার সাদাত। তবে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অশোক কুমার বিশ্বাস। তিনি বলেন, প্রত্যন্ত এলাকায় হওয়ায় এ ধরনের কলেজের ব্যাপারে খোঁজখবর পাওয়া যায় না। তবে এবার তারা এই কলেজটির ব্যাপারে খোঁজখবর নেবেন। খবর: ঢাকাটাইমস এর সৌজন্যে

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি: জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আল্টিমেটাম

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিগত ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেবিস্তারিত পড়ুন

সংঘর্ষের ঘটনায় রাবি কর্তৃপক্ষের মামলা, গ্রেপ্তার ১

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেবিস্তারিত পড়ুন

স্থানীয়দের সঙ্গে রাবি শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আহত ২০

বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গেবিস্তারিত পড়ুন

  • গোদাগাড়ী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জেলে
  • এবার রাজশাহীতে এবার রান্নাঘরে ১২৫ গোখরা
  • রাজশাহীতে ট্রেনের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু
  • থানায় আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটুনি, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ
  • রাজশাহীতে দেড় কেজি হেরোইনসহ দুই নারী গ্রেপ্তার
  • রাজশাহীতে ২য় বিয়ে করলেন মডেল রাউধার বাবা
  • মোটরসাইকেলে যাওয়ার পথে বজ্রপাতে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু
  • রাজশাহীতে ছেলের মাথায় রক্ত দেখে বাবার মৃত্যু
  • রাজশাহীতে কালবৈশাখীর হানা, জনদুর্ভোগ
  • নিহত আ’লীগ নেতার সই জাল করে ১৩ লাখ টাকা তুললেন বড় ভাই!
  • শিক্ষা সফরে ছাত্রীর সঙ্গে ছবি : শিক্ষকের জরিমানা