বৃষ্টি আরও ভোগাবে বাংলাদেশকে
এপ্রিলের অতিবৃষ্টিতে আগাম বন্যা আর হাওরে ফসলহানির পর চালের মূল্যবৃদ্ধি দেখেছে দেশ। মে মাসটি কেটেছে বৃষ্টি আর রোদের মিশেলে। জুনে বর্ষাকাল শুরু হওয়ার আগে আগে আবার বৃষ্টি। অতি বর্ষণে দেশের দুই প্রধান শহর ঢাকা, চট্টগ্রাম তলিয়ে যাচ্ছে যখন-তখন। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী গোটা বছরটাই বৃষ্টি ভোগাবে বাংলাদেশকে।
রবিবার রাত থেকে শুরু করে টানা ২৪ ঘণ্টার বৃষ্টিতে ঢাকা চলে গিয়েছিল পানির নিচে। নগরীর যে অংশে সচরাচর পানি ওঠে না, সেসব এলাকাতেও হাঁটুপানি জমে থাকার ছবি এসেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পরদিন বৃষ্টি থামলেও নিচু এলাকাগুলো তলিয়েই থাকে।
চট্টগ্রামের অবস্থা আরও খারাপ। কোমর সমান পানিতে তলিয়ে যায় নগরীর একটি বড় অংশ। কদিন আগেও ঘূর্ণিঝড় মোরার পর একই ধরনের ভোগান্তি দেখেছে বন্দরনগরী।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের রেকর্ড মতে গত ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টির হয়েছে সোমবার। ২০০৭ সালের ১১ জুন ১৫১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। আর ১২ জুন বৃষ্টি হয় ১৩৯ মিলিমিটার।
আবার সোমবার রাতের অতি বৃষ্টিতে পাহাড়ধসে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানে অন্তত ৯২ জনের মৃত্যু ঘটে।
এর আগে গত এপ্রিলে দেশে বৃষ্টি হয়েছে ৩৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এই মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৫,২৮৬ মিলিমিটার। কিন্তু হয়েছে ৭৬ শতাংশ বেশি। এই মাসে একবারই এর চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছিল, সেটা ১৯৮১ সালে।
মাঝে মে মাসে বৃষ্টিপাত ছিল অনেকটা স্বাভাবিক, বরং স্বাভাবিকের চেয়ে সামান্য কম। কিন্তু ‘এই সামান্য কম বৃষ্টি’ যেন জুনে আবার পুষিয়ে নিচ্ছে প্রকৃতি।
চলতি বছর এত বৃষ্টি কেন? আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এপ্রিলে কালবৈশাখী ঝড় স্বাভাবিক চিত্র হলেও এবার বৃষ্টি হচ্ছে মুষলধারে, যা সাধারণত বর্ষাকালে দেখা যায়। অনেক বছর পর এ ধরনের ভারী বর্ষণকে ‘ক্লাইমেট ভ্যারিয়েবিলি’বলছেন আবহাওয়াবিদরা। বঙ্গোপসাগরে উচ্চচাপ বলয় বেশি দুর্বল থাকায় পুবালি ও পশ্চিমা লঘুচাপের সক্রিয়তাকে অতি বর্ষণের কারণ দেখছেন তারা।
১২ জুন ঢাকায় ১৩৯ মিলিমিটার ছাড়াও ৩১ মে চট্টগ্রামে ১৭৭ মিলিমিটার, সীতাকুন্ডে ১৩৮ বৃষ্টি, রাঙ্গামাটি ৮৭ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুস সঙ্গে। তিনি বলেন, পশ্চিমা ও পুবালি লঘুচাপের সংমিশ্রণের ফলে জ্বলীয়বাষ্প বেশি সৃষ্টি হওয়ায় এবার বৃষ্টি বেশি হয়েছে। এই অবস্থা অবশ্য কয়েক বছর পর পরই হয়। ধারাবাহিক ভাবে বৃষ্টি কোন বছরে একটু বেশি বৃষ্টি হয়, কোন বছর একটু কম বৃষ্টি হয়।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদের বলেন, ‘গত বছর এল নিনোর প্রভাব ছিল আমাদের দেশে, সেটা জুন জুলাইয়ে ডিসলভ হয়ে যায়। গত এপ্রিল মাসে সেটা ট্রানজিকশন প্রিয়ড ছিল। ফলে পুবালী বায়ু ছিল শক্তিশালী, সেটা পশ্চিমা লঘুচাপে মিলিত হয়ে প্রচুর পরিমাণ জলীয়বাষ্প সৃষ্টি করার কারণে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃষ্টি হয়েছে।’
এ আবহাওয়াবিদ বলেন, চলতি বছর পুরোটাই এই রকম অতিরিক্ত বৃষ্টি হতে পারে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা স্বাভাবিক বৃষ্টি নয়, পাঁচ থেকে ১০ বছর পর পর এই ধরনের বৃষ্টি হয়। এগুলো মাথায় নিয়েই রাজধানীতে ড্রেনেজ সিস্টেমগুলো করা উচিত।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সায়েন্সল্যাব এলাকা থেকে সিটি কলেজ সরিয়ে নেওয়ার দাবি ঢাকা কলেজের
ঢাকার সায়েন্সল্যাব মোড় এলাকায় ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদেরবিস্তারিত পড়ুন
ড. ইউনূস: আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা চাকরিপ্রার্থী তৈরি করে, এটি ত্রুটিপূর্ণ
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “মানুষ জন্মগতভাবে উদ্যোক্তা।বিস্তারিত পড়ুন
আইসিটি অধ্যাদেশ অনুমোদন, ধারণ করা যাবে বিচার প্রক্রিয়ার অডিও-ভিডিও
‘‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৪’’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদনবিস্তারিত পড়ুন