“বেশভূষায় ওই ব্যক্তিকে ইরাক-সিরিয়া অথবা আফগানিস্তানের জঙ্গিদের মতো লাগছিল”
চিকিৎসার জন্য অর্থ সাহায্য নিতে আসা এক ব্যক্তিকে সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশে সোপর্দ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তার দাবি, বেশভূষায় ওই ব্যক্তিকে ইরাক-সিরিয়া অথবা আফগানিস্তানের জঙ্গিদের মতো লাগছিল। তাই তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
গতকাল সোমবার বিকেল ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে এ ঘটনা ঘটে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি অংশ এ ঘটনাকে বাড়াবাড়ি বলে মন্তব্য করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শী এক কর্মকর্তা জানান, সোমবার বিকেলে হৃদরোগের চিকিৎসার জন্য অর্থ সাহায্য নিতে প্রশাসনিক ভবনে যান ছালাতুর রহমান স্টেলিন (৪৯) নামের এক ব্যক্তি।
ওই ভবনের বিভিন্ন কক্ষ ঘুরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করেন তিনি। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি উপ-রেজিস্ট্রার (উচ্চশিক্ষা ও বৃত্তি-১) আবুল কালাম আজাদের কক্ষে গিয়ে সাহায্য চান। সেখানে তাঁকে জঙ্গি সন্দেহে আটক করা হয়।
আটক করার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে স্টেলিনকে পুলিশে সোপর্দ করেন আবুল কালাম আজাদ। বিকেল ৩টার দিকে আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওমর ফারুক ওই ব্যক্তিকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। তবে স্টেলিনকে পুলিশে দেওয়ার সময় প্রশাসনিক ভবনের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী আপত্তি জানান বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, ছালাতুর রহমান সাত-আট বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থ সাহায্য নিতে আসেন। তিনি খুব নিয়মিত আসেন না। বছরে দু-তিনবার আসেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাঁকে সাহায্য করেন। তাঁকে জঙ্গি বলে কখনো কারো সন্দেহ হয়নি।
ওই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আরো জানান, ছালাতুর রহমান বালাদেশের নাগরিক হলেও কথা বলেন ইংরেজিতে। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী, তাঁর বাড়ি জামালপুরের সরিষাবাড়ী।
এক কর্মকর্তা বলেন, ‘তিনি অনেক দিন ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে সাহায্য নেন। তবে এটা ঠিক যে তাঁর সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হয়নি কখনো। তবে তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হলেও সম্ভবত বড় হয়েছেন দেশের বাইরে।’
এ বিষয়ে আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সাহায্য নিতে আসলে আমি তাঁকে (ছালাতুর রহমান) বিনামূল্যে চিকিৎসার কথা বলি। এতে তিনি জবাব না দিয়ে চলে যান। এতে আমার সন্দেহ হয়। তার পর তাকে আটকানো হয়।’
‘এ সময় আমি বুঝতে পারি, ওই ব্যক্তি বাঙালি নন। তিনি ইংরেজিতে কথা বলছিলেন। বাংলায় উত্তর চাওয়া হলেও তিনি বাংলায় কথা বলতে পারছিলেন না। অন্যদিকে তাঁর দাড়ি-পাঞ্জাবি সবকিছু মিলিয়ে মনে হচ্ছিল যেন মিডল ইস্ট অথবা ইরাক-আফগানিস্তানফেরত জঙ্গি।’
আবুল কালাম আজাদ আরো বলেন, ‘তাঁর (ছালাতুর রহমান) আচরণ দেখে আমার সন্দেহ হয়। আমার ধারণা হয়, তাঁকে হয়তো রেকি করতে পাঠানো হয়েছে। পরে আমি তাঁকে আটক করে পুলিশে খবর দিই।’
ওই কর্মকর্তা আরো জানান, তিনি ১১ মাস ধরে জঙ্গি হামলার শঙ্কায় পুলিশ প্রহরায় রয়েছেন। এ ঘটনায় তিনি আশুলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেছেন বলেও জানান।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক জানান, প্রশাসনের অনুমতিতে ছালাতুরকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
আশুলিয়া থানার এসআই ওমর ফারুক জানান, ছালাতুর রহমান থানায় আছেন। জাবির উপ-রেজিস্ট্রার আবুল কালাম আজাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন
ময়মনসিংহে ওসি-এসপি’র বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর
সরকারি দায়-দায়িত্ব ও কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথবিস্তারিত পড়ুন
ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় জনগণের সাথে রায়েছে বিচার বিভাগ
দেশের মানুষের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিচার বিভাগ জনগণের সঙ্গে আছেবিস্তারিত পড়ুন