বোনকে ধর্ষণের স্বীকারোক্তি আদায়ে ইলেক্ট্রিক শক
মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ধর্ষক সমাজাপতিকে রক্ষার জন্য কিশোর ভাইয়ের কাছ থেকে ছোট বোনকে ধর্ষণের স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করে পুলিশ। স্বীকারোক্তি আদায় করতে ১৪ বছর বয়সি ওই কিশোরকে ইলেক্ট্রিক শক দেয় থানার ওসি।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দিনমজুর বাবার কিশোর ছেলে তাসফিক উদ্দিন সফুর। রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও প্রভাবশালীদের চক্রান্তে নিজের ছোট বোনকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রায় সাত মাস গাজীপুরের কিশোর সংশোধনাগারে বন্দি থাকে সে। সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়ে বাবা-মা ও ছোট বোনকে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে কিশোর সফুর।
সংবাদ সম্মেলনে সফুর কাঁদতে কাঁদতে বলে, ‘নিজের ছোট বোনকে কি কেউ ধর্ষণ করতে পারে? অথচ রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আলী শাহর মদদে রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর, শিলক পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মুজিব এবং অন্য প্রভাবশালীরা আমার ছোট বোনের প্রকৃত ধর্ষক সমাজপতি শাহ আলমকে রক্ষার জন্য আমাকে ইলেক্ট্রিট শক দিয়ে, থানায় রাতভর অমানুষিক নির্যাতন করে ছোট বোনকে ধর্ষণের স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করে।’
সে আরো বলে, ‘থানায় আমাকে নির্যাতন করার পরও তারা আমার কাছ থেকে স্বাক্ষর নিতে পারেনি। পরে থানায় আমাকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে ওসি আমার মায়ের কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয় এবং আমার মাকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে এজাহার করায়। এরপর মামলায় বোনের ধর্ষণকারী হিসেবে আমাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে চালান দেয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।’
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার একটি এলাকার সমাজপতি শাহ আলম তার প্রতিবেশী ১২ বছর বয়সি এক মেয়েকে ফুসলিয়ে বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ ওঠে। এতে শিশুটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে ধর্ষক শাহ আলম তার মায়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করে গর্ভপাত ঘটায়। গর্ভপাতের ঘটনা জানাজানি হলে গত ৭ মে রাতে শিশুটির মা রাঙ্গুনিয়া থানায় শাহ আলমকে অভিযুক্ত করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ধর্ষণের অভিযোগের পরই পুলিশ ৮ মে রাতে শাহ আলমকে গ্রেফতার করে। কিন্তু শাহ আলমকে গ্রেফতারের পরপরই ঘটনা ধামাচাপা দিতে উঠে-পড়ে লাগে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানসহ প্রভাবশালীরা। থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় শাহ আলমকে। শাহ আলমের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগপত্রটি ছিঁড়ে ফেলা হয়। ওই অভিযোগের স্থলে ধর্ষিতার ছোট ভাইকে ধর্ষক সাজিয়ে নতুন অভিযোগপত্র লিখে ধর্ষিতার মায়ের স্বাক্ষর নেয় পুলিশ। এরপর মায়ের মামলায় ছোট বোনের ধর্ষক হিসেবে গ্রেফতার করা হয় কিশোর সফুরকে।
পরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং আরেকটি নিউজ পোর্টাল প্রকৃত ঘটনা অনুসন্ধান করে। ওই প্রভাবশালীকে বাঁচাতে ভাইকে বোনের ধর্ষক সাজানোর ঘটনা ফাঁস করে দিলে সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের সূত্র ধরে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া হাইকোর্টে এ ঘটনায় একটি রিট আবেদন করেন। গত ২৫ মে হাইকোর্ট প্রকৃত ধর্ষক শাহ আলমকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়। শাহ আলম বর্তমানে কারাগারে আছে।
সংবাদ সম্মেলনে কিশোর সফুর ছাড়াও তার ছোট বোন, মা ও বাবা উপস্থিত ছিলেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পদ হারালেন গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলেরবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল গ্রেপ্তার
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে রাজধানীরবিস্তারিত পড়ুন