সোমবার, নভেম্বর ২৫, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন

বয়ঃসন্ধিকালে সন্তানকে বন্ধু করে নিন

সারা বিশ্বে হত্যাকাণ্ড আর অপরাধমূলক কাজ যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে এ সবের সাথে তরুণ প্রজন্মের সম্পৃক্ততাও৷ তাহলে কি সন্তান লালন-পালনে কোনো ভুল বা ক্রুটি থেকে যাচ্ছে? নাকি এর পেছনে রয়েছে অন্য কোনো কারণ?

প্রতিটি মা-বাবার কাছে তাঁদের সন্তানের চেয়ে বড় কিছুই নেই৷ আদরের সেই ছোট্ট শিশুটি হাঁটি হাঁটি পা করে ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে৷ আর সেই সাথে সন্তানটিকে নিয়ে বাড়তে থাকে মা-বাবার স্বপ্নও৷ কিন্তু সন্তানের এই বড় হওয়ার মাঝখানে একটা বিশেষ সময়ে বাবা-মায়ের কোনো অসাবধানতা কিংবা অসচেতনতার কারণেই সন্তান জড়িয়ে পড়তে পারে অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে, যা ঠিকমতো বোঝার আগেই ভেঙে ফেলতে পারে মা-বাবার বা পরিবারের এতদিনকার স্বপ্ন৷

হ্যাঁ, বলছি ‘বয়ঃসন্ধিকালের’ কথা, যা কিনা একজন মানুষের জীবনে বেড়ে ওঠার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ৷ অর্থাৎ কিশোর-কিশোরী থেকে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া৷ সাধারণত ১০ থেকে ১৯ বছর বা টিন-এজটাকেই বয়ঃসন্ধিকাল হিসেবে ধরা হয়৷ মনোবিজ্ঞানীদের কথায়, এই বয়সে মানুষের মস্তিষ্কে চলে ছোট থেকে বড় হওয়ার ভাঙা-গড়া বা মস্তিষ্কের পূণর্গঠন৷ বিশেষজ্ঞরা এ কথাও বলেন যে, এ বয়সে শরীর আর মনের এই পরিবর্তনের কারণে কিশোর-কিশোরীরা নিজেদের অনুভূতিকে ঠিক ‘কন্ট্রোলে’ রাখতে পারে না৷

বয়ঃসন্ধিকালের এই ধাপটিতে এতকিছু ঘটে, অথচ আমরা, যারা বাংলাদেশ-ভারতের মতো দেশে সাধারণ পরিবারে বড় হয়েছি, তারা কি এ সম্পর্কে বিশেষ জানতাম? এ সময়টায় নিজেকে শুধু সকলের কাছ থেকে খানিকটা আড়াল করে রাখার প্রবণতা ছিল আমাদের মধ্যে৷ বহুদিন আগের কথা হলেও, আমার বেশ মনে আছে যে তখন আমার ছোটদের সাথে খেলতে ইচ্ছে করতো না৷ আবার অন্যদিকে বড়রাও আমাদের তাঁদের গল্পের মধ্যে অংশগ্রহণ করতে দিত না৷ না ছোট, না বড়৷ তখন যেন কোনো দলেই পড়ি না আমরা৷ কেমন এক অসহায় পরিস্থিতি…৷

এ বয়সে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা তুলনামূলকভাবে কিছুটা সহজ হয় হয়ত বা৷ তারপরও মনে হয় অনেক প্রয়োজনীয় বিষয়ই সে সময় আমাদের অজানা থেকে গিয়েছিল শুধুমাত্র মা-বাবা বা পরিবারের মানুষের সাথে সহজভাবে কথা বলতে না পারার কারণে৷ আর আমার তো মনে হয়, এই একবিংশ শতকে এসেও বাংলাদেশ বা ভারতের ছেলে-মেয়েদের পোশাক বা চলনে-বলনে ইউরোপ-অ্যামেরিকার ছোঁয়া লাগলেও বয়ঃসন্ধিকালের সমস্যাগুলো নিয়ে সরাসরি পরিবারের মধ্যে কথা বলার মতো মানসিকতা আজও হয়নি৷ আজকের টিন-এজ ছেলে-মেয়েদের সাথে কথা বলে আমার অন্তত এই ধারণাই হয়েছে৷

‘বয়ঃসন্ধিকাল’ যে জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়, তা কিন্তু জার্মানিতে খুবই স্পষ্ট৷ এ বয়সি ছেলে-মেয়েদের যৌনশিক্ষা, মাদক সেবনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কে স্কুলেই সচেতন করে দেওয়া হয়৷ তাছাড়া আমার সন্তানকে বড় করার মধ্য দিয়েই দেখেছি যে, এ দেশের মা-বাবারা কিন্তু ছেলে-মেয়েদের সাথে খোলাখুলিভাবে আলোচনা করেন, সন্তানের সাথে বন্ধুর মতো মেশেন৷ তা না হলে যে সন্তানের মনের নাগাল পাওয়া কঠিন, সে কথা ভালো করেই জানেন জার্মান বাবা-মায়েরা৷ শুধু তাই নয়, ওদের বন্ধু-বান্ধব কারা সেটার খোঁজও রাখেন তাঁরা৷

আর হ্যাঁ, আমার এটাও খুব ভালো লাগে যে, ওরা দিনের অন্তত একটি খাবার পরিবারের সকলের সঙ্গে একসাথে খায়৷ কিছু পরিবারের নিয়ম অবশ্য আরো কড়া৷ অর্থাৎ সেখানে সকলের একই সময়ে খাবার টেবিলে উপস্থিত থাকাটা বাধ্যতামূলক৷ এতে করে হাসি-ঠাট্টার মধ্য দিয়ে সব বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা বলা যায়৷ আসলে সন্তানের প্রথম শিক্ষক যে মা-বাবা, তা বোধহয় আমাদের কারুরই অস্বীকার করার উপায়ই নেই, তাই না?

তাছাড়া বয়ঃসন্ধিকালের ছেলে এবং মেয়ে – দু’জনের চাহিদা যে ভিন্ন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না৷ তাই হয়ত জার্মানদের মধ্যে উঠতি বয়সি মেয়েদের সাথে মায়েরা বন্ধুত্ব করার চেষ্টা করেন আর ছেলেদের সাথে বাবারা৷ এই বয়সি মেয়েদের কেনা-কাটায় খুব আগ্রহ৷ তাই ছুটির দিনে মা-মেয়েকে আনন্দ করে শপিং করতে যেতে দেখা যায়৷ দেখা যায়, তারা সারাদিন একসাথে সময় কাটাচ্ছে৷ লক্ষ্য একটাই৷ মেয়ের মনের খবর নেওয়া৷ অন্যদিকে বাপ-ছেলে মিলে যায় ফুটবল খেলা দেখতে বা অন্য কোনো অ্যাডভেঞ্চারে৷

তাছাড়া এখানকার কম বয়সি ছেলে-মেয়েরা যে শুধু পরিবারের মধ্যে ফ্রিভাবে কথা বলে, তা নয়৷ শিক্ষকদের সাথেও তাদের সম্পর্কটা হয় বেশ বন্ধুবৎসল৷ আমার এক স্কুল শিক্ষিকা জার্মান প্রতিবেশী বলেন, ছেলে-মেয়েরা তার কাছে তাদের রাগ, দুঃখ, ক্ষোভ, এমনকি মা-বাবার সম্পর্কে টানাপোড়েনের নানা কথাও অকপটে জানিয়ে দেয়৷ তবে বিদ্যালয়ের গণ্ডির মধ্যে নয়, বরং যখন তারা খেলাধুলা বা ভ্রমণে যায়, তখন৷ এর মধ্য দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনায় অমনোযোগিতা বা বিষণ্ণতার কারণগুলো শিক্ষকদের জানা হয়ে যায়৷ প্রয়োজনে শিক্ষকরা বিষয়গুলি ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবারের সাথেও শেয়ার করেন৷

মাদকের নেশা থেকে শুরু করে ধর্ষণ, সাইবার ক্রাইম কিংবা জঙ্গিবাদের মতো অপরাধমূলক কাজে যারা জড়িয়ে পড়ে, তাদের বেশিরভাগেরই বয়স টিন-এজের মধ্যে বা তার কিছু বেশি৷ এ সত্য বর্তমান সময়ে রীতিমতো আতঙ্কের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে করা বিভিন্ন সমীক্ষা থেকেও জানা যায় যে, বয়ঃসন্ধিকালে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে ছেলে-মেয়েদের মাথা এতটাই এলোমেলো থাকে যে, তখন নাকি ওদের অনেকেরই মন চায় ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ কিছু একটা করতে৷

একজন উঠতি বয়সের মানুষের এই ঝুঁকিপূর্ণ এবং গুরুত্বপূর্ণ সময়টিতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তার মা-বাবাকে, পরিবারকে৷ তাছাড়া পারিবারিক বন্ধনের চেয়ে বড় বন্ধন কি আর কিছু আছে? তাই আমার মনে হয়, দাম্পত্য কলহ এড়িয়ে বাড়ির পরিবেশ সুন্দর রাখা যেমন দরকার, তেমনই দরকার সন্তানের সাথে বন্ধুর মতো মেশার৷ কারণ তার মনের খবর রাখলেই হয়তো সন্তানকে অপরাধমূলক কাজ থেকে দূরে রেখে একজন যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা যাবে!

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

মানবদেহে আদার অনেক উপকার

আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন

হোটেল ঘরে বিছানার চাদর সাদা হয় কেন ?

বেড়াতে গিয়ে হোটেলের ঘরে ঢুকে প্রথম যে বিষয়টি নজরে আসে,বিস্তারিত পড়ুন

ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ

চিকিৎসকদের মতে, ধনে বা ধনিয়া একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেকবিস্তারিত পড়ুন

  • ওজন কমাতে যা খাওয়া যেতে পারে
  • প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রসুন
  • আমলকি কখনো স্বাস্থ্যের জন্য ‘বিপজ্জনক’ হয়ে ওঠে
  • বাসি দই ও পান্তা ভাতের আশ্চর্যজনক উপকারিতা
  • স্বাদে ও পুষ্টিগুণে ভরপুর সবজি হলো লাউ
  • মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে তাপমাত্রার পারদ উঠল ৪৩ ডিগ্রিতে
  • যেসব অঞ্চলে টানা ৩ দিন ঝড়বৃষ্টি
  • ২৪ ঘণ্টা না যেতেই ফের কমলো স্বর্ণের দাম
  • গরমে চুলের যত্ন নেবেন কীভাবে?
  • একলাফে সোনার দাম ভ‌রিতে কমলো ৩১৩৮ টাকা
  • কত দিন পর পর টুথব্রাশ বদলাবেন?
  • ত্বকের দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়