বয়স যত কমই হোক না কেন, জেনে রাখুন স্ট্রোকের উপসর্গ
আপনি ভাবতে পারেন, আপনার বয়স অনেক কম, এই বয়সে স্ট্রোকের চিন্তার কোনো দরকারই নেই। বিশেষ করে ভালো স্বাস্থ্যের মানুষ তো ভাবতেই পারেন না যে তাদের স্ট্রোক হতে পারে। কিন্তু এটা যে কোনো বয়সে আমাদেরকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে। এ কারণে আপনি যতো কম বয়স এবং যতো স্বাস্থ্যবানই হন না কেন, স্ট্রোকের ব্যাপারে আপনারও জেনে রাখা উচিৎ।
শুধু যে যে কোনো বয়সে স্ট্রোক হতে পারে তাই নয়, বরং ইদানিং কমবয়সী মানুষের মাঝে স্ট্রোকের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মূলত হাইপারটেনশনের কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ছে। আরও একটি খারাপ খবর হলো, স্ট্রোকের লক্ষণ দেখতে পেলেও ৪৫ বছরের কম বয়সী মানুষ সাথে সাথে ডাক্তারের কাছে না গিয়ে বরং অপেক্ষা করেন এবং ভাবেন ঠিক হয়ে যাবে। এটি ভয়ংকর একটি সিদ্ধান্ত। কারণ স্ট্রোকের পরের তিন ঘন্টা হলো ট্রিটমেন্টের জন্য সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ।
কী করে বুঝবেন আপনি স্ট্রোকের শিকার হয়েছেন? মূলত দুইটি ব্যাপারে হুঁশিয়ার থাকতে বলেন ডাক্তারেরা। এর একটি হলো হঠাৎ করেই ভীষণ মাথা ঘোরানো, আরেকটি হলো হঠাৎ প্রচন্ড মাথাব্যাথা। ৪৫ বছর বয়সের নিচে স্ট্রোক হলে সাধারণত এই দুইটি উপসর্গই আগে দেখা যায়। মাঝে মাঝে এর সাথে থাকে হেঁচকি অথবা বমি বমি ভাব।
আরও কিছু লক্ষণ আপনি মাথায় রাখতে পারেন। তা হলো কথা বলতে না পারা বা ভাষা ভুলে যাওয়া, দৃষ্টিশক্তিতে পরিবর্তন, অনুভূতিতে পরিবর্তন ইত্যাদি। এসব উপসর্গের মিশ্রণ দেখা দিলে চিন্তিত হবার কারণ আছে বই কি। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সেই ব্যক্তির শরীরে এসব উপসর্গ সাধারণত দেখা যায় না। ঘাড়ে ব্যাথা বা সম্প্রতি পড়ে যাবার কোনো ঘটনা যদি সম্প্রতি ঘটে থাকে তবে ডাক্তার দেখানোটা জরুরী।
যেসব উপসর্গের ব্যাপারে আপনি সতর্ক থাকতে পারেন-
– মুখ, হাত, পায়ে কোনো অসাড়তা বা দুর্বলতা, বিশেষ করে শরীরের একদিকে ব্যাথা
– বিভ্রান্তি বা অন্যদেরকে বুঝতে অসুবিধা
– কথা বলতে অসুবিধা
– একটি বা দুইটি চোখে দেখতে অসুবিধা
– শরীরের ভারসাম্য রেখে চলাফেরায় অসুবিধা
– মাথা ঘোরানো
– অকারণে প্রচন্ড মাথাব্যাথা
স্ট্রোক হয়েছে কিনা এ ব্যাপারে কাউকে চেক করার একটি সহজ উপায় হলো FAST অথবা BE FAST।
B– Balance
হঠাৎ করে ব্যালান্স বা ভারসাম্য রাখতে সমস্যা। সোজা লাইন বরাবর হাঁটতে না পারা অথবা এক আঙ্গুল দিয়ে নিজের নাক স্পর্শ করতে না পারা।
E– Eyes
হঠাৎ করে দৃষ্টিশক্তিতে পরিবর্তন।
F– Face
মুখের একদিকে অসাড়তা। এটা বোঝা যেতে পারে অসমান হাসি দেখে। অর্থাৎ মুখের একদিক ঝুলে যেতে পারে বা অসাড় হয়ে থাকতে পারে।
A– Arm Weakness
এক হাতে অসাড়তা। একসাথে দুই হাত ওপরের দিকে ওঠাতে না পারা।
S—Speech Dificulty
কথা জড়িয়ে যাওয়া, কথা বুঝতে সমস্যা হওয়া।
T- Time
অর্থাৎ এখন সময় নষ্ট না করে যতো দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
এক মিনিটও সময় নষ্ট করা যাবে না। যে সময়ে উপসর্গ শুরু হয়েছে সে সময়টাও মনে রাখুন, ডাক্তার জিজ্ঞেস করবেন। আপনি যদি মনে করেন আপনার আশেপাশের কারো স্ট্রোক হয়েছে তবে বিলম্ব না করে তাকে কাছাকাছি কোনো হাসপাতালে নিয়ে যান। যদি দেখা যায় তা স্ট্রোক নয় তাহলে তো খুবই ভালো কথা। কিন্তু নিশ্চিত হয়ে নিতে তো দোষ নেই, তাই না?
স্ট্রোক হলেই যে আপনার মৃত্যু অবধারিত এমনটা নয়। বরং সঠিক সময়ে ডাক্তার দেখানো এবং সঠিক চিকিৎসায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারেন আপনিও। এ কারণে নিজের শরীর এবং স্বাস্থ্যের ব্যাপারে থাকুন সতর্ক।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন
হোটেল ঘরে বিছানার চাদর সাদা হয় কেন ?
বেড়াতে গিয়ে হোটেলের ঘরে ঢুকে প্রথম যে বিষয়টি নজরে আসে,বিস্তারিত পড়ুন
ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ
চিকিৎসকদের মতে, ধনে বা ধনিয়া একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেকবিস্তারিত পড়ুন