‘ভাই আমার ভ্যান গাড়িডা আইনা দেন, ওরা আমার গাড়িডা নিয়া গেছে’ কিশোরের আকুতি
‘ভাই আমার ভ্যান গাড়িডা আইনা দেন, ওরা আমার গাড়িডা নিয়া গেছে’ জ্ঞান ফেরার পর এভাবেই আকুতি জানিয়েছে ভ্যান চালক গরীব স্কুল ছাত্র শাকিল (১৪)। বাড়তি উপার্জনের জন্য বাবার ভ্যান গাড়ি নিয়ে মাদারীপুর থেকে শরীয়তপুর এসে অজ্ঞান পার্টির খপ্পড়ে পড়ে ভ্যান গাড়িটি হারায় সে।
শুক্রবার (২৮ জুন) বিকালে শরীয়তপুর সদর উপজেলার কানার বাজার সংলগ্ন রাস্তায় শাকিলকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে স্থানীয়রা।
শাকিল মাদারীপুর সদর উপজেলার খোঁয়াজপুর ইউনিয়নের টেকেরহাট এলাকার বর্ষারচর গ্রামের এমদাদ সরদার ও তানজিলা বেগম দম্পত্তির ছেলে। সে টেকেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শাকিল দুপুরের দিকে অচেতন অবস্থায় কানার বাজার এলাকায় রাস্তার পাশে পড়েছিল। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জানতে চাইলে সে জানায়, যাত্রী নিয়ে খোঁয়াজপুর টেকেরহাট থেকে দুপুরের দিকে শরীয়তপুরের মনোহর মোড় এসেছিল সে। পরে মনোহর মোড় এলাকা থেকে দুই ব্যক্তির সঙ্গে তার ভাড়া চুক্তি হয়। ৩০০ টাকার চুক্তি অনুযায়ী দাঁদপুর যাওয়ার কথা থাকলেও ওই যাত্রীরা শাকিলকে জানায় শরীয়তপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে আরও একজন যাত্রী উঠবেন। পরে শাকিল চুক্তি করা দুই যাত্রীসহ ওই যাত্রীকে আনতে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গেলে তাকে সিঙ্গারা খেতে দেয় যাত্রীরা। এরপর যাত্রী বেশে থাকা অজ্ঞান পার্টির লোকজন তাকে নিয়ে কানার বাজার এলাকায় গেলে সেখানে অচেতন হয়ে যায়। এরপর তার থেকে ভ্যান গাড়িটি নিয়ে যায় তারা। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে সে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তৃতীয় তলায় মেডিসিন বিভাগের ২০ নম্বর শয্যায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।
আরিফ আহমেদ নামে স্থানীয় একজন জানান, রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় ওই কিশোরকে অচেতন হয়ে পড়ে থাকতে দেখি। পরে তাকে স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার করে নাম পরিচয় জানতে চাইলে সে জানায়, তার বাড়ি মাদারীপুরে। তাকে সিঙ্গারা খাইয়ে অচেতন করে তার ভ্যান গাড়িটি নিয়ে গেছে। এর পর শাওন নামে একজনের মাধ্যমে তাকে হাসপাতালে পাঠিয়েছি।
হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা শাকিল জানায়, আমি টেকেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করি। আমার রোল নম্বর ২৬। সংসারে অভাব থাকায় স্কুল বন্ধ থাকলে আমি বাবার ভ্যান গাড়িটি চালাই। আজকে বাবা ও বড় ভাই সাকিব (রাজমিস্ত্রী) বাড়িতে পাট কাটার কাজে ব্যস্ত ছিল, শুক্রবার হওয়ায় আমার স্কুলও বন্ধ ছিল। তাই সকালে ভ্যান গাড়ি নিয়ে বের হয়েছিলাম। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৫০০ টাকা আয়ও করেছিলাম। দুই যাত্রী আমাকে ৩০০ টাকায় দাঁদপুর নিয়ে যাওয়ার কথা বলে প্রথমে বাসস্ট্যান্ড নিয়ে সিঙ্গারা খাওয়ায়। এরপর কোথায় যেন নিয়ে ভ্যান গাড়িটি নিয়ে গেছে। ভ্যান গাড়িটি না পেলে বাবা আমাকে মারধর করবে। আমার ভ্যান গাড়িটি কই? আমি বাড়িতে যেতে চাই। ভাই আমার ভ্যান গাড়িডা আইনা দেন, আমি গরীব মানুষ ওরা আমার গাড়িডা নিয়া গেছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা আমাদের জানা নেই।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন