ভারতীয় বোর্ড-আইসিসি দ্বন্দ্বে লাভবান বাংলাদেশ
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড(বিসিসিআই)-আইসিসি দ্বন্দ্ব, এও কী সম্ভব! আইসিসিতে ভারতীয় বোর্ডের এতটাই প্রভাব যে, ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থাকে বিসিসিআইয়ের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান বলেও নানা সময়ে মন্তব্য ছুড়ে মারা হয়েছে। কিন্তু বিস্ময়ের জন্ম দিয়ে সেই আইসিসি ও ভারতীয় বোর্ড এখন মুখোমুখি। একেবারে সম্মুখ সমরে। আরো বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, এ দ্বন্দ্বের মূলে দুই ভারতীয়, বিসিসিআইয়ের বর্তমান প্রেসিডেন্ট অনুরাগ ঠাকুর ও আইসিসি সভাপতি শশাঙ্ক মনোহর।মজার ব্যাপার হলো, এই দ্বন্দ্বে লাভ হয়েছে বাংলাদেশের।
মানুষ এবং প্রশাসক হিসেবে শশাঙ্ক মনোহরের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে কোনো প্রশ্ন নেই। নিতান্ত ভদ্র ও সৎ মানুষটা নিজের বিবেকের সঙ্গে আপোশ করেন না বলেই সবার জানা।আর এখানেই যতো সমস্যা। ক্রিকেটের স্বার্থে এন শ্রীনিবাসনের করে যাওয়া কুখ্যাত কালাকানুন ‘তিন মোড়ল’ পদ্ধতি বাতিল করেন শশাঙ্ক। যে নিয়মে আইসিসির বাৎসরিক আয়ের সিংভাগই চলে যেত ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট বোর্ডের কোষাগারে।এ তিন দেশের মধ্যে ভারত আবার পেত সবচেয়ে বেশী রাজস্ব।
বৈষম্যমূলক এ নিয়মটা বাতিল করে ভারতীয় বোর্ডের চরম বিরাগভাজক হন শশাঙ্ক। ভারতীয় বোর্ডের দাবি, আইসিসির আয়ের ৭০ শতাংশের উৎস হচ্ছে ভারত, তাই লাভের অঙ্কটাও অবধারিতভাবে বেশি পাবে ভারত। কিন্তু শশাঙ্কর আইসিসি ভারতীয় বোর্ডের এ অন্যায্য দাবি অগ্রাহ্য করেছে। এমনকি ক’য়েকদিন আগে দুবাইয়ের বৈঠকে আইসিসির ফিন্যান্স কমিটি থেকে বিসিসিআইকে বাদ দেওয়ার সাহস্ দেখিয়েছে৷ আর এতে তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে ভারতীয় বোর্ড৷
ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় চাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তিন গুণ বেশি বাজেটের প্রস্তাব দিয়ে আরেক দফা তোপের মুখে পড়েন শশাঙ্ক মনোহর। ভারতে টি-২০ বিশ্বকাপে আইসিসি যে বাজেট রেখেছিল, ইংল্যান্ডে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য সেই বাজেট তিনগুণ বাড়িয়েছে আইসিসি৷ আর তাতেই চটেছেন অনুরাগ ঠাকুররা৷ টি-২০ বিশ্বকাপে যেখানে ৫৮টি ম্যাচ হয়েছিল, সেখানে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে মাত্র ১৫টি ম্যাচ৷ ভারতে আটটি ভেন্যুতে খেলা হয়েছে, ইংল্যান্ডে হবে তিনটি ভেন্যুতে৷ভারতীয় বোর্ডের প্রশ্ন, ওখানে এত বেশি খরচ কেন?
এর জবাবও অবশ্য দিয়েছেন আইসিসি সভাপতি শশাঙ্ক। বলেছেন,‘ইংল্যান্ড আর ভারতের খরচা কখনও একসঙ্গে তুলনীয় হয়? ইন্ডিয়াতে টপ হোটেল আপনি বোর্ড রেটে ৫ হাজার টাকায় পেয়ে যাবেন। ইংল্যান্ডে ওটাই ৫০ পাউন্ড। ওখানে ৫০ পাউন্ডে কোনও টু স্টার হোটেলও হবে? তার পর যাতায়াতের খরচও কত বেশি। উপমহাদেশের সব ক’টা টিম এখান থেকে ইংল্যান্ড যাবে। খরচা তো এক্সট্রা হবেই। ম্যাচের সময় সেখানে বেশি। টি-টোয়েন্টি থেকে ওয়ান ডে। একটা সাড়ে তিন ঘণ্টার ম্যাচ। একটা সাত ঘণ্টার। ভাড়া কখনও এক হতে পারে?’
কিন্তু শশাঙ্কর এই যুক্তি মানতে রাজি নন ভারতীয় বোর্ড প্রধান অনুরাগ ঠাকুর। ভারতীয় হয়েও ভারতের স্বার্থ বিরোধী কাজ কারায় শশাঙ্ককে কাঠ গড়ায় দাঁড় করিয়েছেন অনুরাগ।
দুই ক্রিকেট কর্তার এ দ্বন্দ্বে লাভ হয়েছে বাংলাদেশের।এ দ্বন্দ্বের কারণেই আইসিসির অনেক গুরুত্বপূর্ণ নীতির বিরোধিতা করছে ভারতীয় বোর্ড। ভারতীয় বোর্ডের কড়া অবস্থানের ফলে বাতিল হয়ে গেছে বাংলাদেশের জন্য মহাচিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ানো টেস্টে দ্বি-স্তরের ধারণাটা। অথচ দ্বি-স্তরের প্রস্তাবটা এসেছিল ভারতীয় বোর্ডের পক্ষ থেকেই। সেই ভারতীয় ভারতীয় বোর্ডের কারণেই সেটা আবার বাতিল হলো!
ক্রিকেট বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শশাঙ্ক- অনুরাগ দ্বন্দ্বটা না বাঁধলে নিশ্চিত পাশ হয়ে যেত দ্বি-স্তরের টেস্ট ধারণা। আর সেটা হলে ক্ষতি হতো বাংলাদেশ ক্রিকেটের।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন