বিবিসি বাংলার খবর
ভারতে ছয়দিন পরেও নতুন নোটের জন্য হাহাকার
ভারতে রাতারাতি পাঁচশো ও হাজার রুপির নোট নিষিদ্ধ ঘোষণা করার ছয় দিন পরেও নতুন নোটের জন্য হাহাকার অব্যাহত রয়েছে। সারা দেশ জুড়ে প্রতিটি এটিএম মেশিনের সামনেই শত শত মানুষ লাইন দিয়ে টাকা তোলার জন্য অপেক্ষা করছেন।
পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেওয়ার চেষ্টায় সরকার সোমবার ঘোষণা করেছে, এটিএম থেকে নতুন দুহাজার রুপির নোট মিলবে মঙ্গলবার থেকেই – আর হাসপাতাল, পেট্রল স্টেশন বা টোল বুথের মতো বিশেষ কিছু স্থানে পুরনো নোট আরও দশদিন ব্যবহার করা যাবে।
এদিকে এই নোট বাতিলের ইস্যুতে সংসদের আসন্ন অধিবেশনে সরকারকে চেপে ধরতে বিরোধী দলগুলোও একজোট হওয়ার চেষ্টা করছে।
দিল্লির লাজপত নগরে স্টেট ব্যাঙ্ক ইন্ডিয়ার একটি এটিএম মেশিনের সামনে এদিন বেলা বারোটায় দেখা গেল আশেপাশের আরও পাঁচ-ছটা মেশিনের মধ্যে শুধু এই একটাই চালু, আর বুথের সামনে অন্তত দেড়শো লোকের অবিশ্রান্ত হুড়োহুড়ি।
সোমবার শিখদের গুরু নানকের জন্মদিবস উপলক্ষে জাতীয় ছুটির দিনে প্রায় সব ব্যাঙ্কই বন্ধ, তাই ভরসা এই গুটিকয়েক এটিএম মেশিন।
কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টার ধৈর্যের পরীক্ষা দিয়েও কিছু একশো নোট টাকার নোট মিলবে, সেই গ্যারান্টি কিন্তু নেই।
এরা কেউ তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করেও হতাশ হয়েছেন। কেউ বা বাচ্চার ওষুধ কিনতে পাড়ার ওষুধের দোকানে ফোন করেছিলেন – কিন্তু তারা সটান বলে দিয়েছে পুরনো নোট নিতে পারবে না।
বাধ্য হয়ে সেই অসুস্থ বাচ্চাকে কোলে করেই বাবা-মা দাঁড়িয়েছেন এটিএমের লাইনে।
এই অসহনীয় ভোগান্তি শুধু মধ্যবিত্ত বা সাধারণ মানুষের নয় – সাধারণ দোকানদার, পাড়ার মাছওলা বা সব্জিওলা, দিনমজুর কিংবা খেটে খাওয়া মানুষ সবারই।
এমন কী পাইকারি বাজারেও নগদের সঙ্কট চরম – যার আঁচ খুব তাড়াতাড়ি গৃহস্থের হেঁশেলে হানা দেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দেশবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, এটা স্বীকার করেও আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কিন্তু এক জনসভায় তার সিদ্ধান্তের পক্ষে জোরালো সাফাই দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “আমি খুব কড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছি মানছি। ছোটবেলায় যখন চা বেচতাম, গরিবরা এসে বলত কড়া চা-ই তাদের পছন্দ। আমি সেটা জানি বলেই কড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছি – আর তাতে চুমুক দিয়ে বড়লোকদের মুখ বেজার হচ্ছে। আর কড়া সিদ্ধান্ত নিলে তার জন্য একটু কষ্ট তো পোহাতে হবেই, তাই না?”
কিন্তু বিরোধী দলগুলো এই যুক্তি মানতে নারাজ। বুধবার থেকে সংসদের যে শীত অধিবেশন শুরু হচ্ছে, তাতে মানুষের এই ভোগান্তি নিয়ে সরকারকে কোণঠাসা করতে ইতোমধ্যেই তৎপরতা শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
যৌথ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে তারা আলোচনা চালাচ্ছে কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি বা এমন কী বামপন্থীদের সঙ্গেও – পাশাপাশি এই ইস্যুতে সরকারের পদত্যাগও দাবি করে ফেলেছেন তৃণমূলের নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
তিনি বলেছেন, “এমন একটা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার আগে, মানুষকে বুলডোজ করার আগে সরকারের তো ভাবা উচিত ছিল। এই সরকারের ক্ষমতায় থাকায় আর কোনও নৈতিক অধিকার নেই। এটা একটা অর্থনৈতিক ইমার্জেন্সি – যার মানে এই দেশের আর কিছু অবশিষ্ট নেই, পুরো অর্থনীতিটা ধ্বংস হয়ে গেছে।”
তবে গত সপ্তাহের নাটকীয় সিদ্ধান্তের অভিঘাত সামাল দেওয়ার মতো যথেষ্ট প্রস্তুতি যে সরকারের ছিল না – তা স্পষ্ট হয়ে গেছে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির কথাতেই।
মি জেটলি জানিয়েছেন, “এটিএম যাতে নতুন নোট দিতে পারে, সে জন্য মেশিনগুলো রিক্যালিব্রেট করতে দুসপ্তাহের মতো সময় লেগে যেতে পারে বলে প্রযুক্তিবিদরা জানিয়েছেন – ফলে মানুষকে সেটুকু সময় একটু ধৈর্য ধরতে হবে।”
সরকার বারবার ধৈর্য ধরার ও কষ্টটুকু মানিয়ে নেওয়ার কথা বলছে – আর সাধারণ মানুষের সেই দুর্ভোগকে পুঁজি করেই সরকারকে বিঁধতে চাইছেন বিরোধীরা।
আর দেশের আমজনতার লক্ষ্য অবশ্য এখন একটাই – যে কোনোভাবে কয়েকটা পুরনো একশো কিংবা নতুন পাঁচশো-দুহাজারের নোট পকেটে পোরা।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
প্রকাশ্যে জানালেনঃ দুই পরিচালকের সঙ্গে ‘প্রেম’ ছিল পায়েলের
টলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির স্বনামধন্য দুজন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী ও আবিরবিস্তারিত পড়ুন
প্রথম ‘সন্তানের’ জন্মলগ্নে কেঁদেছিলেন দেব ! দায়িত্ব অনেকটাই একা সামলাচ্ছেন তিনি
শিরোনাম পড়ে ভাবছেন, নায়ক দেব তো বিয়েই করেননি, তাহলে সন্তানবিস্তারিত পড়ুন
আলোচিত বাবা রাম রহিমের আয় কত, অনেকেই জানেনা?
ভারতের বিতর্কীত ধর্মগুরু বাবা রাম রহিমের পঞ্জাব, হরিয়ানায় স্থাবর সম্পত্তিরবিস্তারিত পড়ুন