ভারতে নোট বাতিলে জঙ্গি নেটওয়ার্কে আঘাত
ভারতে পাঁচশ’ ও হাজার রুপির নোট বাতিল করায় বড় ধরণের ধাক্কা লেগেছে দেশটির জঙ্গি নেটওয়ার্কে। কারণ, আসল নোট বাতিল হওয়ায় বাতিল হয়ে গেছে জাল নোটও। আর পাঁচশ’ ও হাজার রুপির জাল নোট তৈরি করেই এসব জঙ্গি নেটওয়ার্কগুলো চলতো বলে খবর আছে ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছে। ফলে জাল নোট অকেজো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙতে শুরু করেছে দেশের জঙ্গি নেটওয়ার্ক।
ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা এরইমধ্যে জানতে পেরেছেন যে, ভারতের বিভিন্ন শহরে তৈরি হওয়া ‘নব্য জেএমবি’ ও ‘আইএস’ জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক ইতোমধ্যেই বড় ধরণের ধাক্কা খেয়েছে। তাদের ধারণা, এবার লুকিয়ে থাকা বহু জঙ্গি শুধু অর্থ জোগাড়ের জন্য বাইরে বের হবে। তখন তাদের সন্ধান পাওয়াও সুবিধাজনক হবে। এ ছাড়াও পাঁচশ’ ও হাজার রুপি বাতিলের কারণে নতুন করে নেটওয়ার্ক তৈরির ক্ষেত্রেও বাধা পাবে জঙ্গিরা।
পাশাপাশি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের কাছে খবর, নতুন পাঁচশ’ ও দুই হাজার রুপির নোটে যে ধরণের বৈশিষ্ট্য রয়েছে, সেগুলি আইএসআই’র পক্ষে নকল করাও যথেষ্ট শক্ত। এজন্য নতুন করে আয়োজনও প্রয়োজন। ততদিনে জঙ্গি নেটওয়ার্ক চালু রাখা তাদের জন্য কষ্টকর হবে। সেই কারণে ভবিষ্যতেও জাল নোট তৈরি করে পাচারকারীদের পক্ষে তা ছড়ানো সহজ হবে না বলে নিশ্চিত গোয়েন্দারা।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা আরও জানতে পেরেছেন, পাকিস্তানের পেশোয়ারে একটি টাকশালে তৈরি হয় মূলত পাঁচশ’ ও হাজার রুপির জাল নোট। প্রত্যেক বছর আইএসআই পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও নেপালের সীমান্ত দিয়ে চোরাপথে প্রায় ৭০ কোটি রুপির জাল নোট ভারতে পাঠায়।
গোয়েন্দাদের মতে, যত টাকার জাল নোট গত কয়েক বছরে পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার হাতে ধরা পড়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি মূল্যের জাল নোট ছড়িয়ে পড়েছে পাচারকারীদের হাত দিয়ে। দেশের অর্থনীতি ভাঙার চেষ্টার সঙ্গে সঙ্গে এই জাল নোট কাজে লাগানো হয় জঙ্গি সংগঠনগুলির ভিত তৈরির জন্য। তারা জাল নোট বাজারে ছড়িয়ে আসল নোট সংগ্রহ করে। লস্কর, জেএমবি, এমনকি আইএস জঙ্গিদের তহবিল বাড়িয়ে তুলেছে পাঁচশ’ ও হাজার রুপির জাল নোট। তাই নোট বাতিল হওয়ার পর জোর ধাক্কা খেয়েছে জঙ্গিরাও।
গোয়েন্দাদের অভিযোগ, মালদহের কালিয়াচক, বৈষ্ণবনগর-সহ রাজ্যের কয়েকটি জায়গা ও অন্যান্য রাজ্যের গোপন ডেরাতেও মজুদ করা আছে কয়েকশ’ কোটি রুপির জাল নোট। তাই জাল নোট চক্রের মাথায় হাত পড়লেও এখন নিশ্চিন্ত গোয়েন্দারা। যে পরিমাণ জাল নোট এখন চক্রের কাছে রয়েছে, সেগুলি সরানো খুব সহজ কাজ নয়। বরং এর মধ্যেই সেগুলি নষ্ট করে দেওয়ার চেষ্টা করছে জাল নোট পাচারকারীরা। যদিও পোড়ালে ধরা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই মাটির তলায় সেগুলি পুঁতে ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে গোয়েন্দাদের কাছে খবর, জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) বা ‘নব্য জেএমবি’র জঙ্গি নেতাদের মধ্যে কয়েকজন এখন গাঢাকা দিয়ে আছে। পলাতক জেএমবি জঙ্গি নেতা সালেহিন, বোমারু মিজান বা কওসর, হাতকাটা নাসিরুল্লা, তালহা শেখদের মূল ভরসা পাঁচশ’ ও হাজার রুপির জাল নোট।
রাজমিস্ত্রি, শ্রমিক ও অন্যান্য পেশার আড়ালে লুকিয়ে থাকা জেএমবি সদস্যরা দেশের বিভিন্ন শহরে জাল নোট চালায়। সেই জাল নোট ‘বিক্রি’ করে পাওয়া আসল পাঁচশ’ ও হাজার রুপির নোটই হাওলার মাধ্যমে তাদের কাছে পৌঁছে যায়। ওই জঙ্গি নেতাদের কাছে যে প্রচুর জাল নোট রয়েছে, সেই বিষয়ে নিশ্চিত গোয়েন্দারা। তাদের নিজেদের পক্ষে এখন সেই বাতিল টাকা ভাঙিয়ে নতুন নোট জোগাড় করা প্রায় অসম্ভব। কারণ তারা এগুলো দোকানে চালাতে পারবে না। ব্যাংকে গেলে ধরা পড়বে। তাই লোক মারফত নতুন নোট জোগাড় করার জন্যও তারা মরিয়া হয়ে যেতে পারে। তারা বাংলাদেশ বা নেপালেও পালানোর চেষ্টা করতে পারে। আর এই সুযোগেই তাদেরকে আটকাতে চায় গোয়েন্দারা। সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন