ভারত-পাকিস্তানের শ্যাডো বক্সিং
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের উরি সেনাঘাঁটিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর অতর্কিত এক হামলায় ১৮ ভারতীয় সেনা সদস্য নিহত হন।এরপর থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রায় যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে।
কূটনৈতিক বিবৃতি ও পাল্টা বিবৃতির পাশাপাশি শক্তি প্রয়োগের মতো ঘটনা ঘটছে। ভারত কাশ্মিরের লাইন অব কন্ট্রোল অতিক্রম করে পাকিস্তানের সীমানায় একটি সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালায়, এতে একাধিক সেনা নিহত হওয়ার দাবি দু’পক্ষ থেকেই করা হচ্ছে।
যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অক্টোবরেই ভারতে অনুষ্ঠিত হবে ব্রিকস সম্মেলন। সুতরাং আগামী এক মাসে দুদেশের সম্পর্কের আরও অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা কম।
এ ধরনের পরিণতি কি যুদ্ধের দিকে গড়াচ্ছে, নাকি অবস্থার উন্নতির মাধ্যমে দু’পক্ষ আলোচনায় বসবে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মাদ জমির বলেন, ‘অক্টোবরে ভারতের গোয়াতে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে রাশিয়া ও চীনের প্রেসিডেন্ট অংশগ্রহণ করবেন। অন্তত এ সম্মেলন না হওয়া পর্যন্ত ভারত এমন কোনও কিছু করবে না, যাতে করে ব্রিকস সম্মেলন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘ব্রিকস সম্মেলন ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা একটি সফল অনুষ্ঠান করার বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক থাকবে এবং এর ফলে তারা সংযত আচরণ করবে।’
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে সংযত ব্যবহারের জন্য এবং দু’দেশের মধ্যে কাঠামোগত আলোচনা শুরু করতে আহ্বান জানিয়েছে ।
তিনি মনে করেন, ‘দুপক্ষ এখনও শ্যাডো বক্সিং করছে এবং সেখানে বড় আকারে যুদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ।’
একই মত পোষণ করে সাবেক রাষ্ট্রদূত মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দুদেশই পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী এবং দুপক্ষই চাইবে না বিষয়টি এমন কোনও দিকে মোড় নিক। যাতে করে এ ধরনের অস্ত্রের ব্যবহার হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘ভারতের ক্ষমতার পরিবর্তন একটি কাঠামোর মাধ্যমে হয়। কিন্তু পাকিস্তানের পরিবর্তন যে কোনও সময়ে হতে পারে।’ ফলে ভারত এক্ষেত্রে আরও বেশি সংযত আচরণ প্রদর্শন করবে বলে তিনি মনে করেন।
তার বিবেচনায় ট্র্যাডিশনাল অস্ত্রের দিক থেকে ভারত পাকিস্তানের চেয়ে শক্তিশালী এবং একটি বড় আকারের যুদ্ধ পাকিস্তানকে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে প্রলুব্ধ করতে পারে।
ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন সফলতার সঙ্গে অনুষ্ঠানের জন্য ভারত সংযত আচরণ করবে বলেও তিনি মনে করেন।
তিনি বলেন, ‘রাশিয়া ও চীনের রাষ্ট্রপ্রধান এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন এবং পাকিস্তান বিষয়টিও হয়তো অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে আলোচিত হতে পারে।’
তবে তার বিবেচনায় ভারত বিষয়টি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে আলোচনা করবে।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে উরি সেনাঘাঁটিতে এক সন্ত্রাসী হামলায় ১৮ জন সেনাসদস্য নিহত হন।
এরপর থেকে কূটনৈতিক বিবৃতি ও পাল্টা বিবৃতির পাশাপাশি শক্তি প্রয়োগের ঘটনাও ঘটেছে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, বুধবার রাতে নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ভারতের সেনারা পাকিস্তানের সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলোতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছে।
ওই অভিযানে ৯ পাকিস্তানি সেনা এবং ৩৫-৪০ জঙ্গি নিহত হয়েছে বলেও দাবি করা হয়।
সার্জিক্যাল স্ট্রাইক দিয়ে এমন সামরিক অভিযানকে বোঝানো হয় যে অভিযানে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর বাইরে আশপাশের অবকাঠামো কিংবা জনসাধারণ হামলার শিকার হয় না বলে দাবি করা হয়।
ঘটনার পর থেকে দুই সেনা সদস্য নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করে পাকিস্তান দাবি করে আসছে, এটি সার্জিক্যাল স্ট্রাইক ছিল না। সীমান্ত সংঘর্ষ বা আন্তঃসীমান্ত গোলাগুলির ঘটনা ছিল।
পাকিস্তান ভূখণ্ডে এ ধরনের অভিযান চালানো হলে একই কায়দায় এর জবাব দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় পাকিস্তানের পক্ষ থেকে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন