ভুল থেকে ফুল ফোটাবেন সৌম্য
টেস্ট ক্রিকেটের পালা শেষ। শুরু হচ্ছে ওয়ানডে সিরিজ। কেন যেন বাংলাদেশ দল মনে করে এই সংস্করণটাই তাদের সবচেয়ে চেনা চৌহদ্দি। তবে দেশের মাটিতে ইংল্যান্ডকে টেস্টে হারিয়ে শ্রীলঙ্কায় এসে শততম টেস্টে লঙ্কাজয়—বাংলাদেশের সামর্থ্যের পরিধিটা বেড়ে যাচ্ছে। সীমিত ওভারের ক্রিকেট দিয়ে মুশফিক-মাশরাফি-সৌম্যদের প্রতিভা বা সামর্থ্যকে সীমাবদ্ধ করে রাখার দিন শেষ হলো বলে!
সৌম্যর নামটি ইচ্ছে করেই তাঁর দুই অধিনায়কের সঙ্গে টেনে আনা। এই যে বাংলাদেশের বর্তমান দলটিকে নতুন প্রজন্মের স্পর্ধিত অহংকার বলে দেখা হচ্ছে, তার একটি প্রতীক সাতক্ষীরার এই তরুণ। ২০১৪ সালের শেষ লগ্নে বাংলাদেশ দলে অভিষেক। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ঘরের মাঠে। হাতে শট আছে, ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলেন।
জাতীয় দলে ক্যারিয়ার মাত্রই তিন বছরের। এরই মধ্যে মুদ্রার দুটি পিঠই দেখে ফেলেছেন। ২০১৫ সালে বিশ্বকাপ ক্রিকেট দিয়ে সেই যে সোনাঝরা দিন এল, সেটি বয়ে গেল প্রায় গোটা বছর। ২০১৬ সাল তাঁকে দেখিয়েছে দুঃসময়ের কদর্য চেহারা। দল থেকে বাদও পড়তে হয়েছে। গত নিউজিল্যান্ড সফর থেকেই যেন সময় আবার তাঁর দিকে মুখ ফিরে চেয়েছে। ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে করলেন ৮৬ রান, ঘরোয়া-আন্তর্জাতিক যেকোনো ধরনের ক্রিকেটেই ১৯ ম্যাচ পর তাঁর প্রথম ফিফটি।
সেই সৌম্য শ্রীলঙ্কা সফরে দুই টেস্টের প্রথম তিন ইনিংসে পেয়ে গেলেন তিন ফিফটি—৭১, ৫৩, ৬১। তারপরও সমালোচনা থেকে নিষ্কৃতি পাচ্ছেন না। মুক্তির ডানাটাকে কেন আরও মেলে ধরতে পারছেন না, নিজেও সেটির উত্তর খুঁজছেন। অর্থাৎ কেন ইনিংসগুলোকে বড় করে তুলতে পারছেন না!
গল টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষে এসে আকুল কণ্ঠে বলেছিলেন, ‘চেষ্টা করছি ইনিংসগুলো বড় করতে। কিন্তু হচ্ছে না। আপ্রাণ চেষ্টা করছি, পারছি না। এরপর ফিফটি পেলে অবশ্যই সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করব।’
না, দ্বিতীয় ইনিংসেও ফিফটি করে তিন অঙ্কে যেতে পারেননি। খুব যে বাজেভাবে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন তা নয়, শট নির্বাচন ঠিকমতো হয়নি। পরিস্থিতির দাবি মেনে শট খেলেননি, এই আর কি! কলম্বো টেস্টেও একই অবস্থা। এখানে করলেন ৬১ ও ১০ রান।
যে ওয়ানডে দিয়ে সৌম্যকে চিনেছে বাংলাদেশ, আবার সেই ওয়ানডে সিরিজ দুয়ারে। সৌম্যর ব্যাটে রান দেখা যাবে তো? কাল প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে অনুশীলন করতে এসে বাঁহাতি ওপেনার তাঁর সর্বোচ্চ আশাটাই জানিয়ে গেলেন, ‘টেস্টে মোটামুটি রানের মধ্যে আছি। আশা করি, ওয়ানডেতেও ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারব।’ কিন্তু ইনিংসগুলো যে বড় হচ্ছে না! ওয়ানডেতেও এমন ধারা বজায় থাকলে দলের ওপর চাপ পড়বে না?
সৌম্য যেন ফিরে গেলেন গলের সেই বিকেলে, ‘দেখুন, আমি সব সময়ই চেষ্টা করে যাচ্ছি। কেউ তো ইচ্ছে করে ওভাবে আউট হয় না। আমি চাইব পেছনের ভুলগুলো যেন আর না হয়।’
আসলেই এই ভুলগুলো করা যাবে না। ভুল থেকে ফুটিয়ে তুলতে হবে ফুল। বাংলাদেশ যখন পি সারায় ইতিহাস গড়ে টেস্ট সিরিজেই শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ড্র করেছে, তাহলে তো ওয়ানডে সিরিজে জয়ের সম্ভাবনাই বেশি। একে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের তুলনায় বেশ অনভিজ্ঞ, নতুন পাঁচ ক্রিকেটার ঢোকায় শ্রীলঙ্কাকে আরও অনভিজ্ঞ লাগছে। এক সাংবাদিক আশার তারটিকে উঁচুতে বেঁধে নিলেন, ‘তিন ম্যাচেই জয় আসবে না?’
সৌম্য এবার খাটো লেন্থের টার্নিং বল তুলে মারলেন না, সৌম্যশান্ত জবাব তাঁর, ‘প্রতিপক্ষকে আমরা নরম ভেবে নামব না। ওদের যথেষ্টই শক্তিশালী ভাবছি। তবে আমরা যদি সঠিকভাবে নিজেদের কাজগুলো করতে পারি, অবশ্যই সম্ভব।’
শ্রীলঙ্কা ওয়ানডেতে কেমন করতে পারে সেটির একটু আঁচ পাওয়া যেতে পারে আজকের প্রস্তুতি ম্যাচে। সীমিত ওভারের পাঁচটি ম্যাচের আগে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচটি হবে কলম্বো ক্রিকেট ক্লাবে (সিসিসি)। টিম ম্যানেজমেন্টের কাছ থেকে যা ইঙ্গিত মিলেছে, বাংলাদেশ দলে খেলছেন না সাকিব, তামিম, মোস্তাফিজ ও শুভাশিস।
প্রস্তুতি ম্যাচেও ভালো করতে চান সৌম্য। একে তো লাল বল ছেড়ে সাদা বলের খেলা। তার ওপর টানা পাঁচটি টেস্ট খেলার পর একদিনের ক্রিকেট একটু আড়ালে পড়ে আছে। হোক প্রস্তুতি ম্যাচ, সৌম্য এ ম্যাচ দিয়েও শ্রীলঙ্কাকে দেখিয়ে দিতে চান নিজের মানসিক প্রস্তুতি। শুধু সৌম্য কেন, দলের সবারই এটি মনের কথা।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন