ভেতরের ছবি নিয়ে প্রশ্ন: আর্টিজান রেস্তোরাঁর ‘আইএসের’ ভিডিওতে
গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলাকারী পাঁচ যুবকের যে ভিডিও চিত্র প্রকাশ করা হয়েছে সেটি ধারণ করা হয়েছে হামলার আগেই। তবে ভিডিওচিত্রে আর্টিজানে কমান্ডো অভিযানের পর ভেতরের কিছু ছবিও ব্যবহার করা হয়েছে। অথচ তখন আইনশৃঙ্খলা বা নিরাপত্তা বাহিনী ছাড়া সেখানে কেউ যেতে পারেনি।
এ কারণেই প্রশ্ন উঠেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সূত্র থেকে এই ছবি জঙ্গিদের কাছে গিয়েছে কি না।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক নূর খান বলেন, ‘ওই সময়ে গুলশান এলাকায় আমি ছিলাম না, তাই এ ব্যাপারে মন্তব্য করা কঠিন। তবে হামলার পরের অংশের ভিডিওটি আইএস প্রকাশ করলে এটা উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো বিষয়।’
গত ১ জুলাই হলি আর্টিজানে হামলা করে ১৭ বিদেশিসহ মোট ২২ জনকে হত্যা করে পাঁচ যুবক। এই ঘটনার প্রায় তিন মাস পর বৃহস্পতিবার তাদের দাফন করে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম। এরপর জঙ্গি সংগঠন আইএসের পক্ষ থেকে পাঁচজনের বক্তব্যসহ একটি ভিডিও চিত্র প্রকাশের কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্রের জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সাইট ইন্টিলিজেন্স গ্রুপ।
এই ভিডিওচিত্রে আইএসের পক্ষে বেশ কিছু বক্তব্য প্রচারের পাশাপাশি হামলাকারী রোহান ইমতিয়াজ, নিবরাস ইসলাম, শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল, খায়রুল ইসলাম পায়েলের বক্তব্য আছে যেখানে তারা বিদেশিদেরকে হত্যা করতে আসার কথা জানিয়েছেন।
পূর্বে ধারণ করা এসব বক্তব্যের পাশাপাশি ভিডিওতে হলি আর্টিজানে কমান্ডো অভিযানের পর নিহতদের মরদেহ পড়ে আছে এমন একটি দৃশ্য দেখানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি বাংলা এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যাতে বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সাংবাদিক তাসনিম খলিলের একটি মন্তব্য প্রকাশ হয়েছে। তিনি বলেছেন, এই ছবিটি যখন তোলা হয়েছে তখন হলি আর্টিজানের ভেতরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া কারও ঢোকার সুযোগ ছিল না।
তাসনিম খান বলেন, ‘এই ধরনের ভিডিও সাধারণত বাংলাদেশের নিরাপত্তাবাহিনী করে এমন ঘটনাগুলোর পরে। তো সেটা আইসিসের ভিডিওতে কিভাবে এলো, সেটা একটা রহস্য।’
ফলে প্রশ্ন উঠেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ এই ছবি পাচার করেছে কি না। নিরাপত্তা বাহিনীতেও জঙ্গিদের কোনো রকম যোগাযোগ আছে কি না।
এই ভিডিও প্রকাশের খবর বের হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া রাজধানীর একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চান, আর্টিজানে জঙ্গিদের হত্যার পর ভেতরের দৃশ্য কীভাবে বাইরে গেল। কিন্তু জবাব মেলেনি। এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘অনেক কথা বলেছি, এখন গেলাম।’
জঙ্গি তৎপরতায় নাটের গুরু হিসেবে যাদেরকে শনাক্ত করা হয়েছে তাদের একজন সাবেক চাকরিচ্যুত সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল হক। আবার আর্টিজান হামলাকারীদের প্রশিক্ষক হিসেবে যাকে শনাক্ত করা হয়েছে সেই জাহিদুল ইসলামও সেনাবাহিনী থেকে অবসরে গিয়ে জঙ্গিবাদে জড়ান।
সরকারি চাকরিরত অবস্থাতেও আরও বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদে জড়ানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ক্ষেত্রে ধরাই যেতে পারে, উগ্রবাদে জড়ানো সব সরকারি কর্মী এখন পর্যন্ত আটক হননি। এ কারণেই প্রশ্ন উঠেছে সরকারি কোনো কর্মীই এই ছবি জঙ্গিদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে কি না।
আর্টিজানের ভেতরে অভিযানের পর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ভেতরের ছবি কীভাবে বাইরে গেল, জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখার অতিরিক্ত উপকমিশনার ইউসুফ আলীও কিছু বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমার স্যার এ ব্যাপারে কোনো কথা বলেননি সেহেতু আমারও এ বিষয়ে কোনো কমেন্ট নেই।’
জানতে চাইলে নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘দেখতে হবে আশেপাশের বাড়ি থেকে কেউ ভিডিও করেছে কি না। কোনো বাড়ির ছাদ থেকে বা জানলা দিয়ে বা কোনো গ্যারেজের ভেতর থেকে এই ভিডিওচিত্র ধারণ করতে পারে। তবে এটা খতিয়ে দেখা উচিত।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পদ হারালেন গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলেরবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল গ্রেপ্তার
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে রাজধানীরবিস্তারিত পড়ুন