ভোলায় ঐতিহ্যবাহী খেঁজুর গাছ এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে !
মাসুদ রানা, ভোলা প্রতিনিধি: দ্বীপ জেলা ভোলায় এক সময়ের সারিবদ্ধভাবে নয়নজুড়ানো খেঁজুর গাছ চোখে পড়তো রাস্তার পাশে, পুকুর পাড়ে ও কৃষি জমির পাশে। একদিকে ইটভাটা আরেকদিকে জলবায়ুর বিরুপ প্রভাবের কারণে বিলুপ্ত প্রায় ভোলার শত শত বছরের ঐতিহ্যবাহী পরিবেশ বান্ধব খেঁজুর গাছ। বর্তমানে এ জেলার বোরহানউদ্দিন, দৌলতখান, তজুমদ্দিন, লালমোহন, চরফ্যাশন ও মনপুরায় বলতে গেলে এখন আর খেঁজুর গাছ দেখাই যায় না।
আজকের নতুন প্রজন্মের অনেকেই খেঁজুর রসের স্বাদটা কি রকম তা জানেও না । কয়েক বছর আগেও খেঁজুর রসের জন্য শিয়ালীদেরকে (যে কাছ কাটে) দুই তিন দিন আগে থেকেই বলে রাখতে হতো। যাদের খেঁজুর গাছ ছিল না তারাও খেঁজুর গাছ থেকে বঞ্চিত হতো না। খেঁজুর রসের মৌসুম আসলেই শিয়ালীদের আনন্দের সীমা থাকতো না। এ মৌসুমে অনেক শিয়ালী গাছ ছাটাই করেই রস সংগ্রহ করে সে রস অথবা রস দিয়ে মিঠাই তৈরি করে বিক্রি করত। আর সেই বিক্রির টাকায় সুখ-সাচ্ছন্দে সংসার চালাতে পারতো। এসব শিয়ালীদের নিজস্ব খেঁজুর গাছ না থাকলেও গাছ মালিকদেরকে সংগৃহীত রসের একটা অংশ প্রদান করতে হতো। শীতকালীন মৌসুম আসলেই খেঁজুর রস দিয়ে রসের নাস্তা আর ভাপা পিঠার ধুম পরে যেত। সে সময় খেঁজুর রস ছিল সহজলভ্য। নতুন মেহমান আসা মানেই খেঁজুর রস আর ভাপা পিঠা দিয়ে আপ্যায়ন।
বোরহানগঞ্জ বাজারের ইমরান করিম সোহাগ বলেন, এ মৌসুম এলেই আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে শিয়ালীদের ফাঁকি দিয়ে খেঁজুর রস চুরি করে রাত জেগে রসের নাস্তার আয়োজন করতাম, এখন টাকা দিয়েও খেঁজুর রস খেতে পারি না । জেলার বোরহানউদ্দিনের বড়মানিকা ইউনিয়নের মো. রফিজল হক বলেন, গত কয়েক মৌসুমে ৪০-৫০ টা গাছ ছাটাই করতাম । সম্প্রতি অধিকাংশ গাছ মরে যাওয়ায় এ মৌসুমে সামান্ন কিছু গাছ ছাটাই করা সম্ভব নয় । এ দিকে খেঁজুর গাছের দহণ ক্ষমতা অনেক বেশী হওয়ায় ভোলা জেলার অধিকাংশ ইটভাটাগুলোতে খেঁজুর গাছ পোড়ানো হয়।
জানা যায় যে, ভোলা জেলায় প্রায় ৭০টি ইটভাটা রয়েছে। অধিকাংশ ইটভাটায় কয়লা দিয়ে পোড়ানোর কথা থাকলেও কয়লার পরিবর্তে কাঠ, এমনকি ভোলার পরিবেশ বান্ধব খেঁজুর গাছ পোড়ানো হচ্ছে। এভাবে খেঁজুর গাছ পোড়ানো হলে আগামী কয়েক বছরে সু-স্বাধু এবং ঘণপাকা রস মাসের পর মাস রেখে খাওয়ার সুযোগ রয়েছে কি? চিন্তাশিল ব্যাক্তি মাত্রই এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন। এখনো পরিকল্পিত উপায়ে বাগান করে খেঁজুর গাছ বিলুপ্তি রোধ করার পাশাপাশি ইটভাটাগুলোতে খেঁজুর গাছ যাতে না পোড়ানো হয় সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সু নজর কামনা করছে অনেক সচেতন মহল।
এব্যপারে বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তর বিভাগের পরিচালক সুকুমার বিশ্বাসের সাথে আলাপকালে আমাদের কন্ঠরকে জানান, ইটভাটায় জ্বালানি কাঠ পোড়ানো একে বারেই নিষেধ। যে সকল ইটভাটায় এ গুলো করার চেষ্টা করছে আমরা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তি সহ জরিমানা আদায় করছি এবং মোবাইল কোর্ট অব্যাহত রয়েছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
স্ত্রী হত্যায় ছাত্রলীগ নেতা রুবেল কারাগারে
ভোলার লালমোহনে মাহমুদা মেহের তিথি হত্যা মামলার প্রধান আসামি ছাত্রলীগবিস্তারিত পড়ুন
ভোলায় কিশোরীকে আটকে রেখে টানা ৩ দিন ধরে গণধর্ষণ!
ভোলার লালমোহনে এক কিশোরীকে আটকে রেখে টানা তিনদিন ধরে গণধর্ষণবিস্তারিত পড়ুন
ভোলায় কালবৈশাখী ঝড়ে কলেজ ছাত্রাবাস ধুমড়ে মুচড়ে গেছে, আহত-১০
কামরুজ্জামান শাহীন, ভোলা প্রতিনিধি| ভোলার মনপুরায় প্রচন্ড কালবৈশাখী ঝড় ওবিস্তারিত পড়ুন