সোমবার, নভেম্বর ২৫, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

মক্ষীরানিরা সব কোথায় গেলেন?

‘মক্ষীরানি’-রা অবস্থান করতেন যৌবনের একটা ধূসর উপান্তরেখায়। আর তাঁরা অতি অবশ্যই ছিলেন বিবাহিতা। তাঁদের স্বামী নামক জীবটির অবস্থান ছিল বেশ খানিকটা অনচ্ছ প্যাটার্নের একটা অঞ্চলে।

রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত জানতেন। ‘ঘরে বাইরে’-তে তার প্রমাণ রেখেছিলেন। সন্দীপ বিমলাকে ওই নামেই ডেকেছিল। কিন্তু আজকের বাঙালি কি জানে, এই বাংলা বাজারে ‘মক্ষীরানি’ বলে একটা টার্ম ঘপাঘপ ড্রপ খেত এই সেদিন পর্যন্ত? কোনও ইনুয়েন্ডো-য় যাওয়ার আগে জেনে নেওয়া দরকার, কারা ছিলেন এই ‘মক্ষীরানি’? কী ছিল তাঁদের সমাজিক অবস্থান? আর কী এমন ঘটল যে তাঁরা ডোডো পাখির মতো এক্সটিংক্ট করে গেলেন?

পশ্চিমবঙ্গে শহর-মফস্‌সল নির্বিশেষে ‘মক্ষীরানি’ নামক এক প্রকার স্ত্রী-প্রাণী রমরম করতেন তিন দশক আগেও। তাঁদের সামাজিক অবস্থান, তাঁদের ঘিরে গড়ে ওঠা সাবকালচার, সেই উপ-সংস্কৃতির গাড্ডায় পড়ে হারিয়ে যাওয়া কৈশোর-যৌবনকে একটা ট্রিবিউট দিতে গিয়ে প্রথমেই মাথায় ঝিলিক দেয় তপন সিংহের ‘রাজা’ ছবির কথা। ১৯৭৫-এ মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবির পটভূমিকা ছিল এক মফস্‌সল শহর। ১৯৭০ দশকে ঘটে যাওয়া জনপদ-পতনের এক অমোঘ আখ্যান ছিল ‘রাজা’। সেই শহরে বাসরতা এক মহিলাকে ঘিরে অনেকটাই আবর্তিত হয়েছিল চিত্রনাট্য। এই মহিলা দেহপোজীবিনী নন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে আদিমতম পেশার একটা আবছা যোগ ছিলই। কলকাতার কিছু মধুচক্রে তিনি মেয়ে সাপ্লাই করতেন। ’৭০ দশক একদিকে যখন ‘মুক্তির দশক’ হিসেবে ঘোষিত হচ্ছে, ‘গ্রাম দিয়ে শহর ঘেরা’-র স্বপ্নে রাত জাগছেন একটা বড় অংশের যুবক-যুবতী, ঠিক তখনই কলকাতা আর মফস্‌সলে গজিয়ে উঠেছে ‘মাসাজ পার্লার’, রিমঝিম হোটেলের ঘরে প্রবেশ করেছে একের পরে এক অভাব-তাড়িত পরিবার থেকে আসা তরুণীর দল। সে খুব গোলমেলে এক সময়।

মধুচক্র আর মাসাজ পার্লার, হোটেলের ঘরে ‘এসকর্ট’ প্রেরণ, বাড়িতে হালকা আড্ডার আসর বসানো ইত্যাদি একটা বড় সময় ধরেই পশ্চিমবঙ্গের সাবকালচারের একটা সিগনেচার হয়ে থেকে গিয়েছিল। আর এই সব কর্মকাণ্ডের পিছনে সর্বদাই সক্রিয় থেকেছিল একজন মহিলার উপস্থিতি। তাঁকেই সমাজ ‘মক্ষীরানি’ বলে চিহ্নিত করত। সামাজিক অভিভাবকরা কমবয়সিদের কড়া নির্দেশ দিতেন এঁদের এড়িয়ে চলার। বাবা-খুড়া-জ্যাঠামহাশয় তীক্ষ্ণ নজর রাখতেন সদ্য-যুবকরা যাতে ‘মক্ষীরানি’-র পাল্লায় না-পড়ে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সেই সব ধোঁয়াটে বয়স বেঁকে যেত ‘মক্ষীরানি’-র ডেরার দিকেই। ফিজিক্যালি না-হলেও সাইকোলজিক্যালি ‘মক্ষীরানি’-রা অধিকার করে থাকতেন সবুজাভ মগজের মেমরি সেল। তৈরি হত কিংবদন্তি, তৈরি হত নতুন নতুন রূপকথা।

‘মক্ষীরানি’-রা অবস্থান করতেন যৌবনের একটা ধূসর উপান্তরেখায়। আর তাঁরা অতি অবশ্যই ছিলেন বিবাহিতা। তাঁদের স্বামী নামক জীবটির অবস্থান ছিল বেশ খানিকটা অনচ্ছ প্যাটার্নের একটা অঞ্চলে। তাঁরা ‘হেন পেক্‌ড’ নাকি ‘কাকোল্ড’, তাই নিয়ে জল্পনা চলত চায়ের দোকানে, ফুটবল মাঠের খেলাশেষের ঘনিয়ে ওঠা সাঁঝের ঝুপসিতে, লোড-শেডিংয়ের নিরালা আঁধারে। ‘মক্ষীরানি’-রা সেই সমস্ত কথা জানতেন। শহরের পথে রিকশ-বাহিনী হয়ে বিহার করার সময়ে তিরছি নজরে মেপে নিতেন চায়ের দোকান, বটতলা ইত্যাদি গসিপ সেন্টার। তাঁরা জানতেন, রিকশ সেই সব পয়েন্ট অতিক্রম করে গেলেই শুরু হবে গুঞ্জন। সেই গুঞ্জন শ্রমিক মৌমাছিদের কাতর কামশব্দ। সেই গুঞ্জন ‘কী পাইনি তারি হিসাব মেলানো’-র হাহাকার। ‘মক্ষীরানি’-রা সব জানতেন। তাঁরা জানতেন, তাঁদের উপস্থিতিই এই জনপদে বয়ঃসন্ধিকে সম্ভব করে তোলে। তাঁদের ঠোঁটর কোণে লেগে থাকা লিপস্টিকের রঙ ছুঁয়ে যায় ফ্রক থেকে সদ্য শাড়িতে উত্তীর্ণ হওয়া কিশোরীর ‘স্বাধীনতাহীনতা’-র দীর্ঘশ্বাস। তাঁরা জানতেন। স—ব জানতেন।

কিন্তু বিশ্বায়ন এসব জানত না। কামশব্দের অস্ফূটকে সে অক্ষুত রাখতে চায়নি কোথাওই। না শহর, না মফস্‌সল। নেট-স্যাভি প্রজন্মের কাছে ‘মক্ষীরানি’-দের তো কোনও প্রয়োজনই নেই। ডেটিং সাইট, ফেসবুক বৌদি, ভারচুয়াল আন্টি— এই সবের চক্করে হারিয়েই গেলেন ‘মক্ষীরানি’-রা। উধাও হয়ে গেল মফস্‌সল শহরে আধা-নিষিদ্ধ সেই সব বাড়ি। উধাও হয়ে গেলেন ‘মক্ষীরানি’-দের সঙ্গী ‘সেবক’-কাটিং পুরুষ আর মেনিমুখো স্বামীর দল।

চায়ের দোকানের বেঞ্চিতে, সন্ধের ফুটবল মাঠে, সেলুনের মেঝেতে পড়ে থাকে ‘মক্ষীরানি’-র দু’খানি ফিনফিনে ডানা। সময়ের চাপে ডিকম্পোজ হতে থাকে সে দু’টো। তার পরে একদিন মিলিয়ে যায়। কোনও ফসিলও থাকে না। থাকার কথাও নয় বোধহয়…

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

মানবদেহে আদার অনেক উপকার

আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন

হোটেল ঘরে বিছানার চাদর সাদা হয় কেন ?

বেড়াতে গিয়ে হোটেলের ঘরে ঢুকে প্রথম যে বিষয়টি নজরে আসে,বিস্তারিত পড়ুন

ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ

চিকিৎসকদের মতে, ধনে বা ধনিয়া একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেকবিস্তারিত পড়ুন

  • ওজন কমাতে যা খাওয়া যেতে পারে
  • প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রসুন
  • আমলকি কখনো স্বাস্থ্যের জন্য ‘বিপজ্জনক’ হয়ে ওঠে
  • বাসি দই ও পান্তা ভাতের আশ্চর্যজনক উপকারিতা
  • স্বাদে ও পুষ্টিগুণে ভরপুর সবজি হলো লাউ
  • মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে তাপমাত্রার পারদ উঠল ৪৩ ডিগ্রিতে
  • যেসব অঞ্চলে টানা ৩ দিন ঝড়বৃষ্টি
  • ২৪ ঘণ্টা না যেতেই ফের কমলো স্বর্ণের দাম
  • গরমে চুলের যত্ন নেবেন কীভাবে?
  • একলাফে সোনার দাম ভ‌রিতে কমলো ৩১৩৮ টাকা
  • কত দিন পর পর টুথব্রাশ বদলাবেন?
  • ত্বকের দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়