মঞ্চ প্রস্তুত তবুও বিলম্বিত ফাঁসি
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ এখনো প্রাণভিক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেননি। তারা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন না করার সিদ্ধান্ত দিলে সেই সিদ্ধান্ত কারা কর্তৃপক্ষ জানার পর যেকোনো সময় ফাঁসি কার্যকর করা সম্ভব। তবে এখন পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্তের বিষয়টিই ঝুলে রয়েছে।
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ প্রাণভিক্ষার জন্য আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শের দাবি জানালে সরকার পক্ষ থেকে বলা হয়, সুযোগ নেই। এরপরই ফাঁসির বিষয়টি ঝুলে যায়। শীর্ষ দুই যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি কার্যকরের জন্য শুক্রবার দিনভর প্রস্তুতি নেওয়া হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন না হওয়ায় তাদের ফাঁসি হয়নি। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শীর্ষ কর্মকর্তারা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের হয়ে আসেন।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার সূত্রে জানানো হয়, রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা করবে কি না সে বিষয়ে দুই যুদ্ধাপরাধী কিছু জানায়নি। এ কারণে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া যাচ্ছে না। সব তৈরি করা আছে। সিদ্ধান্ত হলে অল্প সময়ের মধ্যেই তা বাস্তবায়ন করা যাবে।
বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর ফাঁসি হবে এ লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় কারাগারে নানা ধরনের পরীক্ষার পর মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়। তৈরি থাকতে বলা হয় জল্লাদকে। তওবা পড়ানোর জন্য কারা মসজিদের ইমামকে অপেক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়। দুপুরে দুই আসামির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। এর আগে কারা কর্তৃপক্ষ নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন। কারাগারের শীর্ষ কর্মকর্তারা ফাঁসির মঞ্চ ঘুরে দেখেন। রাতেই ফাঁসি কার্যকর হতে যাচ্ছে- এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে। রাত ৯টার কিছু পর পাল্টে যায় দৃশ্যপট। হঠাৎ করেই কারাগারের ভেতরে যাওয়া কর্মকর্তারা বের হয়ে আসেন। ফাঁসি নিয়ে নানা গুঞ্জনের সমাপ্তি ঘটে।
এদিকে সাকা ও মুজাহিদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য কেন্দ্রীয় কারাগারের গেটে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেন তাদের আইনজীবীরা। কিন্তু তারা ঊর্ধ্বতন কারা কর্মকর্তাদের সাক্ষাত পাননি। রাতে সাকার ছেলেসহ আইনজীবীরা কারাগারের সামনে যান। সাকা চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, ক্ষমা চাইবেন কি না সে ব্যাপারে তার বাবা আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন। এ কারণে তারা আইনজীবী নিয়ে আসেন। কিন্তু কারা প্রশাসন ভেতরে যাওয়ার অনুমতি না দেওয়ায় তারা ফিরে যান।
মুজাহিদের আইনজীবী সাইফুর রহমান বলেন, ‘আমরা গত বৃহস্পতিবারই দেখা করার জন্য আবেদনপত্র জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের দেখা করতে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। কেন দেওয়া হলো না, তার কোনো কারণও উল্লেখ করেনি কারা কর্তৃপক্ষ।’
আইনজীবীদের দেখা করতে না দেওয়া এবং গত বৃহস্পতিবার মুজাহিদের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে আজ শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করবেন মুজাহিদের মেজো ছেলে আলী আহমেদ মাবরুর। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে তারা সংবাদ সম্মেলন করবেন।
ফাঁসি কার্যকরের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রাখা হয়েছে। ফাঁসির মঞ্চ, দড়ি, জল্লাদ, চিকিৎসক সবই প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত করার পরও শুক্রবার রাতে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে দ-িত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হয়নি। বুধবার প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির বেঞ্চ আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রায়ের কপি ট্রাইব্যুনালে পৌঁছালে তা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। সেখানে দুজনকে রায় পড়ে শোনানো হয়। ফাঁসি কার্যকরের জন্য বাকি থাকে শুধু রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদনের বিষয়টি। তারা প্রাণভিক্ষা চাইবেন কিনা শুক্রবার রাত দশটা পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত দেননি।
এদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, তারা আবেদন না করলে বা রাষ্ট্রপতির অনুকম্পা না পেলে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করবে কারা কর্তৃপক্ষ।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন