মধ্যরাতের আরো কাছে পৌঁছে গেল কেয়ামত, ধ্বংসের মুখে পৃথিবী
মধ্যরাতের আরো কাছে পৌঁছে গেল কেয়ামতের ঘড়ি’র কাঁটা। ধ্বংসের থেকে আর মাত্র আড়াই মিনিট দূরে পৃথিবী। ধ্বংস-ঘড়ির কাঁটা এখন রাত ১১টা ৫৭ মিনিট ৩০ সেকেন্ডে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ঘড়ির কাঁটা আর ২ মিনিট ৩০ সেকেন্ড এগোলেই সম্পূর্ণ সভ্যতা মুছে যাবে। গত ৫৭ বছরের মধ্যে এ বছরই কেয়ামতের ঘড়ি’র কাঁটা ধ্বংসের ক্ষণের এত কাছে পৌঁছল। এর জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ‘বুলেটিন অব অ্যাটমিক সায়েন্টিস্টস’-এ এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
কেয়ামতের ঘড়ি’র কাঁটা একটি প্রতীকী ঘড়ি। আমেরিকার শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে বুলেটিন অব অ্যাটমিক সায়েন্টিস্টস-এর দফতরের দেয়ালে এই প্রতীকী ঘড়ি ঝোলানো থাকে। পৃথিবীকে ঘিরে ঘনিয়ে ওঠা নানা বিপদের মাত্রা অনুযায়ী চলাফেরা করে কেয়ামতের ঘড়ি’র কাঁটা। এই ঘড়িতে রাত ১২টা বাজার অর্থ হল পৃথিবীর ধ্বংস।
পরমাণু বিজ্ঞানীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ডুমসডে ঘড়ির কাঁটা এখন রাত ১১টা বেজে ৫৭ মিনিট ৩০ সেকেন্ডে অবস্থান করছে। ১৮ জন নোবেলজয়ীকে নিয়ে গঠিত বুলেটিন অব অ্যাটমিক সায়েন্টিস্টস-এর ক্লক প্যানেল। এই প্যানেলই নির্ধারণ করে, কেয়ামতের ঘড়ি’র কাঁটা ঠিক কোথায় থাকবে। ১৯৪৭ সাল থেকেই এই প্রথা চলে আসছে।
১৯৫৩ সালে ঘড়ির কাঁটা মধ্যরাতের সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল- ১১টা ৫৮ মিনিটে। সে বছর সোভিয়েত রাশিয়া হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটায়। আমেরিক তার পাল্টা থার্মোনিউক্লিয়ার বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। ধ্বংসাত্মক অস্ত্রের বিস্ফোরণ এবং পাল্টা বিস্ফোরণে পরিস্থিতি যেভাবে উত্তপ্ত হয়েছিল, তার প্রেক্ষিতেই সে বছর কেয়ামতের ঘড়ি’র কাঁটা মধ্যরাতের খুব কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা।
আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বদলাতে থাকায় সেই কাঁটা আবার পেছোতে পেছোতে ১৯৯১ সালে ১১টা ৪৩ মিনিটে চলে আসে। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ফের ঘোর বিপদের পথে বলে মনে করছেন পরমাণু বিজ্ঞানীরা।
তাই ধ্বংস-ঘড়ির কাঁটাকে গত বছরই রাত ১১টা ৫৭ মিনিটে পৌঁছে দেয়া হয়েছিল। এবার মধ্যরাতের দিকে আরো ৩০ সেকেন্ড এগিয়ে গেল পৃথিবী। ঘড়ির কাঁটা মধ্যরাতের দিকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত কেন, সে ব্যাখ্যাও দিয়েছে ‘বুলেটিন অব অ্যাটমিক সায়েন্টিস্টস’।
আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্কের অবনতি, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি, উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্রের হুঙ্কার, সঙ্গে বিশ্ব উষ্ণায়ন- এই সব কিছু মাথায় রেখেই বিজ্ঞানীরা মনে করেছেন, ২০১৬ সালে পৃথিবী তার ধ্বংসের আরো কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
তবে এই সবক’টি সূচকই কিন্তু ২০১৫ সালেও বিদ্যমান ছিল। তার ভিত্তিতেই ঘড়ির কাঁটা তিন বছর অপরিবর্তিত অবস্থানে থাকার পর ২০১৬ সালের শুরুতে তাকে এগিয়ে দেয়া হয় ১টা ৫৭ মিনিটে। গত এক বছরে পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়কেই বিজ্ঞানীরা সবচেয়ে বিপজ্জনক ঘটনা বলে মনে করছেন। এই সব কিছুর ভিত্তিতেই ২০১৭ সালের শুরুতে বিজ্ঞানীদের ঘোষণা, ধ্বংস-ঘড়ি এখন মধ্যরাত থেকে মাত্র আড়াই মিনিট দূরে।
বুলেটিনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা আরো বাড়িয়ে তুলেছে। ট্রাম্পের বিভিন্ন মন্তব্য পৃথিবীকে এতটাই উত্তপ্ত করে তুলেছে যে ঘড়ির কাঁটাকে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে দিতেই হল।
বুলেটিন অব অ্যাটমিক সায়েন্টিস্টস-এর পক্ষে থিয়োরিটিক্যাল ফিজিসিস্ট লরেন্স এম ক্রস এবং প্রাক্তন রিয়ার অ্যাডমিরাল ডেভিড টিটলি নিউইয়র্ক টাইমসে লিখেছেন, ‘আগে কখনো একজন ব্যক্তির মন্তব্যের কারণে ঘড়ির কাঁটাকে এতটা এগিয়ে দেয়া হয়নি। কিন্তু ব্যক্তিটি যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট, তখন তার মন্তব্য অবশ্যই প্রভাব ফেলে।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন