“মনে হচ্ছে, রামপাল প্রকল্পের বিরোধীতাকারীদের যেভাবেই হোক রুখতে হবে”
বাংলাদেশে সুন্দরবনের কাছে রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের বিরোধিতা করে আয়োজিত এক সাইকেল র্যালী সরকার সমর্থিত ছাত্রলীগ পণ্ড করে দিয়েছে বলে আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করছেন।
গত বেশ কিছুদিন ধরেই রামপাল প্রকল্পের বিরোধীরা বলছে কয়লা-ভিত্তিক এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ হলে সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষতি হবে।
কিন্তু এ ধরনের বক্তব্য নাকচ করে দিয়ে সরকার বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটেই আজ রামপাল প্রকল্প বিরোধীদের উপর হামলার অভিযোগ উঠল।
সাইকেল র্যালীর জন্য সকাল দশটার দিকে প্রায় শ’দুয়েক প্রতিবাদকারী ‘ সুন্দরবন বাঁচাও সাইকেল র্যালী’র’ ব্যানারে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হয়। এদের বেশিরভাগই বিভিন্ন বামপন্থী সংগঠনের নেতা-কর্মী বা সমর্থক।
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হল থেকে অনেকে এসে রামপাল প্রকল্পের পক্ষে নেয়।
অভিযোগ রয়েছে, যারা রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন, তারা সরকার দলীয় সংগঠন ছাত্রলীগ সমর্থিত।
সাইকেল র্যালীর অন্যতম উদ্যোক্তা জাকারিয়া হোসেন অনিমেষ অভিযোগ করছেন ছাত্রলীগের নির্দেশেই তাদের উপর হামলা হয়েছে।
মি: অনিমেষ বলেন, ” তারা (ছাত্রলীগ) পুরো শহীদ মিনার অবরুদ্ধ করে ফেলে। আমরা সেখান থেকে বের হতে চাইলে তারা আমাদের বের হতে দেয় না। বের হবার সময় তারা আমাদের উপর প্রথম দফা হামলা চালায়।”
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিপক্ষে গত প্রায় দুই বছর যাবত বিভিন্ন বামপন্থী সংগঠন আন্দোলন করছে। সম্প্রতি অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিও এ প্রকল্পের বিপক্ষে কথা বলছে।
কিন্তু সরকার পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছে যে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে তারা পিছ পা হবেনা। যারা এর বিরোধিতা করছে তাদের আন্দোলনের কোন যুক্তি দেখছে না সরকার।
আজ হামলায় র্যালীতে অংশ নিতে আসা বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন এদের একজন হাসিব মো: আশিক অন্যতম। তিনি বলছেন রামপাল প্রকল্পের বিরুদ্ধে সরকার নূন্যতম সমালোচনাও সহ্য করতে চায় না বলে তাদের মনে হচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করছেন, এ প্রকল্পের বিরোধীতাকারীদের ‘দমন’ করার নীতি গ্রহণ করেছে সরকার।
মি: আশিক বলেন, ” মনে হচ্ছে, রামপাল প্রকল্পের বিরোধীতাকারীদের যেভাবেই হোক রুখতে হবে। এ নীতিতে তারা (সরকার) এক পায়ে দাঁড়ানো।”
রামপাল প্রকল্পের বিরোধীতাকারীদের কঠোর সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারের এ কঠোর মনোভাবের কারণেই ছাত্রলীগ এ হামলা চালিয়ে সমাবেশ পণ্ড করেছে বলে অভিযোগ উঠছে।
কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান দাবী করছেন এ হামলার সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই।
তিনি আরো দাবী করেন, শুক্রবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে যারা রামপাল প্রকল্পের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী।
মি: হাসান বলেন, ” ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সচেতন। কোনটা নেগেটিভ, কোনটা পজিটিভ – সেটা তারা ভালো করে জানে। কাউকে জোর করে কখনো আন্দোলনে নেয়া যায়না আবার আন্দোলন করাও সম্ভব না।”
সুন্দরবন থেকে ১৪ কি:মি: দুরে রামপালে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে কয়লা-ভিত্তিক প্রায় সাড়ে ১৩’শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেছে দু’দেশের সরকার।
কিন্তু এনিয়ে পক্ষে বিপক্ষে বিতর্ক থামছে না। এ প্রকল্পের পক্ষে সরকার বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ভারত ও বাংলাদেশ সরকার যেখানে সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেছে সেখানে আন্দোলন করে প্রতিবাদকারীরা কী অর্জন করতে চাইছে?
সাইকেল র্যালীতে অংশ নিতে আসা একজন ইকবাল হাসান বলেন রামপাল প্রকল্পের বিরুদ্ধে তাদের আন্দোলন থামবে না।
মি: হাসান বলেন, ” এ আন্দোলন আমাদের সফল করতেই হবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র হয়ে যাক, তখন পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব এটা বাতিল করার জন্য।”
এদিকে আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করছে, তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ জল কামান ব্যবহার করছে।
কিন্তু এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলছেন না পুলিশ কর্মকর্তারা। তারা শুধু বলছেন, শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য যতটুকু করার দরকার পুলিশ ততটুকুই করেছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন