মর্ত্যলোকে আমন্ত্রণ দেবী দুর্গাকে
শরতের বাতাসে এখন দুর্গাপূজার গন্ধ। ধূপ-ধুনার আর শঙ্খধ্বনির সাথে তাল মিলিয়ে ঢাকির বাজনার নৃত্যগীতি। পাশাপাশি শরতের আকাশে কখনো মেঘের খেলা, কখনো বৃষ্টির নৃত্যধারা।
হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। পাঁচ দিনব্যাপী সর্ববৃহৎ এ ধর্মীয় উৎসবকে ঘিরে ইতোমধ্যেই রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের পূজাম-পগুলোতে প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে।
দূর্গা পুষ্পাঞ্জলি ও প্রণামের মন্ত্র আওড়িয়ে ষষ্ঠী তিথির অপেক্ষা। তবে কিন্তু এ অপেক্ষা শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বীরাই করছে না। দেশের সব ধর্মাবলম্বীই মূল পূজা শুরুর করছে অপেক্ষা। কথায় আছে, ধর্ম যার যার উৎসব সবার; যা বাংলাদেশে বারবার প্রমাণ করে শারদীয় দূর্গোৎসব।
সোমবার চন্ডীপাঠের মাধ্যমে মর্ত্যলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে দেবী দুর্গাকে। এরপর ষষ্ঠী তিথিতে প্রাণের দ্যোতনা বাজিয়ে ঢাকে পড়বে কাঠির বাদ্যি। অষ্টমী পূজার মধ্য দিয়েই শুরু হবে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। তাই আজ মহালয়ার রাতে হিন্দুধর্মাবলম্বীরা তাদের পূর্বপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধানিবেদনে পূজার কার্যকারণ করে অর্চনা শুরু করেছে।
দেবীর আগমনী বার্তায় বেশিরভাগ মন্দির ও মন্ডপে প্রতিমা নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। প্রতিমা শিল্পীদের ফুরসত নেই। তারা প্রতিমার গায়ে রঙ-তুলির শেষ আঁচড়ে শৈল্পিকতা আঁকতে ব্যস্ত। অন্যদিকে বাড়ি-ঘর পরিষ্কারসহ নতুন পোশাক-আশাক কিনতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
এখন ‘ঔঁ জয়ন্তি মঙ্গলা কালী, ভদ্র কালী কপালিনী, দূর্গা শবা ক্ষমা ধাত্রী, স্বাহা স্বধা নমস্তুতে। এস স্ব চন্দন পুষ্প বিল্ব পত্রাঞ্জলী নম ভগবতী দূর্গা দেবী নমহ’ এবং ‘সর্ব মঙ্গল মঙ্গল্যে শিবে সর্বার্থ সাধিকে/ শরণ্যে ত্রম্বকে গৌরি নারায়নী নমস্তুতে’’ এই সংস্কৃত পুষ্পাঞ্জলি ও প্রণাম মন্ত্র আঁওড়িয়ে মূল পূজা শুরুর ক্ষণ গণনায় তিথির জন্য করছে অপেক্ষা।
দেবী দূর্গাকে আহ্বান করে তারা মনে মনে গুন গুনিয়ে গাইছে, ‘এসো গো শারদলক্ষ্মী, তোমার শুভ্র মেঘের রথে, এসো নির্মল নীলপথে, ……………………….শ্বেতশতদল শীতল-শিশির ঢালা…।’ উচ্ছ্বাস ও আনন্দের জোঁয়ারের ভেসে অপেক্ষায় প্রহরে তারা গাইছে, ‘তর সয়না আর যে আমার, ঢাকে কাঠি পড়বে আবার…………..ঘুচিয়ে দে মা আঁধার-কালো, সারা বছর দেখব আলো’ গানের তালে তালে।
এদিন রাজধানীর কয়েকটি পূজামন্ডপ ও প্রতিমা কারিগরদের দোকান ঘুরে সরেজমিনে এমন চিত্র দেখা গেছে। সময়ের ¯্রােতে প্রাযুক্তির ছোঁয়া আর মানুষের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতায় বছর বছর শারদীয় দূর্গোৎসবের সাজ বাড়ছে। দেশে প্রতিবছর পূজামন্ডপের সংখ্যা বাড়ছে। এ বছরও প্রায় পাঁচশ পূজামন্ডপ বেড়েছে। এ বছর সারাদেশে প্রায় সাড়ে ২৮ হাজার থেকে ২৯ হাজার মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করছেন পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতারা
ঢাকেশ্বরী মন্দিরে এবারের আয়োজনের মধ্যে রয়েছে ১৮ অক্টোবর বেদীর ষষ্ঠাদি, ১৯ অক্টোবর মহাসপ্তমীর সন্ধিপূজা, ২০ অক্টোবর সকালে দেবীর মহাষ্টমী পূজা , রাত ১১টা থেকে ১১টা ৫২ মিনিটে সন্ধিপূজা, ২১ অক্টোবর পূর্বাহ্নে দেবীর মহানবমী পূজা সমাপন ও ২২ অক্টোবর সকাল ৯টা ৫৩ মিনিটে দশমী পূজা আরম্ভ, সকাল ১০টা ৫১ মিনিটে পূজা সমাপন ও রাতে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব শেষ হবে ।
ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল চ্যাটার্জি জানান, ইতোমধ্যেই রাজধানী ঢাকার কেন্দ্রীয় পূজামন্ডপ ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে পূজা উদযাপনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রতিবারের মতো এবারও মন্দিরের খোলা মাঠে মন্ডপ সােিজয় পূজা উদযাপন করা হবে। কেন্দ্রীয় পূজা উৎযাপন পরিষদসহ আমরা ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে সভা করেছি। তারা আমাদের পূজা উদযাপনে সকল ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন।
প্রতিবারের মতো এবারও আমাদের দেশের সব ধর্মাবলম্বীর মানুষ সম্প্রীতি-সৌহার্দ্যরে অকৃত্রিম মেলবন্ধনে দুর্গোৎসব উদযাপন করবে বলেও জানান তিনি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন