মাঠের বাইরে থেকেও যে কারনে আশরাফুল এত জনপ্রিয়
একদিন পত্রিকার হেডিং ছিল, ‘আশার ফুল, আশরাফুল’! সময়টা ৬ সেপ্টেম্বর, ২০০১, আশরাফুল সর্বকনিষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে বিশ্বরেকর্ড গড়লেন! বিশ্বব্যাপী হৈচৈ পরে গেল!বাংলাদেশ আনন্দে মাতুয়ারা।
বাংলাদেশের মানুষ তাদের জরাজীর্ণ দিবস রজনী, খরাজীর্ণ ফসলের মাঠ, সংঘাতাকীর্ণ রাজনীতি, সকল কিছু ভুলে এক নতুন ফুলের সুবাসে বুঁদ হয়ে থাকার স্বপ্ন দেখতে লাগল, সেই স্বপ্নের নাম আশরাফুল, আশার ফুল! এর প্রায় ১৩ বছর পর, ১৯ জুন ২০১৪, সেই পত্রিকারই হেডিং ‘ঝরা ফুল, আশরাফুল’! কী অদ্ভুত বৈপরীত্য! কিন্তু সৃষ্টি ও ধ্বংসের এ এক বিস্ময়কর গল্প ছাড়া আর কিছুই নয়।
এরফলে দীর্ঘদিন ধরে আশরাফুল খেলার মাঠে নেই। কিন্তু এরপরও আশরাফুলের জনপ্রিয়তা কমেনি। ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রত্যাশা আশরাফুল আবারো মাঠে ফিরবেন এবং আগের মতই নতুন নতুন চমক দেখাবেন।
বলা হয়ে থাকে আশরাফুল, বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রথম বৈশ্বিক ব্র্যান্ড।বাংলাদেশের ক্রিকেটের দুর্বিনীত হয়ে ওঠার প্রথম সাহস। বাইশ গজ পিচে ক্রিকেটের ধ্রুপদী আবাহনে হেলা ফেলায় দুঃসাহসী স্বপ্ন নির্মাণের প্রথম কারিগর। খোদ ক্রিকেটের ব্যাটিং শীল্পে যে নান্দনিকতার অলংকরণ তাতে প্রথম বাংলাদেশি শিল্পীর তুলির আঁচড় আশরাফুল।
আশরাফুল বাংলাদেশের ক্রিকেটে কি করেছেন, কি করতে পারতেন, কি পারেন নি, সেটা সবারই জানা। এক ক্রিকেটার আশরাফুলের চেয়েও তার ভেতরের বালক আশরাফুল সুলভ সবাইকে মুগ্ধ করে। যে মাঠের বাইরে অপরিণত এক বালক, বাংলাদেশের এক গলিতে অমিত সম্ভাবনা নিয়ে ক্রিকেট খেলতে খেলতে সেই অমিত প্রতিভার বিস্ফোরণে হুট করে জাতীয় দলে গিয়ে বিশ্বকে কাপিয়ে দেয়া বিস্ময়। কিন্তু তার ভেতরে তখনও অপার কৌতূহলী এক কিশোর। যে তার চেনা জগত, চেনা ভাবনার বাইরেও এই যে বিশাল পৃথিবী, এই যে এতো এতো ভাবনা, আচার, নিয়ম, কানুন সে সবের সাথে অভ্যস্ত হতে না পারা এক বালক।
আশরাফুল পরিণত নন, কিন্তু মেধাবী। আশরাফুল সুবিবেচক নন, কিন্তু ক্রিকেটে ঈশ্বরপ্রদত্ত অপার প্রতিভার বিস্ময়! এ যেন এক ধ্রুব সত্য। ক্রিকেট ইতিহাসে ঠাই করে নেবার মতন একটি ইনিংস খেলার পর পরের কুড়ি পঁচিশ ইনিংসে সেই আশরাফুলের আর খোঁজ নেই। ম্যাচের পর ম্যাচ কি অবলীলায়, অবহেলায়, দুর্দান্ত সম্ভাবনাময় সব উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন, তা কে না জানে!
এই আশরাফুল মাঠেও অমন ছিলেন, অপরিণত। সম্ভবত একবার ইয়ান বিশপ বলেছিলেন, পরিণত আশরাফুল শচিন হতে পারতেন।
সেদিন আশরাফুল যে কান্নায়, যে হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়ায় তার ভুল স্বীকার করেছেন, তা ক’জন করে? কে করেছে? শেন ওয়ারন? মার্ক ওয়াহ? ওয়াসিম আকরাম? সেলিম মালিক? আজহারউদ্দিন? জাদেজা? রবিন সিং? ক্রিস কেয়ারনস? হারসেল গিবস? কে করেছে কে?
আশরাফুলের শাস্তি হয়েছে। একজন ক্রিকেটারের জীবনে ৫ বছর! ৫ বছর সময় জগতের সকল কিছুর চেয়ে দামী। এই শাস্তি সে পেয়েছে। তাকে থাকতে হয়েছে নিষিদ্ধ হয়ে। কিন্তু এখন? এখন ক্রিকেট বোর্ডের দায়িত্ব, তাকে বুঝিয়ে দেয়া, তারা আশরাফুলের সাথে আছে। তাকে শাসন করা হয়েছে, এবার সোহাগ করার পালা। তার মাথায় হাত রাখার পালা। সন্তানকে তার অপরাধের শাস্তি দেয়া শেষে তাকে কাছে টেনে নিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলে, সেই সন্তান অনুভূতির এই স্পর্শ সারা জনম মনে রাখে। এই কৃতজ্ঞতা তাকে আর কোন অপরাধের আগে অজস্রবার ভাবায়।তাই কোটি কোটি আশফুল ভক্তদের প্রত্যাশা আশরাফুলকে ক্রিকেট বোর্ড আর তার সতীর্থরা আগের মতই তাকে বরণ করে নিবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন