মাদকাসক্ত ছেলে নেশার টাকার জন্য হত্যা করেছে বাবাকে
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে মাদকাসক্ত ছেলের হাতে খুন হয়েছেন বাবা। আজ বুধবার সকালে আনোয়ারুল কবির ওরফে জন (৩৫) তার বাবা এমদাদুল হক ওরফে মানিক মিয়াকে (৬৫) নিজ ঘরে কয়েক ঘণ্টা আটকে রেখে হাতুড়িপেটা করে গুরুতর আহত করে। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে এমদাদুল মারা যান।
পুলিশ অভিযুক্ত আনোয়ারুলকে আটক করেছে। অবরুদ্ধ এমদাদকে উদ্ধার করতে গিয়ে আনোয়ারুলের হাতুড়ির আঘাতে কটিয়াদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ. ছালাম, উপপরিদর্শক (এসআই) মইন উদ্দিন, আবুল কালাম আজাদ ও পৌর কাউন্সিলর জয়নাল আবেদীন আহত হয়েছেন।
পরিবারের সদস্য ও পুলিশ জানায়, এমদাদুল পেশায় ইট প্রস্তুতকারক। আনোয়ারুল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তিনি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা হেনা কবির ও এমদাদুল দম্পতির একমাত্র সন্তান। এসএসসির পর থেকে আনোয়ারুল ধীরে ধীরে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। পরে তিনি ময়মনসিংহ আনন্দমোহন সরকারি কলেজ থেকে গণিত বিভাগে স্নাতকে ভর্তি হন। দ্বিতীয় বর্ষ অতিক্রম করার আগে মাদকের কারণে পড়া ছেড়ে বাড়ি চলে আসেন। পরে কটিয়াদী ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হন। ডিগ্রি পাস করে ২০০৬ সালে স্থানীয় ভোগপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার চাকরি নেন। সারাক্ষণ নেশাগ্রস্ত থাকায় ঠিকমতো শিক্ষার্থীদের পড়ানোর ক্ষেত্রে মনোযোগী হতে না পারায় অভিভাবকেরা তাঁর বিরুদ্ধে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে নালিশ করেন। পরে তাঁকে বেতাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়। একই কারণে ওই বিদ্যালয়ের অভিভাবকদেরও ক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। এক বছর ধরে তিনি কর্মস্থলেও যাচ্ছিলেন না, তাঁর বেতনও বন্ধ আছে। এ অবস্থায় নেশার টাকার জন্য বাবাকে প্রায় চাপ দিতেন তিনি। টাকা না দিলে পরিবারের সব সদস্যের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালাতেন। আনোয়ারুলের অত্যাচারে স্ত্রী ও মা বাড়িতে না থেকে অন্য জায়গায় থাকছেন। নেশার টাকার জন্য কয়েক দিন ধরে বাবার ওপর চাপ দিচ্ছিলেন আনোয়ার। বাবা টাকা না দেওয়ায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রতিবেশীদের বাড়িতে হামলা চালান তিনি। বাবা ভোরে নামাজ পড়ার জন্য ঘর থেকে বের হওয়ামাত্র আনোয়ার নিজ ঘরে আটকে ফেলেন তাঁকে। ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে হাতুড়িপেটা শুরু করেন। সকাল আটটার দিকে পরিবারের অন্য সদস্যরা বিষয়টি বুঝতে পেরে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। ব্যর্থ হয়ে পরে পুলিশের সহায়তা নেন। দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকামাত্র পুলিশসহ জনপ্রতিনিধির ওপর চড়াও হন আনোয়ারুল। হামলায় এসআই মইন উদ্দিনের মাথা ফেটে যায়। বাকিরা শরীরে বিভিন্ন জায়গায় আঘাত পান। সকাল ১০টার দিকে এমদাদুল হককে উদ্ধার করে বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা নেওয়ার পথে বেলা আড়াইটার দিকে তিনি মারা যান।
এ ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে থানা হেফাজতে আনোয়ারুল কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
কটিয়াদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল হোসেন পুলিশের তিন সদস্য ও একজন প্রতিনিধি আহত হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আনোয়ারুল স্থানীয়ভাবে মাদকাসক্ত হিসেবে পরিচিত। তিনি এখন পুলিশ হেফাজতে আছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন