মানবপাচারে সাখে জড়িত সীমান্তের অনেক কর্মকর্তা
সীমান্তবর্তী এলাকায় মানব পাচার করে যারা রাতারাতি বিপুল অর্থের মালিক হয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে সরকার। সীমান্ত এলাকায় বসবাসরতদের মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে মানব পাচারের অভিযোগ রয়েছে, তাদের তালিকা প্রস্তুত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় এ বিষয়ে পুলিশ, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ ছাড়া ঘুরেফিরে সীমান্তবর্তী এলাকায় পোস্টিং নিচ্ছেন যে সরকারি কর্মকর্তারা, তাদেরকেও চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। দ্রুত এ সংক্রান্ত তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সীমান্ত এলাকায় ঘুরেফিরে পোস্টিং নেওয়া কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানব পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘কক্সবাজার সীমান্ত এলাকায় কর্মরত সরকারি কর্মকর্তাদের কেউ মানব পাচারে জড়িত রয়েছেন কিনা সে ব্যাপারে তদন্ত করে গোয়েন্দা প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়; এসব এলাকায় হঠাৎ ধনী হওয়া ব্যক্তিদের সম্পর্কে তদন্ত প্রতিবেদনও প্রস্তুত করছে গোয়েন্দা সংস্থা। এটি মন্ত্রণালয়ে এলে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ঘুরেফিরে কোনো সরকারি কর্মকর্তা যাতে এসব জায়গায় পোস্টিং নিতে না পারেন সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সরকার মানব পাচার প্রতিরোধের বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় বলা হয়, ঘুরেফিরে কক্সবাজারের টেকনাফ, উখিয়াসহ সীমান্তবর্তী এলাকায় পোস্টিং নিচ্ছেন কিছু অসাধু কর্মকর্তা। এসব কর্মকর্তার সঙ্গে মানব পাচারকারীদের বিশেষ সখ্য রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কাউকে বদলি করা হলেও তারা তদবির করে একই এলাকায় থেকে যাচ্ছেন। গোয়েন্দা সংস্থার দেওয়া প্রতিবেদন মূল্যায়ন করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তথ্য মন্ত্রণালয় মানব পাচার প্রতিরোধের বিষয়টি জনসাধারণের মধ্যে এসএমএসের (ক্ষুদে বার্তা) মাধ্যমে প্রচারের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে আরও বেশি লোক পাঠানোর বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবে। সমুদ্রপথে মানব পাচার প্রতিরোধে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বিজিবি, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সমন্বিতভাবে কাজ অব্যাহত রাখবে। জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে গঠিত মানব পাচার প্রতিরোধ কমিটিগুলোর কার্যক্রম নিয়মিত মনিটরিং হবে।
সভায় মানব পাচার প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোজাম্মেল হক খান বলেন, সম্প্রতি সমুদ্রপথে মানব পাচারের প্রবণতা বেড়ে গেছে। অশিক্ষা ও অজ্ঞতার কারণে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী দালালের খপ্পরে পড়ে অবৈধভাবে সমুদ্রপথে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সালমা আলী এ প্রসঙ্গে সমকালকে বলেন, কক্সবাজার, টেকনাফ ও উখিয়ার চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ স্থানীয় প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিরা মানব পাচারের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যম শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। কক্সবাজারের টেকনাফসহ সীমান্তবর্তী এলাকায় চাকরির অধিকাংশ সময়ে ঘুরেফিরে যারা পোস্টিং নিচ্ছেন তাদের চিহ্নিত করে বদলি করতে হবে। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, সব ধরনের মানব পাচার রোধে র্যাব নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপকবিস্তারিত পড়ুন
দুই দফা কমার পর ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম
টানা দুই দফা কমার পর দেশের বাজারে ফের স্বর্ণের দামবিস্তারিত পড়ুন
চট্টগ্রামে দুর্ঘটনার কবলে হাসনাত-সারজিসের বহরের গাড়ি
আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের কবর জিয়ারত শেষে ফেরার পথে সড়কবিস্তারিত পড়ুন