মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিন, আপনাকে গুলি করা হবে

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে এক কলেজছাত্রকে ধরে থানাহাজতে নিয়ে গুলি করার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদের বিরুদ্ধে। ওই ছাত্র ও তাঁর বাবা গতকাল রোববার এই অভিযোগ করেছেন। এ ছাড়া জেলার মাসিক আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত সভায়ও গতকাল বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তবে গুলি করার হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করে এসআই জাহিদ বলেছেন, ছেলেটি ভদ্র, তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন তিনি। তবে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, ওই কলেজছাত্র মাদক ব্যবসায়ী।
ওই কলেজছাত্রের নাম আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে পদার্থবিজ্ঞানের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। তাঁর বাবা ইসমাইল হোসেন উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের বিলগাথুয়া গ্রামের বাসিন্দা এবং ওই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য।
মামুন বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। গতকাল রোববার মুঠোফোনে তিনি লেন, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়ির সামনে একটি চায়ের দোকানে বসে ছিলেন তিনি। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে কয়েকজন পুলিশ সদস্য দুটি মোটরসাইকেলে সেখানে যান। পুলিশ সদস্যরা তাঁর নাম-পরিচয় জানতে চান। তিনি বলার পর তাঁকে হাতকড়া পরিয়ে দৌলতপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে তাঁকে হাজতে রাখা হয়। রাত আড়াইটার দিকে থানার এসআই জাহিদ হাজতখানায় ঢুকে বলেন, ‘মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিন। ওপরের নির্দেশ আছে। আপনাকে গুলি করা হবে।’ এই বলে এসআই চলে যান। রাত তিনটার দিকে পুনরায় হাজতখানায় ঢুকে এসআই জাহিদ তাঁর নাম-পরিচয়-ঠিকানা লিখে নেন। তখন মামুন এসআই জাহিদকে বলেন, ‘আমাকে বুকে গুলি করে মেরে ফেলেন। পায়ে গুলি করে পঙ্গু করে দিয়েন না।’
মামুন বলেন, শুক্রবার বিকেলে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হয় তাঁকে। সেখানে তাঁকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
মামুনের বাবা ইউপি সদস্য ইসমাইল হোসেন বলেন, ছেলেকে আটকের খবর পেয়ে চায়ের দোকানে ছুটে যান তিনি। পুলিশ সদস্যরা তাঁকে বলেন, দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) নির্দেশ আছে মামুনকে ধরে থানায় নিতে হবে। কোনোভাবে সন্তানকে ছাড়াতে না পেরে ইসমাইল ছুটে যান স্থানীয় সাংসদ রেজাউল হক চৌধুরীর কাছে। তাঁকে দিয়ে সুপারিশ করিয়েও ছেলেকে ছাড়াতে পারেননি। স্থানীয় রাজনৈতিক বিরোধের কারণে তাঁর ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ ইসমাইল হোসেনের।
জানতে চাইলে দৌলতপুরের ইউএনও তৌসিফুর রহমান বলেন, পুলিশ ওই যুবককে মাদক সেবনের দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করেছিল। পরে আদালত ১ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
গুলির হুমকির অভিযোগের বিষয়ে এসআই জাহিদ বলেন, তিনি মামুনকে একবারই দেখেছেন থানা হাজতে। তাঁর সঙ্গে কোনো কথা হয়নি, ফলে গুলির হুমকির প্রশ্নই ওঠে না। এসআই আরও বলেন, ‘ছেলেটি কলেজছাত্র এবং ভদ্র—এই কথা বলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য আমি স্যারকে অনুরোধ করেছিলাম।’
জানতে চাইলে ওসি আহমেদ কবীর বলেন, মামুন মাদক ব্যবসায়ী। তাঁর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। তথ্যের ভিত্তিতেই পুলিশ পাঠিয়ে তাঁকে আটক করে থানায় আনা হয়। কিন্তু সঙ্গে কোনো মাদকদ্রব্য না পাওয়ায় তাঁকে পরদিন ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে হাজির করা হয়। আদালত তাঁর রায় দিয়েছেন। থানা হাজতে হুমকির বিষয়টি তাঁর জানা নেই।
এদিকে গতকাল সকালে জেলা আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত সভায় গুলির হুমকির প্রসঙ্গটি উত্থাপন করে পুলিশের ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী। সভায় উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের তিনি বলেন, ‘আপনারা (পুলিশ) গডফাদারদের না ধরে একজন কলেজছাত্রকে ধরেন। তাঁর পায়ে গুলি করার নির্দেশ দেন।’-প্রথম আলো
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ঢাকা-খুলনা রেল আংশিক চালু হয়েছে সুদীর্ঘ্য ১২ ঘণ্টা পর !
অবশেষে প্রায় ১২ ঘন্টা পর কুষ্টিয়ার পোড়াদহে ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ারবিস্তারিত পড়ুন

১৫ হাজার কলাগাছ কেটে ফেলল দুর্বৃত্তরা
কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় হিজলাবট এলাকায় গড়াই নদের চরে কলাগাছ লাগিয়েছিলবিস্তারিত পড়ুন

কুষ্টিয়ায় বজ্রপাতে শিশুসহ ৫ জনের মৃত্যু
বজ্রপাতে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার খোলা মাঠে শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।বিস্তারিত পড়ুন