মানসিক চাপের সময়ে নিজের যত্নে ওবামার কাছ থেকে ৬ শিক্ষা
আপনি হয়তো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নন। তথাপি আপনার জীবনেও এমন তীব্র কোনো মানসিক চাপযুক্ত সময় আসতে পারে যখন আপনারও হয়তো মনে হবে পুরো পৃথিবীটাই বুঝি আপনার মাথার উপর চেপে বসেছে।
তবে এ থেকে বেরিয়ে আসার উপায়ও রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামার দৈনন্দিন জীবন-যাপনের রুটিন পরীক্ষা করে বোঝা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কমাণ্ডার ইন চিফ খুবই সতর্কভাবে এমন একটি জীবন-যাপনে অভ্যস্ত যাতে তিনি যে কোনো ধরনের মানসিক চাপ এড়াতে ও সু্স্থ থাকতে পারেন এবং যতটা সম্ভব চাপমুক্ত জীবন-যাপন করতে পারেন।
এখানে তার প্রেসিডেন্সিয়াল প্লেবুক থেকে আপনার জন্যও রইলো কয়েকটি পরামর্শ:
১. কীভাবে উদ্যম ফিরিয়ে আনতে হয় শিখুন (এমনকি একা একা হলেও)
বহির্মুখী স্বভাবের লোকেরা অন্যদের সঙ্গে মিশে নিজেদের মধ্যে উদ্যম ফিরিয়ে আনেন। কিন্তু অন্তর্মুখী স্বভাবের লোকদের নিজেদেরকে স্বজীব করতে নিঃসঙ্গতার দরকার হয়। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন তার অবসর সময়টুকু ফোনে কথা বলে কাটাতেন। আর প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তার কার্যালয়ে প্রতিদিন চুপচাপ ৫ থেকে ৬ ঘন্টা কাটিয়ে দেন।
ঐতিহাসিক ডোরিস কেয়ার্নস গুডউইন নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, “আমাদের প্রেসিডেন্সিয়াল লিডারদের কয়েকজনের মানসিক শক্তির যোগান আসত জনগনের সঙ্গে যোগাযোগ থেকে। তবে ওবামা মনে হয় একটু ভিন্ন প্রকৃতির। তিনি বাড়িতে একা সময় কাটিয়েই নিজেকে পুনরুজ্জীবিত করতে অভ্যস্ত।” আপনিও বুঝার চেষ্টা করুন কী করে আপনি নিজের উদ্যম ফিরিয়ে আনতে পারবেন এবং সে অনুযায়ী কাজ করুন।
২. খেলাধুলার জন্য বিরতি নিন
হোয়াইট হাউজে প্রবেশের পর প্রথমদিকে ওবামা প্রতিদিন রাতেই কোনো একজন বন্ধুর সঙ্গে পুল খেলতেন। আর কাজের ফাঁকে ছোট্ট একটি বিরতিও আপনাকে আরো উৎপাদনশীল করে তুলবে। এমনকি অফিসে নিজ ডেস্ক থেকে মাত্র ১০ মিনিটের জন্যও যদি আপনি উঠে একটু বেড়িয়ে আসেন তাতেও বিস্ময়কর ফল পাবেন।
৩. পছন্দের মানুষদের সঙ্গে একান্তে সময় কাটান
ওবামা প্রতিদিনই তার মেয়েদের সঙ্গে রাতের খাবার খান। আর বছরে একবার পুরো পরিবার নিয়ে ছুটি কাটাতে যান। গবেষণায় দেখা গেছে, সেরা বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটালে উদ্বেগ কমে, সুখ বাড়ে এবং এমনকি এতে আয়ুও বাড়ে।
৪. পরিপ্রেক্ষিত অনুযায়ী বিভিন্ন বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করুন
যখন চরম কোনো মানসিক চাপ মোকাবেলার ইস্যু সামনে আসে তখন ওবামার হাতে একটি প্রধান চাবিকাঠি থাকে। ২০১৫ সালে হাফিংটন পোস্টের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ওবামা বলেন, “আমি মনে করি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, দূরদৃষ্টি সম্পন্ন হওয়া।” তার কাছে এর মানে হলো, আজ যেটাকে ব্যর্থতা বলে মনে হচ্ছে, কালকে বা পরের মাসে অথবা পরের বছরে হয়তো আর তা অতটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যর্থতা বলে নাও গণ্য হতে পারে।
৫. অপ্রয়োজনীয় সিদ্ধান্তগুলো এড়িয়ে যান
বিশ্বের শীর্ষ সফল ব্যক্তিদের অনেকেই প্রতিদিনের সিদ্ধান্তগুলোকে রুটিনে পরিণত করে মানসিক চাপ কমিয়ে আনেন। যেমন ওবামার পোশাক পরিধানের বিষয়টিকেই উদাহরণ হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে। ২০১২ সালে ভ্যানিটি ফেয়ারের সঙ্গে এক সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ওবামা বলেন, “আপনারা হয়তো দেখে থাকবেন আমি শুধু ধুসর ও নীল স্যুট পরি। আমি আসলে প্রতিদিনের ছোটখাটো বিষয়গুলোতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করতে চাই না। আমি কী খাবো আর কী পরব তা নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে অযথা সময় নষ্ট করতে চাই না। কারণ আমাকে এর চেয়েও আরো অনেক বড় বড় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।”
৬. প্রায়ই শরীরচর্চা করুন
ওবামা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনকালে নিয়মিত শরীরচর্চা করার মাধ্যমেই তিনি তার মানসিক চাপ কমিয়ে রাখতেন। হাফিংটন পোস্টকে ওবামা বলেন, “আমি নিয়মিতই প্রতিদিন সকালে শরীরচর্চা করতাম।” নিয়মিত শরীরচর্চা করলে, আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি কমে আসবে, মেজাজ ভালো থাকবে; এমনকি উদ্বেগ ও অবসাদ থেকেও মুক্তি মিলবে। সূত্র: হাফিংটন পোস্ট
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন