শুক্রবার, অক্টোবর ১৮, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

মানুষের বদ্ধমূল ধারণা, হাঙ্গর মানেই মূর্তিমান আতংক!

সাগরের মৎস্যসম্পদের মধ্যে হাঙ্গর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতি। মানুষের বদ্ধমূল ধারণা, হাঙ্গর মানেই মূর্তিমান আতংক। অথচ এক হাজারেরও বেশি প্রজাতির হাঙ্গর রয়েছে বিশ্বে, তাদের মধ্যে খুব কম হাঙ্গরই মানুষের জন্য বিপজ্জনক। বেশির ভাগ হাঙ্গর বরং মানুষের বন্ধু। যেসব রাক্ষুসে মাছ ভোজনবিলাসী মানুষের প্রিয় মাছগুলো খেয়ে ফেলে, হাঙ্গররা তাদের খায়। হাঙ্গর সাগরের সর্ববৃহৎ মাংসাশী প্রাণী হলেও সাগরের ভারসাম্য রক্ষায় এদের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। সহজ কথা হল, হাঙ্গর না থাকলে রাক্ষুসে মাছ বংশবিস্তার করবে মহাসুখে আর তাতে একদিন হয়তো মাছ খাওয়া কঠিন হয়ে যাবে মানুষের জন্য।

হাঙ্গর আহরণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বিক্রয় ও রফতানি বাংলাদেশের একটি বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড। হাঙ্গরের কান-পাখনা, চামড়া, দাঁত, হাড়, করাত ও তেল কোনো কিছুই ব্যবসার বাইরে নয়। মিয়ানমার, চীন, হংকং, ভিয়েতনামসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে হাঙ্গরের চাহিদা রয়েছে। ওইসব দেশে হাঙ্গরের মাংস খাওয়া ছাড়াও চামড়া, দাঁত, হাড় দিয়ে অলংকার রাখার বাক্স, তলোয়ার রাখার খাপ, মানিব্যাগ, বেল্ট, জুতাসহ নানা জিনিস তৈরি করা হয়। এছাড়া হাঙ্গরের যকৃতের তেলের ঔষধিগুণ (ভিটামিন-‘এ’-তে পরিপূর্ণ) রয়েছে।

আমাদের দেশে এক দশক আগে প্রতি বছর গড়ে ৫ থেকে ৬ হাজার টন হাঙ্গর আহরিত হতো। সাম্প্রতিক সময়ে আহরণ হ্রাস পেয়ে প্রতি বছর গড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টনে এসে দাঁড়িয়েছে। আকারভেদে হাঙ্গরের দাম কম-বেশি হয়ে থাকে। বড় একটি হাঙ্গর ৫০ থেকে ৬০ কেজি পর্যন্ত ওজনের হয়। দাম পড়ে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। এক শ্রেণীর মহাজন ও আড়তদার প্রতি বছর হাঙ্গর ব্যবসায় লাখ লাখ টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করে। অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা স্থানীয় জেলেদের দাদন দিয়ে হাঙ্গর শিকারে উদ্বুদ্ধ করে।

হাঙ্গরের প্রকারভেদ : বিশ্বে এক হাজার প্রজাতিরও বেশি হাঙ্গর রয়েছে। এরা সাগর ও মহাসাগরের লবণাক্ত পানিতে বাস করে। কোনো কোনো প্রজাতি মোহনাঞ্চলের লোনা পানিতেও বিচরণ করে থাকে। বাংলাদেশে প্রায় ৭০ প্রজাতির হাঙ্গর দেখা যায়। আকৃতি ও ধরন অনুযায়ী স্থানীয় জেলেরা হাঙ্গর প্রজাতিকে ৫ ভাগে ভাগ করেছে- হাঙ্গর (sharks), পিতাম্বরী (guitar fish), বাদুরী (eagle rays, devil rays), করাতি (saw shark) ও শাপলাপাতা (sting rays)।

আমাদের সাগর উপকূলে প্রায় ৩০ প্রজাতির হাঙ্গর, ৪ প্রজাতির করাতি, ৬ প্রজাতির পিতাম্বরী ও ৩০ প্রজাতির শাপলাপাতা পাওয়া যায়। সাধারণত এককভাবে হাঙ্গর আহরণ করা হয় না। ইলিশ ধরার জাল, লাক্ষ্মা জাল, বেহুন্দি জাল ও বড়শি দিয়ে সাগর ও মোহনাঞ্চল থেকে অন্যান্য মাছের সঙ্গে হাঙ্গর আহরণ করা হয়।

হাঙ্গর আহরণ ক্ষেত্রসমূহ : খুলনার সুন্দরবন উপকূল, দুবলার চর, পটুয়াখালীর মহিপুর, কুয়াকাটা, সোনার চর, রূপের চর, ফাতরার চর, চরগঙ্গামতি; বরগুনার আশার চর, পাথরঘাটা এলাকা, চরফ্যাশন, ভোলার দক্ষিণাঞ্চল; সন্দ্বীপ-কুতুবদিয়ার শিবচর, ঢাল চর অঞ্চল; কক্সবাজার, মহেশখালী, টেকনাফ ও সোনাদিয়া চ্যানেল এবং মিয়ানমার সীমান্ত অঞ্চলের সাগর এলাকায় প্রধানত হাঙ্গর পাওয়া যায়। শাপলাপাতা ও পিতাম্বরী পানির কম গভীরতায় (১৬ থেকে ৩০ ফুট); বাদুরী অগভীর পানিতে এবং হাঙ্গর গভীর পানিতে ধরা পড়ে।

হাঙ্গর ধরার জন্য বড় লোহার বড়শি ও লোহার শিকল (২ থেকে ৩ হাত লম্বা), ৬ ফুট পর পর বড়শি সাজানো হয়, লোহার শিকলগুলো ইলিশ জালের মোটা রশির দিয়ে ঝুলিয়ে দেয়া হয়। তাছাড়া ইলিশ ধরা জাল ও লাক্ষ্মা জাল দিয়েও হাঙ্গর ধরা হয়। হাঙ্গর ধরার মৌসুম সাধারণত নভেম্বর থেকে মে মাস। শাপলাপাতা, পিতাম্বরী ও বাদুরী ধরার মৌসুম সেপ্টেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত। হাঙ্গর শীতকালে বেশি ধরা পড়ে বলে শীতকে সামনে রেখেই শিকারিদের শুরু হয় নানা প্রস্তুতি। উপকূল বিশেষত দক্ষিণাঞ্চলের পাথরঘাটা, কুয়াকাটা, মহিপুরের শুঁটকি ব্যবসায়ীদের কাছে অন্যান্য মাছের তুলনায় হাঙ্গর শুঁটকি অত্যন্ত লাভজনক।

বিগত কয়েক বছর ধরে উপকূলীয় এক শ্রেণীর জেলে সাগরে হাঙ্গর শিকারে মেতে ওঠায় হাঙ্গরের অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ার পথে। ইলিশ ও অন্যান্য কাঙ্ক্ষিত মাছ ধরা না পড়লে জেলেরা হাঙ্গর শিকারে ঝুঁকে পড়ে। সুন্দরবনসংলগ্ন সাগর উপকূলজুড়েও চলে অবাধে হাঙ্গর শিকার। বন আইনে হাঙ্গর শিকার নিষিদ্ধ থাকলেও তা অনেকটাই অকার্যকর।

রাতেই বেশিরভাগ জেলেরা হাঙ্গর শিকার করে। সাগর থেকে ধরার পর ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা পর্যন্ত হাঙ্গর জীবিত থাকে। তবে ছোট ছোট হাঙ্গর ২ থেকে ৩ ঘণ্টার বেশি জীবিত থাকে না। সব মিলিয়ে হাঙ্গর ধরার পর গভীর সাগর থেকে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা ট্রলার চালিয়ে উপকূলে আসার পরও তা পচে যাওয়ার ভয় থাকে না। ফলে ট্রলারে বরফ মজুদ না থাকলেও অথবা বরফ ছাড়াই ২ থেকে ৩ দিন পর্যন্ত হাঙ্গর রাখা সম্ভব।

হাঙ্গর সংরক্ষণে পরামর্শ : শুধু সুন্দরবন অঞ্চলে হাঙ্গর ধরার ক্ষেত্রে বন আইনে বর্তমানে বিধিনিষেধ বিদ্যমান। হাঙ্গরের নির্বিচার আহরণ রোধে মৎস্য আইনের যথাযথ প্রয়োগ প্রয়োজন। ওটঈঘ-এর জবফ খরংঃ-এর আওতায় বঙ্গোপসাগরে কয়েকটি হাঙ্গরের প্রজাতি ইতিমধ্যে বিপন্ন বলে বিবেচিত। বিজ্ঞানভিত্তিক হাঙ্গরের আহরণ করা গেলে তাদের সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে।

ক. নির্বিচারে ছোট আকৃতির হাঙ্গর, শাপলাপাতা, বাদুরী, করাতি ধরা বন্ধ করতে হবে, খ. হাঙ্গরের প্রজাতিভেদে তাদের প্রজনন মৌসুমে গর্ভবতী হাঙ্গর ধরা এড়িয়ে যেতে হবে, গ. হাঙ্গরের কান-পাখনা/ফিন কেটে হাঙ্গরের দেহ সাগরে নিক্ষেপ করা বিশ্বব্যাপী নিষিদ্ধ। এ ব্যাপারে আমাদের জেলেদেরও মানবিক আচরণ করতে হবে, ঘ. হাঙ্গরের বাসস্থল, প্রজননস্থল রক্ষা করার জন্য জেলেদেরও সচেতন হতে হবে, ঙ. হাঙ্গর পৃথিবীব্যাপীই বিপন্ন প্রজাতি হিসেবে বিবেচিত। তাই হাঙ্গর ধরতে অনুৎসাহিত করতে হবে।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে

ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন

আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন

নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন

নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন

  • কুড়িগ্রামে ভয়াবহ বন্যায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দী
  • সিলেটে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত
  • চালু হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্ত হাট
  • রায়পুরায়  বিএনপির প্রায় ১০০ নেতা কর্মী আ’লীগে যোগদান
  • সিলেটে ৯ ঘণ্টা পর রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক
  • সকাল থেকে ঢাকায় বৃষ্টি
  • রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় দুই নারীর আত্মহত্যা
  • ছুটি শেষে কর্মচঞ্চল আখাউড়া স্থলবন্দর
  • নোয়াখালীতে অস্ত্র ঠেকিয়ে কিশোরীকে অপহরণের অভিযোগ
  • নান্দাইলে চাচাতো ভাইয়ের হাতে চাচাতো ভাই খুন
  • সিলেট বিভাগের বন্যা ভয়ঙ্কর রুপ নিচ্ছে
  • সবুজবাগে পরিবেশমন্ত্রীর সেলাই মেশিন বিতরণ