মারাত্মক বাস দূর্ঘটনায় হারান ডান হাত হারিয়েও ফুটবল ছাড়েননি তুহিন

ফুটবলকে ভালো বেসেছেন ছোট্ট বয়সেই। দুরন্তপনার পাশাপাশি বল নিয়েও কাটতো তার সকাল-বিকেল। তাউফিকুল ইসলাম তুহিন দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়া অবস্থাতেই মনে বপন করেছিলেন বড় ফুটবলার হওয়ার স্বপ্নের বীজ। কিন্তু ১০ বছর বয়সে একটি দূর্ঘটনা এলোমোলে করে দেয় কুড়িগ্রাম সদরের এ তুহিনের জীবন। মারাত্মক বাস দূর্ঘটনায় হারান ডান হাত। বড় ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন উবে যায় রংপুর-বগুড়া সড়কের গোবিন্দগঞ্জ নামক জায়গায়। ডান হাতের বেশির ভাগ অংশ সেখানে ফেলে রেখেই এ কিশোরকে ভর্তি হতে হয় হাসপাতালে। হাতের অংশটা পুতে রাখা হয় ওই জায়গায়ই।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের যে কোচদের নিয়ে রোববার বাফুফে ভবনে শেষ হয়েছে প্রশিক্ষণ কর্মশালা সেখানে ছিলেন এক হাত হারানো তুহিন। কিশোর বয়সে হাত হারালেও ফুটবল ছাড়েননি তিনি। বড় ফুটবলার হয়ে স্বপ্ন পুরণ করতে না পারলেও এক হাত নিয়েই খেলেছেন বিভিন্ন ক্লাবে। ঢাকার বাসাবো, কদমতলায় খেলেছেন ১৯৯৪ ও ১৯৯৬ সালে। এর আগে খেলেছেন রাজশাহী আবাহনীতে। খুলনা নিউজপ্রিন্ট দলের হয়েও খেলেছেন অদম্য এ ফুটবলার।
বাফুফে ভবনে নিজের জীবনের ভয়াবহ ওই দিনের বর্ণনা দিয়েছেন তুহিন। ‘১৯৮৪ সালের ঘটনা। তারিখ মনে নেই। যাচ্ছিলাম রাজশাহীতে। বগুরা-রংপুর মহাসড়কের গোবিন্দগঞ্জ নামক স্থানে বাসটি দুর্ঘটনায় পড়ে। রাস্তার উপর থাকা একটি শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে গাড়ীর নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিলেন চালক। বাসটি খাদে পড়ে গেলে প্রাণ হারায় ৯ জন। ৩২ জন হয়েছিলেন মারাত্মক আহত। তার মধ্যে ছিলাম আমিও। আমার হাতের অংশটা ঘটনাস্থলেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে স্থানীয় মানুষ হাতের অংশটুকু সেখানেই মাটিতে পুঁতে রাখে। দুপুর ১২ টার দিকে দুর্ঘটনা, আমার জ্ঞান ফিরেছিল রাত ১২ টার দিকে’-বলেছেন ৩৯ বছর বয়সী তুহিন।
বিভিন্ন ক্লাব ছাড়াও তুহিন এক হাত নিয়ে নিয়মিত খেলেন উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে ফুটবল। এখনো খ্যাপ খেলে যাচ্ছেন বিভিন্ন স্থানে আমন্ত্রিত হয়ে। মধ্যমাঠের খেলোয়াড় কয়েকদিন আগেই খেলেছেন তেতুলিয়ার স্থানীয় পর্যায়ের একটি টুর্নামেন্টে।
খেলার পাশপাশি খেলোয়াড় তৈরির কাজও শুরু করেছেন তুহিন। সর্বশেষ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টে কুড়িগ্রামের আশরাফিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় রংপুর বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারই প্রশিক্ষণে।
এক হাত নিয়ে খেলতে কোনো সমস্যা হয় না? ‘হাত একটা কম থাকলেও আমার মনোবল অনেক বেশি। তাই আমার কোনো সমস্যা হয় না’-বলেছেন তুহিন। পঙ্গু হওয়ার পর তেমন কোনো সহযোগিতা পাননি তিনি। ‘গত বছর কুড়িগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা থেকে ১৫ হাজার টাকা পেয়েছিলাম। এর বাইরে আর কোনো সহযোগিতা পাইনি। এখন কোচ হয়ে নিজের জীবনকে চালাতে চাই’-বলতে গিয়ে চোখ ছলছল করছিল এক হাতের এ ফুটবলযোদ্ধার। জাগো নিউজ
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রথম ম্যাচে আজ ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।বিস্তারিত পড়ুন

বিপিএলে টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন বরিশাল
বিপিএলের ফাইনালে শুরুতে ব্যাটিং করে রেকর্ড রান সংগ্রহ করে প্রথমবিস্তারিত পড়ুন

শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনেও আগুন
রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার ৫ নম্বর সড়কে আওয়ামী লীগ সভাপতিবিস্তারিত পড়ুন